Wednesday, August 6, 2025
HomeআজকেAajke | মিছিলে মিলেছি কেন না আমরা... 

Aajke | মিছিলে মিলেছি কেন না আমরা… 

Follow Us :

মিছিলে মিলেছি কেননা বুকের
কলজের সাথে হাড় পাঁজরেরা
মিছিলে গিয়েছে কবে একদিন
জীবনের সন্ধানে
কেননা আমার শান্তির নীড়
হাসি আর গান ভালোবাসা দিয়ে
গড়তে চেয়েছি কর্মমুখর জীবনের মাঝখানে।
মিছিলে মিলেছি কেননা আমরা
স্তন্য না পেয়ে মায়েদের কোলে
বোবা শিশুদের আর্তনাদের
বাঙময় ভাষা শুনেছি।
কেননা আমরা ফিরে পেতে চাই
আমাদের যত হৃত যৌবন
স্বপ্নকে নিয়ে চোলাই যন্ত্রে
মদ্যের বিলাসিতা
কেননা দেশের যত ঘর বাড়ি
কলকারখানা ধানের খামার
মাঠ ঘাট পথ ফিরে পেতে চায়
তাদের জন্মদাতা।

সলিল চৌধুরির শপথ কবিতার ক’টা লাইন। মিছিল আমাদের সংস্কৃতিতে, আমাদের বাঙালি জীবনচর্যায়। সুভাষ মুখোপাধ্যায় লিখেছিলেন মিছিলের সেই মুখ, 

মিছিলে দেখেছিলাম একটি মুখ,
মুষ্টিবদ্ধ একটি শাণিত হাত
আকাশের দিকে নিক্ষিপ্ত;
বিস্রস্ত কয়েকটি কেশাগ্র
আগুনের শিখার মতো হাওয়ায় কম্পমান।
ময়দানে মিশে গেলেও
ঝঞ্ঝাক্ষুব্ধ জনসমুদ্রে ফেনিল চূড়ায়
ফসফরাসের মতো জ্বলজ্বল করতে থাকলো
মিছিলের সেই মুখ।

আরও পড়ুন: Aajke | মে দিবস 

হ্যাঁ, বহু বাঙালি যুবক যুবতীর প্রেম আকার পেয়েছে মিছিলের পথ ধরে। মিছিল কি কেবল বামপন্থীদের রাজনৈতিক ঐতিহ্য? তা একসময় ছিল বটে কিন্তু সে ঐতিহ্য তো কংগ্রেসেরও আছে, প্রিয়রঞ্জন– দীপা দাশমুন্সির একমাত্র ছেলের নাম রেখেছিলেন মিছিল। মিছিল নিয়ে অনীহা, অসূয়া? হ্যাঁ তাও আছে, মিছিল নিয়ে এক বিরাট বাওয়াল আমরা দেখেছি ২০০৪-এ, কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অমিতাভ লালার গাড়ি আটকেছিল সিপিআইএম-এর এক মিছিলে, তিনি আদালতে গিয়েই এ ধরনের মিছিলের বিরুদ্ধে মন্তব্য করেন। পরদিনই সিপিআইএম নেতার স্লোগান, ‘লালা, বাংলা ছেড়ে পালা’, শোনা গেল সিপিএম ছাত্র যুবদের মিছিলে, মানহানির মামলাও হয়েছিল, বিমানবাবু ক্ষমাও চেয়েছিলেন। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বা তৃণমূল বহু মিছিল করেছেন, বহু বনধ করেছেন, কিন্তু ক্ষমতায় আসার পরে আপাতত বনধ নিয়ে একেবারেই উল্টোপথে হেঁটেছেন তৃণমূলনেত্রী। সাধারণ মানুষের বনধ বিরোধী মনোভাবের বা মেজাজের সঙ্গে তাল মিলিয়েই বনধের বিরোধিতা করেছেন তিনি, মিছিলও এখন রেস্ট্রিকটেড। কিন্তু বিরোধীরা কি মিছিল করবে না? এটাই লাখ টাকার প্রশ্ন? তাহলে করবেটা কী? আজ সেই মিছিল হল বিষয় আজকে।

এ তো গেল আজকের মিছিলের আবেদন আর বিচারের কথা। এর আগে? বিচারকই বললেন গোটা ৪০ আবেদন তাঁর কাছে পৌঁছেছে। কেন? এক গণতান্ত্রিক দেশে মানুষ প্রতিবাদ করবেন, মিছিল করবেন, স্লোগান দেবেন জমায়েত করবেন, এটা কি খুব সাধারণ একটা ব্যাপার নয়? হ্যাঁ, একটা রিজনেবল রেস্ট্রিকশন থাকতেই পারে, এই পথ নয় ওই পথ, এই সময় নয় অন্য এক সময় ইত্যাদি তো পুলিশ বলতেই পারে। পরীক্ষার দিনগুলোতে মাইক বাজানো যাবে না, সেই দিনগুলোতে সভা করা যাবে না বা মিছিল করা যাবে না এমন রিজনেবল রেস্ট্রিকশন তো দেওয়া যেতেই পারে। কিন্তু এমন ঢালাও রেস্ট্রিকশন কেন? মিছিল-সভার অনুমতি চেয়ে যে মামলাগুলি হাইকোর্টে দায়ের হয়েছিল তার কয়েকটার হিসেব দিই, ১) তৃণমূলের অত্যাচারের বিরুদ্ধে ভাঙড়ে নওশাদ সিদ্দিকির নেতৃত্বে আইএসএফের মিছিল। ২) তৃণমূলের দখলদারির প্রতিবাদে ঐ ভাঙড়েই সিপিএমের মিছিল-সভা। ৩) চাকরিপ্রার্থীদের বিভিন্ন দাবিতে শিয়ালদহ থেকে ধর্মতলা পর্যন্ত মিছিল।  ৪) ডিএ-র দাবিতে সরকারি কর্মচারীদের শিয়ালদহ থেকে মিছিল ও ধর্মতলায় সমাবেশের বেশ কয়েকবার আবেদন। ৫) ডিএ-র দাবিতে নবান্ন অভিযানের জন্য কো-অর্ডিনেশন কমিটির আবেদন। ৬) রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়ে খিদিরপুরে বিজেপির মিছিল। ৭) ডেঙ্গি নিয়ে নিউ আলিপুর থেকে চেতলা পার্ক পর্যন্ত বিজেপির মিছিল। ৮) খেজুরিতে সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে মিছিল। ৯) নন্দীগ্রামে ১৪ মার্চ গণহত্যা দিবসে শুভেন্দু অধিকারীর মিছিল। ১০) তমলুকে শুভেন্দু অধিকারীর মিছিল। এগুলো সবই বিরোধীদের মিছিল, থানা এই মিছিলের আবেদনে সায় দেয়নি, কোনও কোনও ক্ষেত্রে মিছিল করা যাবে না বলেও জানিয়েছে। ফলে তাঁরা আদালতে এসেছেন, আদালত এই সবকটা মিছিলের অনুমতি দিয়েছে। আজকে যা হল তা হয়েই চলেছে। আমাদের প্রশ্ন, কেন এরকম হবে? বিরোধীদের মিছিল করার জন্য আদালত পর্যন্ত আসতে হবে কেন? আজকে যারা বিরোধী কালকে তারাই শাসক হয়ে এই ধারাবাহিকতাই বজায় রাখলে? আসলে ক্ষমতার এক উগ্র স্বর আছে, যা গণতন্ত্রকে অস্বীকার করতে চায়, ক্ষমতা কোনও বিরোধিতাকেই সহ্য করতে পারে না আর গণতন্ত্রের প্রথম আর প্রধান শর্তই হল সংখ্যালঘু মতামতের সম্মান। গত মাত্র কয়েক মাসে আদালতের কাছে মিছিল করতে চেয়ে আবেদন জমা পড়েছে ৪০টা, মানে এই ৪০টা বিরোধী মিছিলের অনুমতি দেয়নি প্রশাসন, এটা কি সুস্থ গণতন্ত্রের লক্ষণ? কী বলছেন মানুষজন?

মোদি সরকার ক্ষমতায় এসেই গণতন্ত্রকে এক সংখ্যাগুরুর রাজত্বে পরিণত করেছে, বিরোধীদের মতামত শোনা তো দূরস্থান, বিরোধিতাই সহ্য নয় তাদের। সর্বস্তরে সমস্ত বিরোধিতাকে স্তব্ধ করার জন্য যা যা করার দরকার তা তাঁরা করছেন। আমরা তো এ রাজ্যে এক নতুন সংস্কৃতি দেখতে চাই, গণতন্ত্রের আস্বাদ পেতে চাই, এক গণতান্ত্রিক ব্যবস্থার কথা বলেই তো তৃণমূল দল ক্ষমতায় এসেছিল, তাহলে এমনটা হবে কেন? আরএসএস–বিজেপির মেজরেটেরিয়ানিজম, সংখ্যাগুরুবাদের বদলে তো এক প্রকৃত গণতন্ত্রকেই তুলে ধরা বিরোধীদের কাজ, সেটা না হলে আখেরে তা বিজেপিকেই সাহায্য করবে, সেটাও তো জানা কথা।

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Mamata Banerjee | কামারপুকুরে মুখ্যমন্ত্রী, দেখুন সরাসরি
03:50:50
Video thumbnail
Supreme Court | ফের শুরু DA মামলা, সুপ্রিম কোর্ট থেকে Live
02:18:30
Video thumbnail
Supreme Court | সুপ্রিম কোর্টে DA মামলার বি/স্ফো/রণ, দেখুন সরাসরি
01:33:56
Video thumbnail
Supreme Court | লাঞ্চের পর ফের শুনানি শুরু DA মামলার, দেখুন সরাসরি
01:42:25
Video thumbnail
Parliament | CISF | সংসদে হঠাৎ ঢুকে পড়ল সিআইএসএফ জওয়ানরা, কেন? দেখুন চাঞ্চল্যকর খবর
02:03:55
Video thumbnail
Mamata Banerjee | কামারপুকুরে মুখ্যমন্ত্রী, দেখুন সরাসরি
22:25
Video thumbnail
Mamata Banerjee | বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে ঘাটালে যাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী, রয়েছে একাগুচ্ছ কর্মসূচি
03:42:30
Video thumbnail
Mamata Banerjee | বন্যা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে আরামবাগের ত্রাণ শিবিরে মুখ্যমন্ত্রী, দেখুন সরাসরি
33:10
Video thumbnail
Rahul Gandhi | PM Modi | যদি তোমার সাহস থাকে বলো ট্রাম্প মিথ্যেবাদী, রাহুলের আ/ক্র/মণে বেসামাল মোদি
02:36:10
Video thumbnail
Good Morning Kolkata | সকালের গুরুত্বপূর্ণ খবর, দেখুন একনজরে সরাসরি
02:59:15

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39