হাওড়া: কলকাতায় (Kolkata) এলেই বেলুড়ে (Belur Math) আসব। মঙ্গলবার সকালে বেলুড় মঠ ঘুরে দেখে মঠের স্বামীজিদের একথাই জানালেন রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মু (President Droupadi Murmu)। এদিন তাঁর বেলুড় মঠ পরিদর্শনকে ঘিরে পুলিশ-প্রশাসনে ছিল সাজসাজ রব। মঠ ও মিশন কর্তৃপক্ষও (Ramakrishna Math and Ramakrishna Mission) রাষ্ট্রপতির আগমন উপলক্ষে বিশেষ ব্যবস্থা রেখেছিল। তাঁর নিরাপত্তার কারণে সকাল থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত সাধারণ ভক্তদের প্রবেশ বন্ধ রাখা হয়েছিল। রাষ্ট্রপতির যাত্রাপথ জুড়ে ব্যাপক পুলিশি নজরদারির (Howrah Police) ব্যবস্থা ছিল। সব থেকে বড় ভোগান্তি মধ্যে পড়তে হয়েছে অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজের নিত্যযাত্রীদের। দীর্ঘক্ষণ যান চলাচল বন্ধ রাখায় এককথায় এদিন কলকাতা থেকে হাওড়া শহরে ঢোকার দুই প্রান্ত একেবারে অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে।
এদিন সকালে রাজভবন থেকে বেরিয়ে দ্বিতীয় হুগলি সেতু, কোনা এক্সপ্রেসওয়ে, বালি, বেলুড় হয়ে সড়কপথে বেলুড় মঠে এসে পৌঁছান রাষ্ট্রপতি মুর্মু। তাঁর সঙ্গে ছিলেন একমাত্র কন্যা ইতিশ্রী। এবং রাজ্যের রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস (WB Governor CV Ananda Bose)। ঝাড়খণ্ডের রাজ্যপাল থাকাকালীন এর আগে একবার বেলুড় মঠে এসেছিলেন দ্রৌপদী। অর্থাৎ এনিয়ে দ্বিতীয়বার এবং রাষ্ট্রপতি হিসেবে প্রথমবার মঠে এলেন তিনি।
আরও পড়ুন: Panchayet Election | পঞ্চায়েত ভোট নিয়ে হস্তক্ষেপ করল না হাইকোর্ট, আদালতে ধাক্কা শুভেন্দুর
ঘড়ির কাঁটা মিলেয়ে সকাল ৮টা ৪০ মিনিটে বেলুড় মঠে প্রবেশ করেন দ্রৌপদী। সেখানে রাজ্য সরকারের তরফে উপস্থিত ছিলেন মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদা এবং অরূপ রায়। তাঁকে প্রথমে অভ্যর্থনা কক্ষ বা অতিথিঘরে বসানো হয়। সেখানে মঠের দায়িত্বপ্রাপ্ত সন্ন্যাসীদের সঙ্গে কিছুক্ষণ কথা বলেন। প্রায় ১৫ মিনিট সেখানে বিশ্রাম নেওয়ার পর তিনি প্রথমেই যান রামকৃষ্ণ মন্দিরে। সেখানে ভক্তিভরে প্রণাম সেরে তাঁরা যান স্বামীজির ঘরে। সেখানে স্বামীজির বিভিন্ন কথা সংক্ষিপ্ত আকারে বলেন স্বামীজিরা।
স্বামীজির ঘর থেকে বেরিয়ে দ্রৌপদী ব্রহ্মানন্দের মন্দির, তারপর মা সারদা মন্দির এবং বিবেকানন্দ মন্দির বা সমাধিস্থল পরিদর্শন করেন। গোটা মঠ চত্বর তিনি ব্যাটারিচালিত গাড়িতে ঘুরে দেখেন। এরপর সওয়া ৯টা নাগাদ বেরিয়ে যান রাষ্ট্রপতি। তিনি যাওয়ার আগে মঠের তরফে তাঁকে এবং তাঁর কন্যাকে মা সারদার প্রসাদী শাড়ি এবং ভোগ দেওয়া হয়। এছাড়াও স্মারক হিসেবে কিছু ধর্মগ্রন্থ উপহার হিসেবে দেন সন্ন্যাসীরা।
রাষ্ট্রপতির এই সফরকে ঘিরে সকাল থেকে অফিস টাইম পর্যন্ত হাওড়া শহরের একটি দিক পুরো অবরুদ্ধ করে ফেলে পুলিশ। সকাল ৭টা থেকে সাড়ে ৯টা পর্যন্ত বিটি রোডে যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। যার ফলে ব্যাপক যানজটের সৃষ্টি হয়। দ্বিতীয় হুগলি সেতু থেকে যাত্রাপথের দুধারে বাঁশের ব্যারিকেড করে দেওয়া হয়েছিল। এছাড়াও রাস্তার দুধারে একটি চায়ের দোকানও খুলতে দেয়নি পুলিশ। অন্যদিকে, দক্ষিণেশ্বর থেকে বালি ব্রিজ হয়ে ঢোকার রাস্তাতেও যান চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। সব মিলিয়ে বিটি রোড ও সংলগ্ন রাস্তা কয়েক ঘণ্টার জন্য প্রায় কার্ফুর চেহারা নেয়। রাষ্ট্রপতি চলে যাওয়ার পরেও যে যানজট সামলাতে পুলিশকে নাকানিচোবানি খেতে হয়।