কলকাতা: কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিকের (Nishith Pramanick) গ্রেফতারি পরোয়ানা নিয়ে এবার রাষ্ট্রপতি দ্রৌপদী মুর্মুর (Droupadi Murmu) দ্বারস্থ হচ্ছে তৃণমূল (TMC)। দলের দুই সংসদীয় নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় (Sudip Banerjee) এবং ডেরেক ও ব্রায়েন (Derek O’Brien) এ ব্যাপারে রাষ্ট্রপতির অ্যাপয়েন্টমেন্ট চেয়েছেন। তা পাওয়া গেলে রাজ্যের সাত সাংসদ সুদীপ ও ডেরেকের নেতৃ্ত্বে দিল্লি (Delhi) যাবেন রাষ্ট্রপতির (President) কাছে দরবার করতে।
প্রসঙ্গত, ২০০৯ সালে একটি সোনার দোকানে চুরির মামলায় কেন্দ্রীয় মন্ত্রী নিশীথের বিরুদ্ধে আলিপুরদুয়ার (Alipurduar) আদালত গ্রেফতারি পরোয়ানা (Arrest Warrant) জারি করেছে। জেলায় জেলায় তৃণমূল তা নিয়ে সংগঠিত প্রচারেও নেমে পড়েছে। শাসকদলের নেতারা বলছেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর মুখোশ খুলে দেওয়া হবে। বৃহস্পতিবারই কোচবিহারে (Cooch Behar) ১৬টি গ্রামীণ ব্লকের পূর্ণাঙ্গ কমিটির সদস্যদের নাম ঘোষণা করে তৃণমূলের জেলা সভাপতি অভিজিত দে ভৌমিক বলেন, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর বিরুদ্ধে সোনা চুরির অপরাধে গ্রেফতারি পরোয়ানা জারি হয়েছে। এটা জেলার তথা উত্তরবঙ্গবাসীর পক্ষে চরম লজ্জার ঘটনা। এর প্রতিবাদে জেলা জুড়ে তৃণমূল কংগ্রেস বিক্ষোভ দেখানোর কর্মসূচি গ্রহণ করেছে।
আরও পড়ুন: Ganga Erosion: গুরুতর সমস্যা গঙ্গা ভাঙন, সমাধান চেয়ে প্রধানমন্ত্রীকে চিঠি মুখ্যমন্ত্রীর
শিক্ষা-সহ নানা দুর্নীতির অভিযোগে জেরবার শাসকদল। পার্থ চট্টোপাধ্যায়, অনুব্রত মণ্ডল, মানিক ভট্টাচার্যের মতো একাধিক দাপুটে নেতা-মন্ত্রী (পার্থ অবশ্য জেলে যাওয়ার পর প্রাক্তন) জেলে বন্দি। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট। বিরোধীরা এই দুর্নীতির বিরুদ্ধে লাগাতার প্রচার চালাচ্ছে। এই অবস্থায় এবার রাজ্য বিজেপির নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, থানায় অভিযোগ, গ্রেফতারির দাবি জানিয়ে তাঁদের পাল্টা চাপে ফেলার কৌশল নিয়েছে তৃণমূল। শুভেন্দুর বিরুদ্ধে একাধিক মামলা তো হয়েই রয়েছে। সম্প্রতি রাজ্যের মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার উদ্দেশে কুকথা বলার অভিযোগে একাধিক থানায় শুভেন্দুর বিরুদ্ধে এফআইআর করেছে তৃণমূল। রাষ্ট্রপতির বিরুদ্ধে কারা দফতরের প্রতিমন্ত্রী অখিল গিরির মন্তব্য ঘিরে বিজেপি আদিবাসী জনজাতি আবেগকে ইস্যু করতে চাইছে ভোটের আগে। তারই পাল্টা হিসেবে বীরবাহার বিরুদ্ধে শুভেন্দুর মন্তব্যকে হাতিয়ার করেছে শাসকদল। এখানেও আদিবাসী জনজাতি সম্প্রদায়ের ভোট তৃণমূলের লক্ষ্য।
পাশাপাশি তৃণমূল সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছেলের জন্মদিন নিয়ে টুইট করাতেও শুভেন্দুর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি তুলেছে শাসকদল। এদিনই শিশু সুরক্ষা কমিশন শুভেন্দুকে নোটিস পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। এখানেই শেষ নয়, বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি দিলীপ ঘোষকে কেন ইডি বা সিবিআই গ্রেফতার করবে না, সেই প্রশ্ন তুলে নতুন বিতর্ক উসকে দিয়েছেন খোদ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। শিক্ষা কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার প্রসন্ন রায়ের বাড়িতে দিলীপ ঘোষের বাড়ির দলিল কী করে মিলল, প্রশ্ন তুলেছে তৃণমূল। দিলীপ অবশ্য দাবি করেন, তিনি কোনও অন্যায় করেননি। আবাসন সমিতির দায়িত্বে রয়েছেন প্রসন্ন। তাই বাড়ির বিদ্যুতের লাইন তাঁর নামে করার দায়িত্ব তাঁকে দিয়েছেন। সেই সূত্রে তাঁকে দলিল দেওয়া হয়েছে। দিলীপ বলেন, সিআইডি লাগিয়ে তদন্ত করুক রাজ্য সরকার। আমি তো ওদের মতো চুরি করিনি।