Sunday, June 8, 2025
HomeআজকেAajke | দত্তপুকুরের রহস্যের নেপথ্যে

Aajke | দত্তপুকুরের রহস্যের নেপথ্যে

Follow Us :

মার্চ থেকে অগাস্ট, ২৭ জনের মৃত্যু, কেন? অন্তত সরকারি নথি বলছে এঁরা প্রত্যেকে বাজি কারখানায় দুর্ঘটনায় মৃত। মানে আর ক’মাস পরে আমরা যখন দীপাবলির সময়, জ্বালাও আলো, জ্বালাও আলো বলে আমোদে মত্ত হব, তার খোরাক জোটাতে গিয়ে ৬ মাসেই মারা গেলেন ২৭ জন। এত সহজ এই অঙ্কটা? সরকার বলিলেন তাই শিরোধার্য, এরকম শোনাচ্ছে না কথাটা? তাই প্রশ্ন তো উঠবেই, যে এটা বাজি? না অন্য আরও কিছু? আমাদের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে হিংসার যে আবহমান সুর বাজে, যে সুরের ধরতাই অবশ্যই থাকে শাসকদলের গলায়, সেই হিংসার অনুষঙ্গেই কি যত্রতত্র এই দুর্ঘটনা? আরও সোজা বাংলায় বললে, প্রশ্নটা হবে, ওগুলো বাজির কারখানা? নাকি বোমার? প্রশ্ন কি একটা নাকি? এটাও তো প্রশ্ন যে একটা ঘটনা অন্য ঘটনাটার কার্বন কপি কীভাবে হয়? মেদিনীপুরের এগরাতে খাদিকুল গ্রামে অবৈধ বাজির কারখানা ছিল, সেখানে এই কারখানার মালিক আগেই পুলিশের কাছে দাগী, মানে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছিল, তারপর ছাড়া পেয়ে আবার কারখানা চালু করে। এলাকার মানুষজন টাকার লোভেই কারখানাতে কাজ করত, ঘটনার পরে এলাকার পুলিশ, স্থানীয় রাজনৈতিক দলের নেতারা গজনী সিনেমার আমির খান, কিচ্ছুটি মনে পড়ছে না, শর্ট টাইম মেমোরি লস। তাকিয়ে দেখুন, উত্তর ২৪ পরগনার দত্তপুকুরে এক্কেবারে কার্বন কপি, অমিল যেখানে তা হল খাদিকুলে কারখানা মালিক হিন্দু, দত্তপুকুরে কারখানা যার নামে চলছিল তিনি মুসলমান। কাজেই ভারতবর্ষের অধুনা নিয়ম মেনেই এ ঘটনার গুরুত্ব বেড়ে গেছে, এনআইএ এল বলে। কিন্তু যেই আসুক, এই ৬ মাসে ২৭ জনের মৃত্যু কিন্তু রাজ্য প্রশাসনের ব্যর্থতা, চরম ব্যর্থতা। বিষয় আজকে সেটাই, দত্তপুকুরের রহস্যের নেপথ্যে।

খাদিকুল বা দত্তপুকুরের ঘটনা কিছু প্রবণতাকে চিনিয়ে দেয় যা নিয়ে কিছু কথা বলা দরকার। এলাকায় পান থেকে চুন খসলে রাজনৈতিক নেতাদের দেখা যায়, প্রতিটি সামাজিক অর্থনৈতিক বিষয়ে, শ্রাদ্ধানুষ্ঠান থেকে ঘেটুঁ পুজোতে ছোট, কচি নেতা থেকে শুরু করে বড় ধাড়ি নেতাদের দেখা যায়, পাড়ায় পাড়ায় শাসকদলের নজর এড়িয়ে হ্যাঁচ্চো বললে পরদিন তাঁরা টের পেয়ে যান। অথচ একটা জলজ্যান্ত বাজি কারখানায় ২৫-৩০ জন কাজ করেন, সে কারখানা রমরম করে চলছে, বিক্রিবাটা হচ্ছে, সে কারখানার মালিক জেলে যাচ্ছেন, ফিরে এসে আবার বাজি বানাতে বসছেন, নেতারা খবর রাখছেন না? হয় নাকি? নাকি খবর রেখেও অন্যদিকে চোখ ফিরিয়ে ছিলেন, অবৈধ বাজি কারখানার লভ্যাংশ আসত নাকি তাদের পকেটে? 

আরও পড়ুন: Aajke | শুভেন্দু হয়ে উঠতে চান এনকাউন্টার স্পেশালিস্ট 

এবং পুলিশ, যাঁরা সর্বত্র বিরাজমান, যাঁরা সব জানেন, সব শোনেন, সব বোঝেন অথচ কর্তার ইচ্ছাতেই কর্ম করেন, তাঁরা জানতেন না এলাকার অবৈধ বাজী কারখানার কথা? আজ জানলেন? ৭টা মৃত্যুর পরে? জানতেন না যে মালিক একজন দাগী অপরাধী যাঁর নামে বৈধ লাইসেন্স থাকা সম্ভব নয়? সব জানতেন, কিন্তু না জানার, না দেখার নজরানা তাঁরাও পেয়েছেন নিশ্চয়ই। এবার আসি স্থানীয় প্রশাসনের কথায়? কী আশ্চর্য, তাঁরাও কিচ্ছুটি জানতেন না। অথচ ঘটনা ঘটে যাওয়ার পরে দেখুন, দত্তপুকুরের বেশিরভাগ মানুষ বিক্রমের সফট ল্যান্ডিং সম্পর্কে যতটা জানেন, এই বাজি কারখানা নিয়েও ততটাই জানেন। মানুষ নাকি প্রতিবাদ করেছিলেন, কেউ নাকি শোনেনি। মধ্যিখান থেকে এতটুকু বাসা বাঁধার স্বপ্ন দেখেছিল তাজমিরা বিবি, তাঁর দোষ তাঁর সাধের বাড়িটা ওই অবৈধ কারখানার ঠিক উল্টোদিকে, সে বাড়িও এখন ফুটিফাটা, জায়গায় জায়গায় ফাটল ধরেছে। খাদিকুলের ঘটনার পরে কমিটি হল, অবৈধ বাজি কারখানা চিহ্নিত করার কাজ শুরু হল, এই দত্তপুকুর এলাকার শাসকদলের নেতারা, এলাকার পুলিশ ঘুমোচ্ছিল? তেমন একটা খোঁজখবরও নিতে হবে না, সাধারণভাবেই জানতে পারবেন, মোডাস অপারেন্ডি সর্বত্র এক, কেউ ভ্যানচালক ছিলেন, কেউ গ্যারাজ মিস্ত্রি, কেউ খেতমজুর। তারপর শাসকদলের সঙ্গে যোগাযোগ, করিৎকর্মা হিসেবে, ডাকাবুকো হিসেবে কিছুদিনের মধ্যেই এঁরা দলের স্থানীয় মাথাদের আস্থাভাজন। তারপরে এই এঁরাই কেউ অবৈধ বাজি কারখানা, কেউ অবৈধ চোলাই মদের ব্যবসা, কেউ চোরাচালান, কেউ চিট ফান্ড, কেউ চাকরি বেচে টাকা কামানোর ব্যবসা ফেঁদে বসলেন। তারপর কিছুদিনের মধ্যেই এঁরা স্থানীয় নেতাদের এটিএম, লাগলেই টাকা আসছে ওখান থেকে। কাজেই এঁরাও এক একজন মিনি প্রশাসক হয়ে বসেন, যতক্ষণ না কোনও দুর্ঘটনা ঘটছে। আর ঘটনা ঘটলেই স্থানীয় শাসকদলের রাজনৈতিক নেতা বলবেন, উনি আমাদের দলের কেউ ছিলেন না, আইন আইনের পথে চলুক। ততক্ষণে মানুষের প্রাণ গেছে, সর্বস্ব চলে গেছে। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেস করেছিলাম, বিভিন্ন বাজি কারখানার দুর্ঘটনায় ৬ মাসের মধ্যে ২৭ জনের মৃত্যু কি আদতে পুলিশ প্রশাসন এবং শাসকদলের চরম ব্যর্থতার কথাই তুলে ধরে না? শুনুন মানুষজন কী বলছেন।

এই জমানায় নয়, সর্বত্র, সব জমানাতেই ছবিটা একই, কেবল ঝান্ডা, আর নামগুলো বদলে যায়। ক্ষমতায় থাকার সুবাদেই জন্ম নেয় বাস্তুঘুঘু, অপরাধীর দল, তাদের জন্ম থেকে ফুলে ফেঁপে ওঠার পিছনে শাসকদলের হাত আর পুলিশের পরোক্ষ সমর্থন থাকে। সব্বাই জানত গ্রামে গ্রামে চিট ফান্ডের বিজনেস চলছে যা লোক ঠাকানোর কারখানা। সব্বাই জানত চাকরি বিক্রি হচ্ছে, সব্বাই জানে চোলাই কারখানা আছে, সব্বাই জানে অবৈধ বাজি কারখানা আছে, এসব মৃত্যু আর সর্বস্বান্ত হওয়া হল কোল্যাটারাল ড্যামেজ। আর হয়ে যাওয়ার পরে এই শাসকদলের নেতারা, পুলিশ প্রশাসনের চোখেমুখে দেবশিশু সুলভ ভাবসাব, যেন ভাজা মাছটিও উল্টে খেতে পারেন না। এই ধারাবাহিক প্রতারণা কবে বন্ধ হবে, সেটাই মানুষের প্রশ্ন।

 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Suvendu Adhikari | তৃণাঙ্কুরের পোস্টে রেগে আগুন শুভেন্দু, খেপে গিয়ে কী বললেন দেখুন
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | ৫০০-১০০০-এ শাঁখা-পলা বিসর্জন দেবেন না
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | বিজেপি ক্ষমতায় এলে মাসে ৩০০০ টাকা
00:00
Video thumbnail
Anubrata Mondal | অনুব্রতকে ফাঁ/সা/নোর নেপথ্যে কে? দেখুন কলকাতা টিভি EXCLUSIVE
00:00
Video thumbnail
Bowbazar News | কলকাতায় ফের ভে/ঙে পড়ল বহুতলের একাংশ, কী পরিস্থিতি বউবাজারে? দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | শুভেন্দুকে নিয়ে সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট, ভুগতে হবে পাল্টা শুভেন্দু
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | BJP | ৫০০-১০০০-এ শাঁখা-পলা বিসর্জন দেবেন না
02:51
Video thumbnail
India-Pakistan | জলের জন্য কাঁদছে পাকিস্তান, ভারতকে চার বার চিঠি, কী সিদ্ধান্ত দিল্লির?
01:26:21
Video thumbnail
Mahua Moitra | বিয়ের পর মহুয়া মৈত্রর এই ভিডিও দেখলে আপনিও খুশি হবেন...
02:42:44
Video thumbnail
Anubrata Mondal | অনুব্রতকে ফাঁ/সা/নোর নেপথ্যে কে?
02:42