বিদার: কর্নাটকের (Karnataka) নির্বাচনী প্রচারে নেমেই প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি (Narendra Modi) কংগ্রেসকে (Congress) আক্রমণ শুরু করে দিলেন। শনিবার বিদার জেলার হুমনাবাদে এক নির্বাচনী সভায় মোদি বলেন, কংগ্রেস ফের আমাকে গালিগালাজ দেওয়া শুরু করেছে। ভালোই তো। ওরা যত আমাকে গালিগালাজ করবে, তত কংগ্রেস ক্ষয়িষ্ণু হবে। ওরা গালিগালাজ করে যাক। আমি আমার মতো করে মানুষের উন্নয়নের কাজ করে যাই। মোদি বলেন, এই নিয়ে কংগ্রেস ৯১ বার আমাকে ব্যক্তিগত আক্রমণ করেছে।
প্রধানমন্ত্রী এদিন কর্নাটকে তিনটি সভা করেন। এছাড়াও রোড শো করেন। প্রতিটি সভাতেই ভালো ভিড় হয়। মোদি ছাড়াও এদিন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ (Amit Shah), বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডাও (JP Nadda) কর্নাটকে প্রচার সারেন।
গত বৃহস্পতিবার কালবুর্গিতে এক জনসভায় কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে (Mallikarjun Kharge) প্রধানমন্ত্রীকে বিষধর সাপের সঙ্গে তুলনা করেন। ২৪ ঘণ্টা কাটতে না কাটতেই শুক্রবার কোপ্পালে বিজেপির এক সভায় দলীয় বিধায়ক বসনগৌড়া পাতিল ইয়তমল কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীকে (Sonia Gandhi) বিষকন্যা আখ্যা দেন। তিনি সোনিয়াকে পাকিস্তান এবং চীনের চরও বলেও কটাক্ষ করেন। বসনগৌড়া বলেন, সোনিয়া গান্ধীর নির্দেশেই কংগ্রেস নেতারা প্রধানমন্ত্রীকে আক্রমণ করছেন। খাড়্গে অবশ্য প্রধানমন্ত্রীকে বিষধর সাপ বলার জন্য দুঃখপ্রকাশও করেন। কিন্তু বিজেপি এটিকে ইস্যু করে প্রচারে নেমে পড়েছে। দলের শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ, কংগ্রেস সভাপতির ওই মন্তব্য ঘিরে রাজ্যের সর্বত্র প্রচার চালাতে হবে। পাশাপাশি বিজেপি খাড়্গের ওই মন্তব্যের জন্য নির্বাচন কমিশনেও গিয়েছে। কমিশনে স্মারকলিপি দিয়ে বিজেপি বলেছে, কংগ্রেস সভাপতি প্রধানমন্ত্রীকে বিষধর সাপ বলে নির্বাচনী বিধি ভেঙেছেন। তাঁর বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ারও দাবি করেছে বিজেপি।
তবে বিজেপি বিধায়ক বাসবগৌড়া সোনিয়াকে বিষকন্যা বলার পর কংগ্রেসও নির্বাচন কমিশনে গিয়েছে। কংগ্রেস শীর্ষ নেতৃত্বের নির্দেশ ছিল, কর্নাটকের নির্বাচনী প্রচারে বিজেপি সরকারের দুর্নীতিকেই প্রধান ইস্যু করতে হবে। এই সরকারকে ৪০ শতাংশ কমিশনের সরকার বলে প্রচার করতে হবে। এমনও বলা হয়েছিল, ভুলেও যেন প্রধানমন্ত্রীর নাম না করে কোনও কটু কথা না বলা হয়। কিন্তু সেই ভুলই করে বসেছেন খোদ কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়্গে। সঙ্গে সঙ্গে বিজেপি তা লুফেও নিয়েছে। কংগ্রেসের এক প্রবীণ নেতা বলেন, প্রধানমন্ত্রী সহ বিজেপির তাবড় নেতা-মন্ত্রীরা এর আগে কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধীর বিরুদ্ধে নানা অসৌজন্যমূলক মন্তব্য করেছেন। ২০১৮ সালে রাজস্থানে মোদি নাম না করে সোনিয়াকে কংগ্রেসের বিধবা বলে কটাক্ষ করেন। তা নিয়ে অভিযোগ করেও লাভ হয়নি। অথচ বিজেপি কোনও অভিযোগ করলেই সঙ্গে সঙ্গে ব্যবস্থা নেয় কমিশন। একেই রাহুলের সাংসদ পদ খোওয়া যাওয়া নিয়ে কংগ্রেস ঝামেলায় রয়েছে। এদিনই গুজরাত হাইকোর্টে রাহুলের আবেদনের শুনানি হওয়ার কথা। তার মধ্যেই খাড়্গের মন্তব্য নিয়ে কংগ্রেস বেশ অস্বস্তিতে।