গান্ধীনগর: মুম্বইয়ের ‘মানিকজোড়’ মামা-ভাগ্নে মেহুল চোস্কি ও নীরব মোদির ব্যাংক জালিয়াতিও (Bank Fraud) এদের কাছে নস্যি! জালিয়াতির পরিমাণ ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা। নরেন্দ্র মোদির (Narendra Modi) গুজরাতের নামী জাহাজ সংস্থার এই ব্যাংক জালিয়াতির তদন্তভার এখন সিবিআইয়ের (CBI) হাতে। সংস্থার ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে শনিবার মামলা রুজু করল কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা সংস্থা। গুজরাতের এবিজি শিপইয়ার্ডস লিমিটেড (ABG Shipyards Limited)-এর এই ব্যাংক জালিয়াতি অতীতের সব নজির ভেঙে দিয়েছে।সিবিআইয়ের হাতে আসা এটাই দেশের সবচেয়ে বড় ব্যাংক জালিয়াতির ঘটনা।
সিবিআই (CBI) সূত্রে খবর, গুজরাতের এবিজি শিপইয়ার্ডস লিমিটেডের সঙ্গেই ওই সংস্থার ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে। ডিরেক্টরদের মধ্যে রয়েছেন ঋষি কমলেশ আগরওয়াল, শান্তনম মুথাস্বামী, অশ্বিনী কুমার, সুশীল কুমার আগরওয়াল এবং রবি বিমল নেভেটিয়া। ২৮টি ব্যাংকের সঙ্গে ২২ হাজার ৮৪২ কোটি টাকা প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকের পাশাপাশি বেসরকারি কয়েকটি ব্যাংকের সঙ্গেও জালিয়াতি করার অভিযোগ উঠেছে মোদি রাজ্যের এই নামী জাহাজ সংস্থার বিরুদ্ধে।
গুজরাতের দাহেজ এবং সুরাতে শিপইয়ার্ড রয়েছে সংস্থাটির। জাহাজ নির্মাণ ছাড়াও জাহাজ রক্ষণাবেক্ষণের কাজ করে সংস্থাটি। অভিযোগ, এসবিআই-সহ ২৮টি ব্যাংক থেকে বিপুল অঙ্কের ঋণ নিয়ে সেই টাকা অন্য খাতে ব্যবহার করেছে সংস্থাটি।
২০১৯ সালে নভেম্বরে এবিজি শিপইয়ার্ডের বিরুদ্ধে প্রথমবার জালিয়াতির অভিযোগ দায়ের করে একটি ব্যাংক। তার পরেই কেঁচো খুঁড়তে কেউটে বেরিয়ে আসে। ফরেনসিক অডিটে সামনে আসে ওই একটি ব্যাংক নয়, ২৮টি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তা শোধ করেনি ওই জাহাজ সংস্থা। ২০১২ থেকে ২০১৭ সালের মধ্যে এই ঋণ নেওয়া হয়েছিল।
আরও পড়ুন: Asaduddin Owaisi Hijab: হিজাব পরা মেয়েই একদিন প্রধানমন্ত্রী হবে: আসাদুদ্দিন
অভিযোগ অনুযায়ী, আইসিআইসিআই ব্যাংক (ICICI Bank) থেকে মোট ৭০৮৯ কোটি টাকা, আইডিবিআই ব্যাংক থেকে ৩৬৩৯ কোটি টাকা, স্টেট ব্যাংক থেকে ২৯২৫ কোটি টাকা, ব্যাংক অফ বরোদা থেকে ১৬১৪ কোটি টাকা এবং পঞ্জাব ন্যাশনাল ব্যাংকের সঙ্গে প্রতারণার অঙ্ক ১২৪৪ কোটি টাকা। বাকি টাকা অন্যান্য ব্যাংক এবং আর্থিক প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে তুলেছে।
সিবিআইয়ের এক কর্তা জানান, নির্দিষ্ট কাজের জন্য তহবিল তৈরির নাম করে বিভিন্ন ব্যাংক থেকে এই ঋণ নেওয়া হয়েছিল। পরে সেই তহবিল বেআইনি ভাবে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। ওই টাকায় সম্পত্তি কেনা শুধু নয়, একাধিক বিদেশি সহযোগী সংস্থায় অর্থ বিনিয়োগও করা হয়েছে। গরমিল ধরা পড়ার পর ৭ ফেব্রুয়ারি প্রথম গুজরাতের ওই সংস্থার বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করে সিবিআই। পরে, শনিবার সংস্থার ডিরেক্টরদের বিরুদ্ধে এফআইআর হয়েছে।