কর্ণাটক: কর্ণাটকে (Karnataka) হিজাব (Hijab) নিয়ে বিতর্ক চলছেই। এই পরিস্থিতির মধ্যেই এবার কর্ণাটকের শিক্ষামন্ত্রী বিসি নাগেশ ( Education Minister BC Nagesh) জানান, হিজাব পরে পিইউসি পরীক্ষায় ( PUC Exam) বসার অনুমতি দেওয়া হবে না পরীক্ষার্থীদের। সম্প্রতি এক অনুষ্ঠানে তিনি বলেছিলেন, পড়ুয়াদের ইউনিফর্ম পরে পরীক্ষা দিতে বলা হয়েছে এবং হিজাব ইউনিফর্ম হিসাবে গন্য করা হয় না তাই যারা হিজাব পরে পরীক্ষা কেন্দ্রে উপস্থিত হবে তাদের পরীক্ষা দিতে দেওয়া হবে না। কর্ণাটক পিইউসি I পরীক্ষা প্রাথমিকভাবে ২০২৩-এর ২৭ ফেব্রুয়ারী তারিখে হওয়ার কথা ছিল, কিন্তু প্রধানমন্ত্রী মোদীর রোড শোয়ের কারণে সেটি স্থগিত করা হয়েছিল। দ্বিতীয় পিইউসি পরীক্ষা ৯ মার্চ হবে।
হিজাব পরে কোনও সরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যেতে পারবেন না পড়ুয়ারা। কর্নাটক সরকারের তরফে এমনটাই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছিল। সেই নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে পরীক্ষায় হিজাব পরে যাওয়ার অনুমতি দেওয়ার আবেদন নিয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হন কর্নাটকের কিছু মেয়ে পড়ুয়া। এই আবেদনের প্রেক্ষিতে জরুরি ভিত্তিতে শুনানির আবেদনও করেন তাঁরা। সব শুনে প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূর ( DY Chandrachud) পড়ুয়াদের আশ্বাস দিয়েছেন, তিনি এই বিষয়টি দেখবেন এবং এই আবেদনের শুনানির জন্য একটি বেঞ্চও গঠন করা হবে। আইনজীবী সাদান ফারাস্ত এই আবেদনের জরুরি ভিত্তিতে শুনানির জন্য প্রধান বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড়ের কাছে উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, ৯ মার্চ পরীক্ষা রয়েছে এবং ছাত্রীদের হিজাব পরে পরীক্ষা দেওয়ার অনুমতি না দেওয়া হলে তাঁদের একটা বছর নষ্ট হবে।
আরও পড়ুন:Layoffs at Airbnb: লাভের মুখ দেখলেও ৩০ শতাংশ কর্মী ছাঁটাই করল এয়ারবিএনবি
অন্যদিকে, একজন মহিলা আইনজীবী সিজিআইয়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চের সামনে বিষয়টি উল্লেখ করেন। তিনি বলেন, পাঁচ দিনের মধ্যে যেহেতু কর্ণাটকের পিইউসি পরীক্ষা রয়েছে, তাই জরুরি ভিত্তিতে তালিকা করা হোক। তবে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ ওই আইনজীবীকে জানান, আপনি যদি শেষ তারিখে আসেন তাহলে আমরা কী করতে পারি। বিচারপতি ডিওয়াই চন্দ্রচূড় জানিয়েছেন, হোলির ছুটির পরে এই বিষয়ে শুনানির জন্য নতুন বেঞ্চ তৈরি করা হবে।
প্রসঙ্গত, ২০২২ সালের ১ জানুয়ারি কর্নাটকের উদুপিতে একটি প্রি-ইউনিভার্সিটিতে কয়েক জন হিজাব পরিহিত পড়ুয়াকে ক্লাসে বসতে বাধা দেওয়ার ঘটনা ঘটে। কলেজ উন্নয়ন সমিতির সভাপতি বিজেপি বিধায়ক রঘুপতি ভট্ট স্পষ্ট জানিয়ে দেন, হিজাব পরিহিতরা ক্লাসে ঢুকতে পারবেন না। সেই বিতর্ক দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে রাজ্য জুড়ে। হিজাবের পাল্টা হিসেবে গেরুয়া উত্তরীয় পরে আন্দোলন শুরু করে একাধিক হিন্দুত্ববাদী সংগঠন। কয়েকটি জায়গায় হিজাবের পক্ষে-বিপক্ষে আন্দোলনকারীরা মুখোমুখি হয়ে পড়েন। পুলিশের সঙ্গেও একাধিক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। কয়েকটি জেলায় ১৪৪ ধারা জারি করা হয়। সমস্ত স্কুল-কলেজ অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয়।