নয়াদিল্লি: নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যের লাগাতার মূল্যবৃদ্ধি, জ্বালানির আকাশছোঁয়া মূল্য, বেকারত্ব তো রয়েইছে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে একাধিক রাজ্যের উপনির্বাচনে ভরাডুবি। গোদের উপর বিষফোঁড়া কৃষি আইন প্রত্যাহার। এ সবের সাঁড়াশি চাপেই আপাতত এনআরসি (NRC) ইস্যুতে পিছু হটল কেন্দ্র। সারা দেশে এনআরসি (NRC in India) কার্যকরের ব্যাপারে কেন্দ্রীয় সরকার এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। কেরলের কংগ্রেস সাংসদ হিবি ইডেনের প্রশ্নের উত্তরে মঙ্গলবার সংসদে এ কথা জানালেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাই।
বাংলায় বিধানসভা নির্বাচনের প্রচার চলাকালীন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ বলেছিলেন, দেশজুড়ে নাগরিকপঞ্জি বা এনআরসি চালু করা হবে। কিন্তু ভোটপর্ব মিটে যাওয়ার পর কয়েকমাস পেরিয়ে গেলেও তা নিয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারল না কেন্দ্র। অমিত শাহের ১৮০ ডিগ্রি বিপরীতে হেঁটে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি দিল্লির রামলীলা ময়দান থেকে সাফ জানিয়ে দিয়েছিলেন, ‘এই জাতীয় প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হয়নি।’ অগস্টে সংসদে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিত্যানন্দ রাইও জানিয়েছিলেন, কেন্দ্রীয় ভাবে এনআরসি কার্যকরের ব্যাপারে সরকার এখন কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি।
সেই সময় নিত্যানন্দ রাই জানান, এনআরসি নিয়ে এখনও পর্যন্ত সরকার কোনও সিদ্ধান্ত না নিলেও এনপিআর হচ্ছে। একটি প্রশ্নে উত্তরে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ‘নাগরিক আইন ১৯৫৫ অনুযায়ী ২০২১ সালে আদমসুমারির প্রথম ধাপের সঙ্গে জাতীয় জনসংখ্যাপঞ্জী সংশোধন করা হবে। বায়োমেট্রিক তথ্য যুক্ত করা ছাড়াও জনবিন্যাসও পরিমার্জিত হবে। কোভিড সংক্রমণের জেরে এনপিআর স্থগিত রাখার কথা ঘোষণা করেছিল কেন্দ্র।’
আরও পড়ুন: এ বার মোদি, দেশের সাফল্য দেখাতে আমেরিকার ছবি ব্যবহারের অভিযোগ
২০১৯-এর নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে বিতর্কের মাঝেই দেশব্যাপী এনআরসি-র প্রসঙ্গ খবরে আসে। বিজেপির ইস্তেহারেও এনআরসি চালুর প্রসঙ্গ স্থান পায়। উত্তর-পূর্বের রাজ্য অসমে এনআরসি হয়েছে। ভারতীয় নাগরিকত্বের প্রমাণ স্বরূপ যথোপযুক্ত তথ্য দিতে না পারায় ৩.৩ কোটি আবেদনকারীর মধ্যে ১৯ লক্ষ ৬ হাজার নাম বাদ পড়েছিল।
The Citizenship (Amendment) Act, 2019 (CAA) was notified on 12 December 2019 and it came into force from 10 January 2020. The persons covered under the CAA may apply for citizenship after the rules are notified under the CAA: MHA in a written reply in Lok Sabha
— ANI (@ANI) November 30, 2021
রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এনআরসি কিংবা সিএএ নিয়ে গোটা দেশের মানুষের মধ্যে একটা চাপা আতঙ্ক রয়েছে। বিরোধী দলগুলিও বারংবার এনআরসি, সিএএ বাতিলের দাবিতে সোচ্চার হয়েছে। এরই মধ্যে পশ্চিমবঙ্গ সহ একাধিক রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপি বড়সড় ধাক্কা খেয়েছে। ২০২৪-এর লোকসভা নির্বাচনের আগে বেশ কয়েকটি রাজ্যে ভোট রয়েছে। সে কারণেই এনআরসি ইস্যুতে মেপে পা ফেলতে চাইছে মোদি সরকার।
আরও পড়ুন: যোগীর প্রচারে মা উড়ালপুলের ছবি, বিজ্ঞাপনে কার হাত? তৃণমূলের RTI