ডায়মন্ড হারবার: বজবজে (Budge Budge) আক্রান্ত বিজেপি কর্মীদের দেখতে এসে বিক্ষোভের মুখে পড়লেন সুকান্ত মজুমদার (Sukanta Majumder)। ১০০ দিনের কাজের টাকা কেন মিটিয়ে দেওয়া হচ্ছে না, সেই দাবিতে বিক্ষোভ দেখাতে থাকেন স্থানীয়রা। সুকান্তকে লক্ষ্য করে ‘চোর-চোর’ স্লোগান ওঠে। বৃহস্পতিবারের এই বিক্ষোভের ঘটনায় শাসকদলকেও পাল্টা চোর স্লোগান দেন সুকান্ত মজুমদার। এরপর তাঁকে লক্ষ্য করে জুতো ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। মুহূর্তের মধ্যে পরিস্থিতি উপ্তপ্ত হয়ে ওঠে। পরিস্থিতি সামাল দিতে নামানো হয়েছে ব়্যাফ। স্থানীয়দের ভিড়ের মধ্যে দিয়েই নিরাপত্তারক্ষীদের ঢালে করে নিজেকে আড়াল করে গাড়িতে ওঠেন। যেতে যেতে বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে প্রশ্ন করতে চাই, এটাকে গণতন্ত্র বলে কিনা?”
ডায়মন্ড হারবার জেলা বিজেপির অভিযোগ বুধবার বজবজ ১ নম্বর ব্লকের বিডিও অফিসে সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপির প্রতিনিধি হিসেবে যোগদান করতে যান জয়দেব দত্ত, সদানন্দ কুণ্ডু, প্রণব নস্কর এবং সমীর মণ্ডল। অভিযোগ, দুপুরে বিডিও অফিসের বাইরে প্রায় ১০০ জন তৃণমূল কর্মী দ্বারা আক্রান্ত হন বিজেপি কর্মীরা। তাঁদের ইট, বাঁশ এবং লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়। বজবজের এই ঘটনায় মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিককে চিঠি লেখেন রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার। বজবজের হালদারপাড়ায় এক বিজেপি কর্মী জখম হন বলেই খবর। তাঁকে দেখতে বৃহস্পতিবার ওই এলাকায় যান বিজেপি রাজ্য সভাপতি। আসার পথে সুকান্ত মজুমদারকে দেখে ‘গো ব্যাক’ স্লোগান দেওয়া হয়।
সুকান্ত মজুমদারের জানান, ‘যদি সর্বদলীয় বৈঠকে বিজেপিকে অংশগ্রহণ করতে না দেন, তাহলে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দরকার নেই।”ডায়মন্ড হারবার মডেল এটা, এখানে পুলিশ কোনও কাজ করে না।’বজবজ থানার দুই পুলিশ আধিকারিকের নাম ধরে অভিযোগ করেন সুকান্ত মজুমদার। তার অভিযোগ ‘৬ থেকে ৮ বছর ধরে দুটি থানাতে উপস্থিত রয়েছে।’ সুকান্ত মজুমদারের দাবি তাকে গালিগালাজ করা হয়। সবাই গেরুয়া টিকা পড়ে এসছে। এরা সবাই তৃণমূলের দুষ্কৃতি। বিডিও অফিসে বিজেপি কর্মীদের মারধরের ঘটনায় বিডিও কে ‘বেচারা দিদির অফিসার’ বলে কটাক্ষ করেন সুকান্ত।
আরও পড়ুন: বিমানবন্দরের আশেপাশে বহুতল নির্মাণের নয়া বিধি
আক্রান্ত বিজেপি কার্যকর্তাকে দেখে কলকাতার উদ্দেশ্যে ফেরার সময় উত্তেজনা সৃষ্টি হয় আক্রান্ত বিজেপি কর্মীর বাড়ির বাইরেই। সুকান্তকে ঘিরে আবারও স্লোগান দিতে থাকে উত্তেজিত জনতা।তাঁদের দাবি, ১০০ দিনের বকেয়া টাকা ফেরত দিতে হবে। সুকান্তকে লক্ষ্য করে ‘চোর’ স্লোগান দিতে থাকেন এলাকার মহিলারা। তাঁকে লক্ষ্য করে খালি জলের বোতল,জুতো ছোড়া হয় বলেও অভিযোগ। বিজেপি নেতা তরুণ জ্যোতি তেওয়ারির গাড়ির কাঁচ ভেঙে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। উত্তেজিত জনতাকে সরাতে লাঠি উচিয়ে তাড়া করেন ডায়মন্ড হারবার জেলার পুলিশ সুপার রাহুল গোস্বামী। লাঠিচার্জ করতেও দেখা যায় পুলিশ সুপারকে। বজবজ থানার পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার চেষ্টা করে। তবে সময় যত গড়ায়, পরিস্থিতি ক্রমশ ঘোরাল হতে থাকে। বাধ্য হয়ে এলাকায় নামে ব়্যাফ।
এই ঘটনার পর পুলিশ সুপারের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন করেন সুকান্ত। তিনি বলেন, “অশান্তি করতে জেহাদিদের আনা হয়েছে। এটা কী গণতন্ত্র?” যদিও এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছেন তৃণমূলের অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক কুণাল ঘোষ। বলেন, “১০০ দিনের কাজ করেছেন, তা-ও টাকা পাচ্ছেন না। মানুষের তো ক্ষোভ থাকবেই।”
অন্য খবর দেখুন