নয়াদিল্লি: সোমবার ভয়াবহ বিস্ফোরণের কেঁপে উঠেছিল দিল্লি (Delhi Red Fort Blast)। বিস্ফোরণের সঙ্গে যুক্ত সন্দেহে এখনও পর্যন্ত ৪ জনকে আটক করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। দিল্লির পাহাড়গঞ্জ, দরিয়াগঞ্জ সহ একাধিক এলাকায় তল্লাশি চালানো হয়েছে। মৃত্যু হয় আট জনের। এই দুই ঘটনার মধ্যে যোগসূত্র রয়েছে কি না, তা-ই এখন খতিয়ে দেখছেন তদন্তকারীরা। লালকেল্লার কাছে বিস্ফোরণ নিয়ে দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে চলছে উচ্চপর্যায়ের বৈঠক। বিস্ফোরণের কিছুক্ষণ আগে তোলা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গেছে, ভিড়ের মধ্যে দিয়ে একটি I-20 গাড়ি যাচ্ছে। কালো মাস্ক পরা ব্যক্তি, যাকে গাড়ির ভেতরে চালকের আসনে বসে থাকতে দেখা গেছে, তাকে জঙ্গি মহম্মদ উমর বলে মনে করা হচ্ছে।
লালকেল্লার মতো হাই প্রোফাইল এলাকায় এই বিস্ফোরণে তোলপাড় গোটা দেশজুড়ে। একাধিক শহরে জারি করা হয়েছে হাই সিকিউরিটি অ্যালার্ট। যে গাড়িটিতে বিস্ফোরণ হয়েছিল ( হুন্ডাই আই ২০), সেই গাড়ির মালিককে ফরিদাবাদ থেকে গ্রেফতার করা হল। ধৃতের নাম নাদিম খান। সন্দেহভাজনকে আটক করা হয়েছে। সন্দেহভাজন ব্যক্তির জম্মু ও কাশ্মীরের সঙ্গে সম্ভাব্য যোগসূত্র রয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। ঘটনাস্থলে রয়েছে জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশও। এই হামলার পরিকল্পনা এবং বাস্তবায়নে আরও বিস্তৃত নেটওয়ার্ক জড়িত থাকার সম্ভাবনা উড়িয়ে দিচ্ছেন না নিরাপত্তা বিষয়ক তদন্তকারী আধিকারিকেরা৷
আরও পড়ুন: দিল্লি কাণ্ড নিয়ে উচ্চ পর্যায়ের নিরাপত্তা পর্যালোচনা বৈঠকে অমিত শাহ
বিস্ফোরণের আগের লালকেল্লার সামনে সিসিটিভি ফুটেজ প্রকাশ্যে এসেছে। সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যাচ্ছে যে রাস্তাটি যখন খুব ব্যস্ত ছিল, তখন একটি সাদা I-20 গাড়ি ওই এলাকা দিয়ে যাচ্ছিল। গাড়িটি যানজটের মধ্য দিয়ে চলতে থাকে। ফুটেজ অনুসারে, গাড়িটি যে চালাচ্ছিল তার মুখ কালো মাস্ক দিয়ে ঢাকা ছিল। গাড়ির সামনে মাস্ক পরা ডাক্তার হলেন মহম্মদ উমর, ফরিদাবাদ মডিউলের একজন পলাতক জঙ্গি। যে হুন্ডাই I-20 গাড়িতে বিস্ফোরণটি ঘটেছিল তা মূলত মহম্মদ সলমানের ছিল, কিন্তু তিনি এটি নাদিমের কাছে বিক্রি করেছিলেন, যিনি পরে এটি ফরিদাবাদের একটি ব্যবহৃত গাড়ির ডিলার রয়েল কার জোনের কাছে বিক্রি করেছিলেন। পরে এটি তারিক এবং তারপরে উমর কেনেন।
কর্মকর্তারা জানিয়েছেন যে আক্রমণটি আত্মঘাতী ধাঁচের একটি অভিযান বলে মনে হচ্ছে। সূত্র জানিয়েছে, গাড়িটি জম্মু ও কাশ্মীরের পুলওয়ামার বাসিন্দা তারিক কিনেছিলেন বলে অভিযোগ রয়েছে, যাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে। জানা গিয়েছে, দিল্লি বিস্ফোরণের নেপথ্যে রয়েছে ডঃ উমর মহম্মদ। এই আবহে সামনে আসছে ফরিদাবাদ স্লিপার সেল যোগ। রিপোর্ট অনুযায়ী, দিল্লি বিস্ফোরণের ঘটনায় অভিযুক্ত ডঃ উমর মহম্মদ পাক জঙ্গি সংগঠনের সঙ্গে যুক্ত। এই উমর নাকি ডঃ মুজাম্মিল এবং ডঃ আদিলের সহযোগী হয়ে থাকতে পারে।
বিস্ফোরণের ১০ মিনিটের মধ্যেই ঘটনাস্থলে পৌঁছে গিয়েছিল দিল্লি পুলিশের ক্রাইম ব্রাঞ্চ। ঘটনাস্থল ঘিরে ফেলে তল্লাশি অভিযান চালায় দিল্লি পুলিশের ডগ স্কোয়াড। মোতায়েন করা হয় এনএসজি। তড়িঘড়ি সেখানে ফরেন্সিক দল পাঠানো হয় নমুনা সংগ্রহের জন্য। দিল্লি পুলিশ প্রাথমিক ভাবে জানায়, ঘটনাস্থলে থেকে উদ্ধার হওয়া কোনও জখম ব্যক্তির শরীরে স্প্লিন্টারের আঘাত দেখা যায়নি। তবে এই বিস্ফোরণ যে নাশকতার জেরেই ঘটেছে, তা স্পষ্ট হয়ে যায় তদন্ত এগোতেই। কারণ দিল্লির বিস্ফোরণের মাত্র কয়েক ঘণ্টা আগেই এই লালকেল্লা থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ফরিদাবাদে বাজেয়াপ্ত হয় ২ হাজার ৯০০ কেজি বিস্ফোরক। এই ঘটনায় ৩ চিকিৎসক-সহ ৮ জনকে গ্রেফতার করা হয়।
দেখুন ভিডিও







