কলকাতা: শনিবার দুপুর আড়াইটে, শিয়ালদা আদালতের (Sealdah Court) বাইরে ছিল তীব্র ভিড়। সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিরা, ক্যামেরাম্যানরা এবং পুলিশের বিশাল উপস্থিতি চোখে পড়ছিল। প্রতিবাদীরা ‘ন্যায়বিচার’ দাবি করে আদালতের সামনে জড়ো হয়েছিল। সঞ্জয় রায়কে আদালতে নিয়ে আসা হয় এবং বিচারক অনির্বাণ দাস এজলাসে উপস্থিত হয়ে রায় ঘোষণা করতে শুরু করেন। সঞ্জয় রায়কে খুন ও ধর্ষণের অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। এই রায়টি আদালতের গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে।
আদালতের রায়ে সঞ্জয় রায়কে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩, ৬৪, ৬৬ এবং ১০৩ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে। বিচারক তার রায়ে জানিয়েছেন, সঞ্জয় রায়ের বিরুদ্ধে শিয়ালদা আদালত এই মামলায় দোষী সাব্যস্ত করেছে এবং তাকে শাস্তি ঘোষণা করা হবে আগামী সোমবার। এই ধারাগুলির শাস্তির বিধান আদালতে বিস্তারিতভাবে ব্যাখ্যা করা হয়। বিচারক বলেন, ৬৪ নম্বর ধারায় ধর্ষণের জন্য সর্বোচ্চ শাস্তি যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং সর্বনিম্ন শাস্তি ১০ বছরের কারাদণ্ড হতে পারে।
আরও পড়ুন: আজ ধৃত সঞ্জয় রায়ের সাজা ঘোষণা, নির্যাতিতার বাবা-মায়ের কথাও শুনবেন বিচারক
বিচারক আরও জানান, ৬৬ নম্বর ধারায় ধর্ষণের সময় মৃত্যু ঘটানোর শাস্তি সর্বনিম্ন ২০ বছর কারাদণ্ড এবং সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড হতে পারে। এছাড়াও, ১০৩ নম্বর ধারায় খুনের শাস্তি মৃত্যু অথবা যাবজ্জীবন কারাদণ্ড হতে পারে। শাস্তির বিধান সম্পর্কে বিস্তারিত ব্যাখ্যা দেওয়ার পর, বিচারক সঞ্জয় রায়ের বক্তব্য শোনার জন্য আদালতকে প্রস্তুত করেন।
রায় ঘোষণার পর, সঞ্জয় রায় তার বক্তব্য রাখেন। তিনি দাবি করেন, “আমি সবসময় রুদ্রাক্ষের চেন পরি, এবং যদি আমি অপরাধ করতাম তবে তা ঘটনাস্থলেই ছিঁড়ে যেত। আমি এই অপরাধ করিনি, আমাকে ফাঁসানো হয়েছে।” তিনি আরো বলেন, “আমাকে যারা ফাঁসিয়েছে, তাদের কেন ছেড়ে দেওয়া হচ্ছে?” তার এই অভিযোগে বিচারক তৎক্ষণাৎ মন্তব্য করেন, “আপনার বক্তব্য সোমবার শোনা হবে।”
বিচারক আরও বলেন, “এখন আপনাকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হচ্ছে এবং আগামী সোমবার দুপুর সাড়ে ১২টায় দোষীর বক্তব্য শোনা হবে। এরপর দ্বিতীয়ার্ধে শাস্তি ঘোষণা করা হবে।” সঞ্জয় রায়ের বক্তব্যের পর, তার শাস্তি সম্পর্কে সবার মধ্যে কৌতুহল সৃষ্টি হয়। আদালতের এই রায় প্রমাণ করেছে যে, অপরাধীরা যতই চেষ্টা করুক না কেন, ন্যায়বিচার অবশেষে প্রতিষ্ঠিত হয়।
এদিনের রায় শিয়ালদা আদালতের ইতিহাসে একটি গুরুত্বপূর্ণ মুহূর্ত হিসেবে বিবেচিত হচ্ছে। আদালতের এই সিদ্ধান্ত সমাজে নানা প্রশ্নের জন্ম দিতে পারে, বিশেষ করে যারা সঞ্জয় রায়ের নির্দোষিতা দাবি করছেন। শিয়ালদা আদালতের রায় পরবর্তী সময়ে আলোচনার বিষয় হতে পারে এবং এর সঙ্গে যুক্ত অনেক রহস্য উন্মোচিত হতে পারে।
দেখুন আরও পড়ুন: