কলকাতা: ২০২৪ এর ৯ অগাস্ট আরজি করে ঘটে যায় মর্মান্তিক ঘটনা। কর্মরত অবস্থায় এক জুনিয়র চিকিৎসককে ওঠে ধর্ষণ করে খুনের অভিযোগ। আর তারপর থেকেই উত্তাল হয় রাজ্য রাজনীতি। দিকে দিকে প্রতিবাদের ঝড় ওঠে। চিকিৎসকদের প্রতিবাদের ডাকে তিলোত্তমার বিচারের দাবিতে রাত জাগেন সকলেই। শুধুমাত্র কলকাতা নয়, বঙ্গ সহ ভারতবর্ষের বিভিন্ন প্রান্তে দেখা যায় প্রতিবাদের আঁচ। প্রথমে এই ঘটনার তদন্তে নামে রাজ্য পুলিশ। ঘটনায় গ্রেফতার করা হয় সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়কে। তারপর কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআই এই ঘটনার তদন্তে নেমে গ্রেফতার করে সঞ্জয় রায়কে। পরে অবশ্য গ্রেফতার করা হয় আরজি করের প্রাক্তন অধ্যক্ষ সন্দীপ ঘোষ এবং টালা থানার ওসি অভিজিৎ অভিজিৎ মন্ডলকে। কিন্তু সিবিআই ৯০ দিন পেরিয়ে গেলেও সঠিক চার্জশিট তাদের বিরুদ্ধে জমা দিতে না পারায় এই কেস থেকে অব্যাহতি পান তারা।
কয়েকদিন আগেই শিয়ালদহ আদালতের তরফ থেকে জানানো হয় ১৮ জানুয়ারি আরজিকর কাণ্ডের রায় ঘোষণা করা হবে। সেইমতো শনিবার শিয়ালদহ আদালতে বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয় এই ঘটনার জন্য দায়ী সিভিক ভলান্টিয়ার সঞ্জয় রায়। আর আজ অর্থাৎ সোমবার তার সর্বোচ্চ সাজা ঘোষণা করবে শিয়ালদহ আদালত। বিচারক অনির্বাণ দাসের এজলাসে আজ বেলা ১২:৩০ টা নাগাদ শুরু হবে এই প্রক্রিয়া। জানা যাচ্ছে, আজ আদালত ধৃত সঞ্জয় রায়ের বক্তব্য শুনবেন। পাশাপাশি, নির্যাতিতার বাবা-মায়েরও বক্তব্য শোনা হবে। নিজ জাতি তার বাবা-মায়ের সাফ দাবি, সঞ্জয় রায়ের পাশাপাশি এই ঘটনায় আরও অনেকেই দোষী। কারণ এই ঘটনা একার পক্ষে করা সম্ভব নয়। তাদের মেয়ে সঠিক বিচার পাচ্ছেন না বলে দাবি করেন তারা। অন্যদিকে, সঞ্জয়কে যখন শনিবার দোষী সাব্যস্ত করা হয় তখন তিনি চেঁচিয়ে বলেন, তিনি দোষী নন, তাঁকে ফাঁসানো হচ্ছে। কিন্তু শনিবার বিচারক সাফ জানিয়ে দেন তথ্য প্রমাণের ভিত্তিতে দোষী একজনই । জুনিয়র চিকিৎসককে খুন এবং ধর্ষণ মামলায় একমাত্র অভিযুক্ত সঞ্জয় রায়কেই শনিবার দোষী সাব্যস্ত করা হয়। আর আজ সোমবার তার সাজা ঘোষণা হবে। ভারতীয় ন্যায়সংহিতা অনুযায়ী, ধৃত সঞ্জয়ের সর্বোচ্চ সাজা হতে পারে মৃত্যুদণ্ড।
আরও পড়ুন: শিয়রে ঝুলছে মৃত্যুদণ্ডের খাঁড়া, আগের দিন জেলে সঞ্জয়ের ভাব এমন যেন কিছুই হয়নি
শনিবার আদালতের তরফ থেকে জানানো হয়, ‘ ৯ অগাস্ট ভোরে সঞ্জয় আরজি কর হাসপাতালে ঢুকে মৃত জুনিয়র চিকিৎসকের উপর আক্রমণ করেন এবং যৌন হেনস্থা করেন। শুধু ধর্ষণ নয়, তাঁর গলা টিপে খুন করে সঞ্জয়। ‘
কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা সিবিআইয়ের তরফ থেকে প্রথম থেকেই দোষী সাব্যস্ত করা হয় সঞ্জয় রায়কে। সর্বোচ্চ সাজা মৃত্যুদণ্ড হওয়া উচিত বলে বারবার দাবি করে আসছে এই সংস্থা। সেই প্রেক্ষিতে শনিবার শিয়ালদহ আদালতের বিচারপতি সঞ্জয় রায়কে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার ৬৪ (ধর্ষণ), ৬৬ (ধর্ষণের পর মৃত্যু) এবং ১০৩ (১) (খুন) ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেন।
আর আজ সকলের নজরে শিয়ালদহ আদালতের দিকে, সঞ্জয়কে কোন সাজা দেওয়া হয় সেদিকে। বেলা ১২:৩০ টা নাগাদ শুরু হবে এই প্রক্রিয়া।
দেখুন অন্য খবর