Thursday, November 6, 2025
HomeScrollAajke | বঙ্গ বিজেপির কমিটি, এক খুড়োর কল, ধেড়িয়ে লাট

Aajke | বঙ্গ বিজেপির কমিটি, এক খুড়োর কল, ধেড়িয়ে লাট

বঙ্গ বিজেপির কমিটি আর তৈরি হচ্ছে না

মনে পড়েই যাবে সেই ছড়া, সুকুমার রায় সেই কবেই লিখেছিলেন,

দেখে এলাম কলটি অতি সহজ এবং সোজা,
ঘন্টা পাঁচেক ঘাঁটলে পরে আপনি যাবে বোঝা।
বলব কি আর কলের ফিকির, বলতে না পাই ভাষা,
ঘাড়ের সঙ্গে যন্ত্র জুড়ে এক্কেবারে খাসা।

সামনে তাহার খাদ্য ঝোলে যার যে রকম রুচি-
মন্ডা মিঠাই চপ্ কাট লেট্খাজা কিংবা লুচি।
মন বলে তায় “খাব খাব” মুখ চলে যায় তায় খেতে,
মুখের সঙ্গে খাবার ছোটে পাল্লা দিয়ে মেতে।
এমনি করে লোভের টানে খাবার পানে চেয়ে,
উৎসাহেতে হুঁস্ রবে না চলবে কেবল ধেয়ে।
হেসে খেলে দু’দশ যোজন চলবে বিনা ক্লেশে,
খাবার গন্ধে পাগল হ’য়ে জিভের জলে ভেসে।
সবাই বলে সমস্বরে ছেলে জোয়ান বুড়ো,
অতুল কীর্তি রাখল ভবে চন্ডীদাসের খুড়ো।

( সুকুমার রায়ের খুড়োর কলের ছবিটা ব্যবহার করতে হবে)

এবার সেই অতুল কীর্তি রাখবেন আমাদের বঙ্গ বিজেপির সভাপতি এবং রাজ্যের বিরোধী দলনেতা। এরমধ্যে খান ৩০ বার তেনারা দিল্লি গেছেন এসেছেন, বৈঠক করেছেন, ফিস্ফিস গুজগুজ, কিন্তু বঙ্গ বিজেপির সভাপতি যাও বা বছর খানেক পরে পাওয়া গেল, বঙ্গ বিজেপির কমিটি আর তৈরি হচ্ছে না, খুড়োর কলের মত এক গাজর ঝোলানো মেশিনে তাঁরা হাঁটছেন তো হাঁটছেন, পথচলা আর শেষ হয়না, কমিটিও তৈরি হয় না। বহুদিন পরে যাও বা তালাচাবি খুলে দিলীপ ঘোষকে দফতরে বসতে দেওয়া হল, বসেই তিনি অতীতের বিজেপির স্বর্ণযুগ যে তিনিই এনেছিলেন, তাঁরই নেতৃত্বে আনা হয়েছিল, সেই কথা মনে করিয়ে দিয়েছেন। শোনা গেল শান্তি কুঞ্জের খোকাবাবু ফোন করেছিলেন ইনটেলেকচুয়াল সভাপতিকে, তালা খুললেন, এবার সামলান। সব মিলিয়ে এক দুরাবস্থা যার আকার দেখলেই বোঝা যায়। সেটাই আমাদের বিষয় আজকে, বঙ্গ বিজেপির কমিটি, এক খুড়োর কল, এবং সোনার বাংলা।

এমনিতে বিজেপির জাতীয় সভাপতির মেয়াদ শেষ হয়েছে সেই কবেই, তাও বছরখানেক হতে চললো, সে জায়গাতে এত বড় দলের কাউকে আজ পর্যন্ত বেছে ওঠা গেল না। কেন? কারণ একজন ততখানী শিরদাঁড়াহীন বা তলতলে শিরদাঁড়ার কাউকে পাওয়াই যাচ্ছে না, যিনি মোদি শাহের চোখের দিকে না তাকিয়েই প্রতিটা নির্দেশ পালন করবেন। এরাজ্যে সে সমস্যা ছিল না, কিন্তু সমস্যা ছিল এই শিবির বনাম ওই শিবিরের, দিলীপ বনাম শুভেন্দু বনাম সুকান্ত শিবিরের নানান টানাপোড়েনে ঠিক করাই যাচ্ছিল না সভাপতির নাম, শেষপর্যন্ত একজনকে যাও বা পাওয়া গেল, এখন তিনি নিজেই শিবির হয়ে গেছেন, তিনি ওল্ড গার্ডদের ফেরাতে চান, তাদের কেউ কেউ মাঠের বাইরে সাইড লাইনে এতদিন বসেই আছেন, এবারে সেই কমিটিতে নিজের লোক না থাকলে চলবে কী করে? কাজেই লাগাতার কাজিয়া চলছে, সব দেখে শুনে মনে হয় বঙ্গ বিজেপির কমিটি ২০২৬ এর মে মাসের আগে ঠিক হবে না। কাজেই দলের একেক ঘোড়া একেক দিকেই ছুটছে। ধরুন ইস্যু এস আই আর, একদলের বক্তব্য আমরা ভুয়ো ভোটার মৃত ভোটারদের তালিকা থেকে বাদ দেবো। অন্য দলের বক্তব্য, সব কটা ঘুসপেটিয়াকে, অনুপ্রবেশকারীকে দেশ থেকে বিদেয় করার জন্যই এস আই আর আনা হয়েছে। আরেকদল বলছে একজন মতুয়ারও নাম যেন কাটা না যায়। নে এবার ঠ্যালা সামলা। আসলে একজন মাথা তো নয়, অনেকগুলো মাথা থাকলে এমন হয়, সেই কবেই তো আমরা শুনেছি অধিক সন্ন্যাসীতে গাজন নষ্ট, তাই হচ্ছে। এবং এরই মধ্যে এসে গেল নতুন ইস্যু, এমনিতেই বিজেপির বাঙালি হওয়া নিয়ে এক ঠাট্টা তো আছেই, একজন বলেছিল, সে বিজেপিকে গ্রাফিকস এ তৈরি করতে হবে যে ১০০% বাঙালি। এবার অসমে রবি ঠাকুরের গান গাইলে জেলে পোরার ধমকি দেওয়া হল, তো একদা ক্ষুর পকেটে নিয়ে ঘোরা সদ্য বিজেপির তরুণ তুর্কি বললো ঠিকই তো, রবি ঠাকুরের লেখা তো কী? বাংলাদেশের জাতীয় সঙ্গীত তো। কাজেই গাইলে জেলে পুরে দেবে, ঠিক করবে। উনি জেল পুলিশ হাজত বিলক্কখণ জানেন, রবি ঠাকুর ওনার সিলেবাসে ছিল না। ওদিকে সাড়ে তিইইইইন খানা শক্তি চাটুজ্যে পড়া দলের রাজ্য সভাপতি বুঝেই পাচ্ছেন না কেমন করে সামাল দেবো, শক্তি আর রবীন্দ্রনাথে বদহজম হবার দশা। জানানো হয়েছে ওরা বরং বন্দেমাতরম নিয়েই রাস্তায় নামবেন আর সোনার বাংলা নিয়ে আপাতত কেউ মুখ খুলবেন না। আমরা আমাদের দর্শকদের জিজ্ঞেষ করেছিলাম যে বিজেপির বছর দুই লেগে গেল রাজ্য সভাপতি নির্বাচন করতে, যাওবা হল সেই সভাপতি এখনও একটা পুরোদস্তুর রাজ্য কমিটি, জেলার দায়িত্ব বিলিবন্টন করে উঠতে পারছেন না, এই শক্তি নিয়ে ২০২৬ মে মাসে বিজেপি কীভাবে লড়বে তৃণমূলের সঙ্গে? শুনুন মানুষজন ঠিক কী বলেছেন?

আরও পড়ুন: Aajke | মমতার হাতে ব্রহ্মাস্ত্র, এস আই আর

সত্যিই ভাবতেই অবাক লাগে যে মাত্র ক বছর আগে পাবলিক পার্সেপশনে, অন্তত মানুষের ধারণায় বিজেপি দল তৃণমূলকে হারিয়ে রাজ্যে সরকার তৈরি করার অবস্থায় ছিল, হ্যাঁ অনেক মানুষ এটা মনে করেছিল, কিন্তু আজ সেই দলের অবস্থা দেখুন, কেবল মাত্র বামেদের ভোট এখনও তাদের ঝোলাতেই পড়ছে তাই তারা কোনওভাবে ৩৬/৩৮% ভোটের ধারেকাছে থাকছেন, বামেদের ভোটের সামান্য অংশও যদি আবার বামেদের কাছে ফিরে যায়, তাহলে বিজেপি আবার তাদের সেই পুরনো ১২/১৪% ভোট শতাংশে ফিরে যাবে, এক কি দুজন সাংসদ, বড় জোর ৫/৭ জন এম এল এ নিয়ে চলবে তাদের সংসার, এটাই বিজেপির ভবিতব্য, হ্যাঁ খুড়োর কল দেখে এটা মনে হচ্ছে।

Read More

Latest News