মেদিনীপুর: রামনবমীকে (Rama Navami) ঘিরে রাজ্যজুড়ে রীতিমতো উদ্বেগে প্রশাসন থেকে রাজনৈতিক মহল। তার মাঝেই নজির গড়ে সম্প্রীতির নিদর্শন মেদিনীপুর (Midnapore) শহরে। মেদিনীপুরের পুরনো বড় বজরং ক্লাবের (Bajrang Dal) পক্ষ থেকে রামনবমীর শোভাযাত্রা বের হয়। আর পাশেই থাকা সাওয়া দিল মসজিদে রমজানের ইফতার সামগ্রী দিয়ে। আখড়াতে থাকা নেতৃত্বদের মিষ্টিমুখ করাল মসজিদ কমিটিও। দুই পক্ষকেই একে অপরের কোলাকুলির মাধ্যমে সম্প্রীতির বার্তা দেওয়া হল রাজ্যজুড়ে।
মেদিনীপুরের খাপরেল বাজার এলাকায় রয়েছে জেলার সবথেকে বড় বজরং ক্লাব। ওই ক্লাবের পক্ষ থেকে মঙ্গলবার বিকেলে রামনবমীর শোভাযাত্রার আয়োজন করা হয়েছিল। রাজ্যজুড়ে তোলপাড় করা পরিস্থিতির মাঝে এই আয়োজন নিয়ে উদ্বেগে ছিল পুলিশ প্রশাসন। তবে সমস্ত চিন্তাকে কমিয়ে আয়োজকদের পক্ষ থেকে নেওয়া হয়েছিল অভিনব উদ্যোগ। ক্লাবের পক্ষ থেকে শোভাযাত্রা বের করার আগে গতকাল বিকেলে একটি অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। যেখানে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল পাশেই থাকা সাওয়া দিল মসজিদ কমিটিকে। ক্লাবের অনুষ্ঠান শুরুর আগেই মসজিদ কমিটির সদস্যকে ফুল দিয়ে সংবর্ধনা ও সম্মান জানানো হয়। সোনা খান নামে ওই সদস্য ক্লাবের উদ্যোক্তাদের মিষ্টি ও লাড্ডু উপহার দিয়ে গোলাপের তোড়া তুলে দেন সম্মান জানাতে। এরপর শোভাযাত্রা বের করার আগে ক্লাবের পক্ষ থেকে বিভিন্ন ফল ও মিষ্টি খাবার সামগ্রী নিয়ে যাওয়া হয় মসজিদে। প্রায় ইফতারির পূর্ব মুহূর্তে মঙ্গলবার সন্ধ্যা নাগাদ সেই সমস্ত সামগ্রী তুলে দেওয়া হয় মসজিদে আগত রোজদারদের। পাল্টা কোলাকুলি করে ধন্যবাদ জানান রোজদারগণ।
আরও পড়ুন: Civic Volunteer। সিভিক ভলান্টিয়ারদের কনস্টেবল পদে নিয়োগ
এদিন সোনা খান বলেন, আমরা এই এলাকার বাসিন্দ। প্রতিদিনই একে অপরের মুখ দেখে কাজে যেতে হয়। সকলেই মিলেমিশে থাকি। এই উৎসবেও একে অপরের কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে থাকি। আহ্বান করব সবাই এমনই চলুক। বজরং ক্লাবের সদস্য বিশ্বজিৎ গোপ বলেন, আমরা হিন্দু বা মুসলমান কেউই নয়, সবার আগে আমরা মানুষ।
উদ্যোগে শামিল হয়েছিলেন পুলিশকর্তা প্রশাসনের পক্ষ থেকেও অধিকারীকরা। পুরসভার চেয়ারম্যান সৌমেন খান বলেন, যা হল তা একটা চরম সম্প্রীতির নিদর্শন। এটাই আমাদের মেদিনীপুর। প্রার্থনা করব সবাই এই ভাবেই চলুক।