কলকাতা: তৃণমূল নেতা কুণাল ঘোষের (Kunal Ghosh) পর এবার আদালতের এক্তিয়ার নিয়ে প্রশ্ন তুললেন রাজ্য বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় (Biman Banerjee)। শুক্রবার বিধানসভা ভবনে বি আর আম্বেদকরের (B R Ambedkar) প্রতিকৃতিতে মালা দেওয়ার পর সাংবাদিকদের প্রধানের জবাবে স্পিকার বলেন, আদালত এখন সব ব্যাপারে হস্তক্ষেপ করছে, এটা ঠিক নয়। আদালতের কিছু নিজস্ব ক্ষমতা অবশই আছে। সেটা কেউ অস্বীকার করছে না। কিন্তু আদালত যদি সব ব্যাপারেই নিজেকে সুপ্রিম ভাবে, সেটা গণতন্তের পক্ষে মঙ্গলজনক নয়।
স্পিকার বলেন, এখন সংবাদপত্র খুললেই দেখা যায় কোনও না কোনও বিষয়ে আদালত হস্তক্ষেপ করছে। গণতন্তের প্রতিটি স্তম্ভকেই স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়া উচিত। বিচার ব্যবস্থা বিচারের কাজ করবে, প্রশাসন প্রশাসনের কাজ করবে। এটাই সুষ্ঠু গণতন্তের লক্ষণ। কিন্তু সম্প্রতি দেখা যাচ্ছে, আদালত সব বিষয়ে হস্তক্ষেপ করছে।
আরও পড়ুন: Tabakoshi | শহর থেকে দূরে রাজ্যের মধ্যে মেঘেদের দেশ তাবাকোশি
সম্প্রতি নিয়োগ দুর্নীতি-কাণ্ডে ধৃত তৃণমূলের বহিস্কৃত যুবনেতা কুন্তল ঘোষের একটি চিঠি নিয়ে বিতর্ক দেখা দিয়েছে। প্রেসিডেন্সি জেলে বন্দি কুন্তল সেখানকার সুপারের মাধ্যমে হেস্টিংস থানার কাছে ইডি এবং সিবিআইয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ জানান। ওই চিঠিতে বলা হয়, কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম বলার জন্য কুন্তলের উপর চাপ সৃষ্টি করছে। এমনকী এর জন্য তাঁর উপর মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন চালানো হয়েছে বলে কুন্তলের অভিযোগ।
দিন কয়েক আগে তিনি আলিপুরে সিবিআইয়ের বিশেষ আদালতের বিচারককেও এই ধরনের একটি চিঠি দেন। তবে হেস্টিংস থানাকে লেখা চিঠিতে অনেক বিস্তারিত তথ্য দেওয়া হয়েছে।ওই চিঠির বিষয়বস্তু জানতে চেয়ে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয় ইডি। বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের বিচারপতি অভিজিত গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, চিঠির অভিযোগ নিয়ে অভিষেককেও জিজ্ঞাসাবাদ করা উচিত কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থার। প্রয়োজনে কুন্তল অভিষেককে মুখোমুখি বসানো যেতে পারে বলেও জানান বিচারপতি। তার আগের দিনেই বিচারপতি গঙ্গোপাধ্যায় অভিযোগ করেন, তদন্তের গতি স্তব্ধ করার জন্য এসব চলছে। তদন্তকারী অফিসারদের হুমকি দেওয়া হচ্ছে, যাতে তাঁরা নির্ভয়ে তদন্ত করতে না পারেন। তিনি আরও বলেন, এসব অতিচালাকি বরদাস্ত করা যাবে না। বৃহস্পতিবার বিচারপতি একগুচ্ছ নির্দেশিকাও জারি করেন।
তার পরেই কুণাল ঘোষ বিচারপতিকে খোলাখুলি আক্রমণ করেন। শুক্রবার মুখ খুললেন স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। আইনি মহল মনে করছেন স্পিকারের আক্রমণের লক্ষও বিচার।