তীব্র দহনজ্বালায় নাজেহাল দশা। সকাল থেকে প্রবল রোদ (Sun Light) আর বেলা বাড়লেই রোদের তাপে (Heat Wave) শরীরে যেন জ্বালা ধরে যাচ্ছে। মরুরাজ্যের অনুভূতি কলতাকার বুকেই অনুভূত হচ্ছে। এই হাঁসফাঁস দশা মন বসছে না কাজেও। গরমের ক্লান্তি কাটাতে শহরের কোলাহল থেকে দূরে একটু হিমেল হাওয়ায় ভেসে বেড়ানো মেঘেদের দেশে যেতে চান। ভিন রাজ্য নয়, একেবারেই মিরিকের লাগোয়া ছোট্ট অচেনা পাহাড়ি গ্রাম তাবাকোশি (Tabakoshi)। জোড়পোখরি, লেপচাজগত, সিমনা ভিউ পয়েন্ট, পশুপতির মার্কেট, গোপালধারা চা বাগান, মিরিক লেক, মিরিক মনেস্ট্রি এবং আরও নানা জায়গা ঘুরে নিতে পারেন তাবাকোশিতে দু’দিন থেকে।
রংবংখোলা নদীর ঢালে অপরূপ প্রাকৃতিক শোভায় ভরা পাহাড়ি গ্রাম তাবাকোশি। গোপালধারা চা বাগানের (Gopaldhara Tea Garden) একেবারে ভেতরে। মিরিক (Mirik) শহর থেকে মাত্র ৫ কিমি। উচ্চতা প্রায় ৩,০০০ ফুট। শীত খুব একটা বেশি না,আবার গ্রীষ্মে মনোরম। পাখি প্রেমীদের জন্যে স্বর্গ এই তাবাকোশি গ্রাম। এর সঙ্গে বাড়তি পাওনা ওই নিরিবিলি পাহাড়ি গ্রামের অজস্র ফুলের বাহার। সেই সঙ্গে নাম না জানা নানা পাখির মেলা। সহজ, সরল আর আন্তরিকতার ভরা এই ছোট পাহাড়ি গ্রামের মানুষেরা। বর্ষাকালে এখানকার ছোট্ট নদীটির জল কিছুটা ঘোলা হয়ে যায়। একেবারে যেন তামার মতো রঙ। আর সেই তামার রঙের নদী থেকে গ্রামের নাম তাবাকোশি। নেপালিতে তামা অর্থে তাঁবা আর কোশি অর্থে নদী। দুয়ে মিলে তাবাকোশি।
মূলত প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের টানেই বার বার পর্যটকরা ফিরে আসেন এই পাহাড়ি গ্রামে। তাবাকোশি নদীর উপর একটি ছোট্ট ব্রিজ রয়েছে। দিনের শেষে সূর্য যখন অস্ত যায়, ঝুপ করে আঁধার নামে পাহাড়ের বুকে তখন এই ব্রিজের কাছাকাছি জায়গাগুলো দেখে মনে হয় এক অন্য প্রকৃতি মাঝে মাঝে কানে আসবে ঝিঝি পোকার ডাক। তাবাকোশিতে একটি বিষ্ণু মন্দির রয়েছে পাহাড়ের কোলে। এটা দেখে আসতে পারেন। পাহাড়ের কোলে সবুজে মোড়া তাবাকোশি পার্কটাও খুব ভালো লাগবে।
লামলামে ঝর্ণার ভিউ পয়েন্টে যেতে পারেন। রাংব্যাং নদীর তীরে বিষ্ণু ও শিবমন্দির দর্শন সেরে ওখান থেকে নদীর ওপরে আয়রণ ব্রিজের অসাধারণ প্রাকৃতিক দৃশ্য মন ভরে উপভোগ করুন। প্রকৃতি নিজের সব রঙ ঢেলে দিয়েছে রংবংখোলা নদীর (Rangbangkhola River) ধারে। বিস্তৃত সারি সারি সবুজ চা বাগান। দেখতে পাবেন পিঠে টুকরি নিয়ে চা পাতা তুলছে মহিলারা। ট্রেকিংয়ের ইচ্ছা থাকলে ভারত নেপাল সীমান্তের গ্রাম সীমানা ভিউ পয়েন্ট পর্যন্ত ঘুরে আসতে পারেন। এখানে রিভার সাইড ক্যাম্পিংয়েরও ব্যবস্থা রয়েছে।
কী ভাবে যাবেন
কলকাতা থেকে নিউ জলপাইগুড়ি(এনজেপি) অনেকভাবেই আসা যায়। দার্জিলিং মেল, পদাতিক এক্সপ্রেস, কাঞ্চনজঙ্ঘা, কাঞ্চনকন্যা, উত্তরবঙ্গ এক্সপ্রেস, তিস্তা তোর্সা এই সব ট্রেনে করে নিউ জলপাইগুড়িতে নামবেন।কলকাতা থেকে ট্রেনে এসে এনজেপি’তে নেমে সরাসরি গাড়ি বুক করে তোবাকোশি। বিমানে এলে বাগডোগরা এয়ারপোর্ট-এ নেমে তাবাকোশি (Tabakoshi) কিংবা মিরিক বাজার পর্যন্ত শেয়ারে বা পুরো গাড়ি বুক করে যেতে পারেন। এছাড়া কলকাতা থেকে বাসেও আসতে পারেন। সেক্ষেত্রে শিলিগুড়িতে নেমে তেনজিং নোরগে থেকে শেয়ার গাড়িতে উঠে মিরিক বাজারে নামুন।