বাঁকুড়া: সভা সমিতিতে বিজেপি নেতাদের কুকথার বন্যা অব্যাহত রয়েছে। পঞ্চায়েত ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই নেতাদের কুকথা বাড়ছে। বুধবার বাঁকুড়ার একাধিক জায়গায় জনসভায় বিজেপির সাংসদ, বিধায়ক, নেতাদের বেফাঁস মন্তব্যের প্রতিযোগিতায় নামেন। সোনামুখীতে এক সভায় ওন্দার বিধায়ক অমরনাথ শাখা দিদির দূতদের ঝাঁটাপেটা করার নিদান দেন। জেলার বাঁশি গ্রামে অঞল সম্মেলনের প্রকাশ্য সভায় স্থানীয় বিজেপি নেতা বিকাশ ঘোষ বলেন, তৃণমূলের গুন্ডা বাহিনী আক্রমণ করতে এলে হাত-পা ভেঙে দেবেন। সোজা চোখ উপড়ে নেবেন। মেরে হাসপাতালে ভর্তি করে দেবেন। ওই সভাতেই বাঁকুড়ার বিধায়ক নীলাদ্রি শেখর দানার মন্তব্য, পঞ্চায়েত ভোটে কেউ বোমা মারলে আপনারা নাড়ু মারবেন। আবার সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায় মা-বোনেদের খুন্তি, সাঁড়াশি, বঁটি, ঝাঁটা হাতে প্রতিরোধ গড়ে তোলার ডাক দেন।
গত বেশ কয়কদিন ধরে বিজেপির নেতা, বিধায়করা নানা বিতর্কিত মন্তব্য করে চলেছেন। বুধবারও তার ব্যতিক্রম ঘটেনি। সোনামুখীতে দলীয় সভায় ওন্দার বিধায়ক বলেন, এখন দরজায় দরজায় দিদির দূতেরা আসছে। আপনারা ঝাঁটা নিয়ে দাঁড়িয়ে থাকুন। এলেই ঝাঁটা পেটা করবেন। এই মন্তব্যের কড়া সমালোচনা করে তৃণমূল (TMC) জানিয়েছে, বিজেপি অশান্তি চায় বাংলায়।
আরও পড়ুন: Assembly Elections 2023: তিন রাজ্যের নির্বাচনের দিন ঘোষণা করল কমিশন
পঞ্চায়েত নির্বাচনের (Panchayat Election) আগেই শুরু হয়েছে ‘দিদির সুরক্ষাকবচ’ (Didir suraksha kavach) কর্মসূচি। জনসংযোগ বাড়াতে জেলায় জেলায় পৌঁছে যাচ্ছেন ‘দিদির দূতেরা’। মঙ্গলবার বিকালে বাঁকুড়ার সোনামুখী (Sonamukhi) ব্লকের কোচডিহি এলাকায় এক সভায় ভাষণ দেন বিজেপি (BJP) বিধায়ক অমরনাথা শাখা। তিনি বলেন, ১১ বছর বরবাদ করে দেওয়ার পর এখন সবদিক থেকে বাঁচার জন্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) আবিষ্কার করেছেন দরজায় ‘দিদির দূত’। আমরা বলছি, দরজায় মমতার ‘ভূত’ (Bhoot)। এই ভূতরা কোনও না কোনও দুর্নীতিতে জড়িয়ে রয়েছে। তারা কোনও মা কে বলছে, আইসিডিএস (ICDS)-এ চাকরি করে দেব। আবার কোনও বেকার যুবককে বলছে, স্কুলে বা সিভিক কর্মীর চাকরি পাইয়ে দেব। এইভাবে প্রতিশ্রুতি দিয়ে কিছু না কিছু নিয়েছে দিদির এই দূতেরা। তাই এই ভূতরা গেলে আপনারা ঝাঁটাপেটা করবেন।
এদিনের সভায় বিজেপি নেতা মমতা বন্দোপাধ্যায় (Mamata Banerjee) এবং অভিষেক বন্দোপাধ্যায়কে (Avishek Banerjee) আক্রমণ করেন। বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ভিক্ষা ছড়িয়ে দিয়ে আমাদের পেটে বোমা মারছেন। এই দুজনকে বাংলা-ছাড়া করার শপথ নিতে হবে আমাদের।
বিজেপি বিধায়কের এই বেনজির আক্রমণকে একহাত নিয়েছে তৃণমূলও (TMC)। স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য, বিজেপি নেতারা ভয় পেয়ে এমন সব কথা বলছেন। যেভাবে গ্যাস ও পেট্রোপণ্যের দাম বেড়েছে তাতে মানুষ বিজেপিকে ঝাঁটাপেটা করার জন্য মুখিয়ে আছে। আমরা চাইলে অমরনাথ শাখাদের বাঁকুড়া-ছাড়া করতে বেশি সময় লাগবে না। কিন্তু তৃণমূল শান্তি চায়। এর আগেও বিভিন্ন সময়ে বেফাঁস কথা বলে বিতর্কে জড়িয়েছেন বিজেপির এই বিধায়ক।