skip to content
Friday, June 28, 2024

skip to content
Homeচতুর্থ স্তম্ভচতুর্থ স্তম্ভ : বিজেপির জন্য দেশের মাথা লজ্জায় হেঁট, এ দায় দেশ...

চতুর্থ স্তম্ভ : বিজেপির জন্য দেশের মাথা লজ্জায় হেঁট, এ দায় দেশ কেন নেবে?

Follow Us :

মাত্র কদিন আগেই দেশের প্রধান সেবক, নরেন্দ্রভাই দামোদর দাস মোদি, তেনার সরকারের ৮ বছর পূর্তি অনুষ্ঠানে ভাষণ দিচ্ছিলেন৷ বললেন অনেক কিছু করেছি৷ তবে এমন কিছু করিনি, যাতে দেশের মানুষের মাথা লজ্জায় হেঁট হয়ে যায়৷ বক্তব্য খুব পরিষ্কার, আগে সরকারে থাকা দল, দলের নেতারা দেশের মাথা হেঁট করিয়েছেন, আমি করিনি। বাস্তব যে ঠিক তার উলটো, প্রধানমন্ত্রী হওয়া ইস্তক, তেনার অবিমৃষ্যকারিতা, অশিক্ষিত সিদ্ধান্তের ফলে পদে পদে দেশের মাথা হেঁট হয়েছে, ওনার দল বা আরএসএসের সাম্প্রদায়িক রাজনীতির জন্য আমাদের মাথা হেঁট হয়েছে, আমরা জানি, আলোচনাও করেছি। তো আরও একবার সেই কথাই উঠে এল৷ আবার একবার লজ্জায় দেশ মাথা নিচু করল৷ এবার সরকারের জন্য নয়৷ ওনার দলের জন্য৷ বিজেপি, আরএসএসের সাম্প্রদায়িক আচরণ আর বক্তব্যের জন্য৷ দেশ ক্ষমা চাইছে, দেশ বিব্রত হচ্ছে।

আজ আলোচনার বিষয় সেটাই। গত ২৬ মে এক টিভি বিতর্কে, বিজেপির জাতীয় মুখপাত্র নূপুর শর্মা, ইসলাম ধর্মের নবী মহম্মদ, তাঁর বিয়ে ইত্যাদি নিয়ে কিছু খারাপ উক্তি করেন৷ শালীনতার বাইরে গিয়ে সেসব কথা উনি বলেন, এটা নতুন কিছু নয়৷ বিজেপির বিভিন্ন নেতারা এধরণের কথা বলে থাকেন৷ দেশের বিজেপির পিছনে দাঁড়িয়ে থাকা উগ্র হিন্দুত্ববাদীরা রোজ এই ধরনের কথা বলে চলেছেন৷ তাদের মুখে বিষ ছড়ানো নতুন কিছু নয়৷ এবার নবী মহম্মদ নিয়ে বললেন, আর তাঁকে টুইটে সমর্থন করলেন দিল্লিতে বিজেপির মিডিয়া ইনচার্জ নবীন কুমার জিন্দল৷ তিনিও যা বললেন, সেটাও নতুন নয়৷ এও আমরা শুনেছি বহু আগে। কিন্তু এসব কথা বলার পরে, দেশের মুসলমান মানুষজন, তাদের ধর্মীয় নেতারা, দেশের সেকুলার রাজনৈতিক দল আর তার নেতারা তীব্র নিন্দা করেন, সে নিন্দাও স্বাভাবিক৷ যতটা স্বাভাবিক সেসব বিরোধিতার পরে বিজেপির চুপ করে বসে মজা দেখা৷

আগেও বহুবার এমনটাই হয়েছে। ধর্ম সম্মেলনের নাম করে দেশের সংখ্যালঘু মানুষজনদের দেশ ছাড়তে বলা হয়েছে৷ জানে মেরে দেবার ধমকি দেওয়া হয়েছে৷ বিভিন্ন মহলের নিন্দা আর বিরোধিতার পর সরকার বা বিজেপি, চুপ করে বসে তামাশা দেখেছে। কিন্তু এবার ছবিটা আলাদা৷ ২৬ মে থেকে গত রবিবার পর্যন্ত এই হিরণ্ময় নীরবতা বরকরার ছিল, মোদিজী, শাহ, বিদেশমন্ত্রী জয়শংকর, বিদেশমন্ত্রক, বিজেপি দলের তরফে একটা কথাও বলা হয় নি, বলা হবেই বা কেন? এ তো নতুন কিছু নয়। কিন্তু গত শনিবার ৩ জুন কাতারে বেশ কিছু ডিপার্টমেন্টাল শপ থেকে, ভারতীয় প্রোডাক্ট তুলে নেওয়া হল৷ ৪ তারিখে কাতারের সরকার ভারতবর্ষের রাষ্ট্রদূত কে ডেকে এই ঘটনার নিন্দা আর প্রতিবাদ করলেন, ভারতবর্ষের প্রতিনিধির হাতে লিখিত প্রতিবাদপত্র দেওয়া হল, কাতারের ভারতবর্ষের রাষ্ট্রদূতের তরফেও, তাঁর দপ্তর, এক টুইটে এই ডেকে পাঠানোর, এবং নিন্দার কথা স্বীকার করল। কাতারে আমাদের দেশের রাষ্ট্রদূত জানালেন, প্রফেট মহম্মদ সম্পর্কে এইসব উক্তি বা ধারণা ভারতের সরকারের নয়, কিছু প্রান্তিক মানুষজনের। কি অদ্ভুত ভাবুন একবার, সরকারি দলের রাষ্ট্রীয় মুখপাত্রকে ফ্রিঞ্জ এলিমেন্ট, প্রান্তিক মানুষজন বলে দেওয়া হল, ঠেলার নাম বাবাজী কাকে বলে!

এরপর খবর এল কুয়েত থেকে, সেখানকার সরকারও ভারতবর্ষের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে, তাদের তীব্র নিন্দা আর প্রতিবাদের কথা জানালেন, আবার হাতে সেই প্রতিবাদপত্র ধরানো হল৷ এরপরের দেশ ইরান, সেখান থেকেও একই প্রতিক্রিয়া, কদিন আগেই ইরানের বিদেশমন্ত্রী এই প্রথমবার ভারতে এসেছিলেন৷ সেই দফতর থেকেই তেহরানে ভারতীয় রাষ্ট্রদূতকে ডেকে, সরকারের তীব্র অসন্তোষের কথা জানানো হল। সৌদি আরব থেকেও একই প্রতিক্রিয়া এসেছে আর এসবের মধ্যেই ধামাকা, বিজেপি দল সংবাদ মাধ্যমকে জানিয়ে দিল, নূপুর শর্মা এবং নভীন জিন্দলকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে৷ ধারা টারা জানিয়ে সেই সাসপেনশনের চিঠি পৌঁছে গেল সংবাদ মাধ্যমের দফতরে। কেবল তাই নয়, দলের তরফে এক বিবৃতি জারি করে দল জানাল, এই ধরনের কথাবার্তায় দলের সায় নেই৷ তারা অন্য কোনও ধর্মকে অসন্মান করে না৷ করার প্রশ্নই নেই।

১৮০ ডিগ্রি টার্ন, বিজেপি ভুলেই গেল, তারা দেশের ২১ কোটি মুসলমানকে দেশের নাগরিক, ভারতীয় হিসেবে মনেই করে না৷ কারণ তাদের পূণ্যভূমি কাবা, দেশের বাইরে, আরএসএসের প্রোগ্রাম খুলে দেখুন, কদিন আগেও মন্দির মসজিদের বন্যা বয়েছে, উত্তর প্রদেশ বিধানসভা নির্বাচনের আগে, সেখানে শ্মশান আর কব্রস্থান নিয়ে বিষ ছড়ানো হয়েছে, যে দলে এইমূহুর্তে লোকসভায় একজনও মুসলিম সাংসদ নেই, সেই দল প্রেস বিবৃতি দিয়ে জানাচ্ছে, তারা ধর্মনিরপেক্ষ, তারা অসাম্প্রদায়িক, তারা সব ধর্মকে সন্মান করে। কেন? কোথায় ঘা পড়ল? মুসলমান দুনিয়া থেকে বিরাট প্রতিবাদ এসেছে বলে?আসুন দেখা যাক মুসলমান দুনিয়া জনসংখ্যার দিক দিয়ে কোথায় দাঁড়িয়ে? সবচেয়ে বেশি মুসলমান ইন্দোনেশিয়ায় ২৩ কোটির কিছু বেশি৷ পাকিস্তান ২২ কোটি, ভারতবর্ষ ২১ কোটি৷ বাংলাদেশ ১৫.৫ কোটি, নাইজিরিয়া ১০ কোটি, ইজিপ্ট ১০ কোটি, ইরাক ৮ কোটি, এরা হল বড় বড় মুসলিম দেশ, অন্তত জনসংখ্যার দিক থেকে। তো এদের মধ্যে কারা প্রতিবাদ করল? কারা রাষ্ট্রদূতকে ডেকে চিঠি ধরালো? পাকিস্তানের কথা বাদই দিলাম, বাকি একটা দেশও তাদের প্রতিক্রিয়া দেয়নি, ইন্দোনেশিয়া, ইজিপ্ট, বাংলাদেশ বা নাইজিরিয়া কেউই দে নি, এবং যারা দিয়েছে তাদের সব্বাইকে মেলালে বিশ্বে মুসলমান জনসংখ্যার ২% ও হবে না, তাহলে? কারণটা বোঝার চেষ্টা করা যাক।

ভারতবর্ষের এক বিরাট সংখ্যক মানুষ কাজ করেন এই দেশগুলোতে, কলে কারখানায়, বিভিন্ন পেশাতে, এবং এক বিরাট টাকা পাঠান দেশে, ফরেন মনি রেমিট্যান্সের ২৫% আসে এইখান থেকে, কেরালা, গোয়া, মহারাষ্ট্র, তামিলনাডুর বিশাল সংখ্যক মানুষ দেশে টাকা পাঠান, যাঁরা এই অঞ্চলে কাজ করেন। দ্বিতীয় হল এই দেশগুলোর সঙ্গে আমাদের ব্যবসা, সেও এক বিরাট পরিমাণের, সে ব্যবসা হাত থেকে গেলে বিরাট ক্ষতি, সেখানে দেশের অনেক রাঘব বোয়ালেরই টাকা খাটে। এবং তৃতীয় গুরুত্বপূর্ণ কারণ হল, পাকিস্তানের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ককে মাথায় রেখেই বাজপেয়ির আমল থেকেই, মধ্য প্রাচ্যের এই সব ধনী মুসলমান দেশগুলোর সঙ্গে, সম্পর্ক ভালো করার চেষ্টা চালানো হয়, সেই চেষ্টার ফল পাই আমরা রিয়াধ সম্মেলনে, মনমোহন সিংয়ের সঙ্গে চুক্তি, ফলে সৌদি আরব থেকে শুরু করে কাতার, বাহরিন, কুয়েতের সঙ্গে সম্পর্ক ভালো হয়, কিছু দিন আগেই উগ্রপন্থী ২৬/১১ র মাস্টার মাইন্ড আবু জিন্দলকে ধরে নিয়ে আসা সম্ভব হয়েছে, এই কূটনৈতিক সমঝোতা নষ্ট হলে বিরাট ক্ষতি হবে৷ অতএব ঠেলার নাম বাবাজী৷ দলের রাষ্ট্রীয় মুখপাত্র হয়ে গেল প্রান্তিক মানুষ, ফ্রিঞ্জ এলিমেন্ট।

কিন্তু দলের ভেতরে? সোশ্যাল মিডিয়া খুলে দেখুন, সত্যিটা ওখানে আছে৷ অভিনন্দনের বন্যায় ভেসে যাচ্ছেন নূপুর শর্মা, নবীন জিন্দল৷ নূপুর তুম আগে বড়ো হাম তুমহারে সাথ হ্যায়, জয় শ্রী রাম। মনে করিয়ে দিই, কদিন আগে বিজেপির সাংসদ প্রজ্ঞা ঠাকুর, গান্ধী হত্যাকারী খুনি গডসেকে দেশপ্রেমিক বলেছিলেন, প্রধানমন্ত্রী কেবল দুঃখ পেয়েছেন, তার বেশি কিছু নয়৷ এবারেও নূপুর শর্মা বা নবীন জিন্দলের বক্তব্য নিয়ে হইচই আরও বাড়লে তিনি বড়জোর আবার দুঃখ পেতেন, কিন্তু ধাক্কা টা দেশের ২১ কোটি মুসলমানের নয়, ধাক্কাটা এল অত্যন্ত ধনী, পেট্র ডলারের মালিক মুসলমান দেশগুলোর কাছ থেকে, অমনি, নি জার্ক রি অ্যাকশন, ধড়াম করে ঘুম ভাঙল। আগেই বলেছি, এক বাঘে পিঠে সওয়ার এই বিজেপি নেতারা, হয় বাঘের পিঠেই বসে থাকতে হবে, নাহলে বাঘে খাবে, দেখা যাক, কোনটা হয়? কিন্তু শেষ করার আগে একটা তথ্য দিই, এই সেই রত্ন নবীন কুমার জিন্দল, যিনি বিনোদ দুয়া দেশের মর্যাদা মাটিতে মিশিয়ে দিচ্ছে, বিনোদ দুয়া দেশ বিরোধী ইত্যাদি বলে সাংবাদিক বিনোদ দুয়ার নামে, এফ আই আর করেছিল, দু বছর ধরে মামলা কড়েছিলেন বিনোদ দুয়া, এবং শেষমেষ অভিযোগ থেকে মুক্তি পেয়েছিলেন, সেই নবীন জিন্দল এর উক্তির ফলে আজ সারা দেশের মানুষের মাথা হেঁট হচ্ছে, এই লোকটাকে জেলে পোরা হচ্ছে না কেন? এই লোকটাকে দেখুন, এরাই হল বিশ্বাসঘাতক সাভারকার, গোলওয়াল্করের বংশধর, এরাই দেশদ্রোহী, এরাই বিশ্বাসঘাতক।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
CV Ananda Bose | Kunal Ghosh | রাজ্যপালের 'অজানা গল্প'! দিল্লির হোটেলের ভিডিও ফাঁস করবেন কুণাল?
00:00
Video thumbnail
Kunal Ghosh | কী হয়েছিল দিল্লির হোটেলে? শপথ না হলে ভিডিও ফাঁস! রাজ্যপালকে চ্যালেঞ্জ কুণালের
00:00
Video thumbnail
Kaustuv Ray | 'অপরাধের অপবাদ ঘুচল'
00:00
Video thumbnail
Parliament News | সংসদে আজ কী হল? মুলতুবি কেন হলো? দেখুন ভিডিও
00:00
Video thumbnail
Bomb Panic | বোমাতঙ্ক, দক্ষিণেশ্বর স্টেশনে দাঁড়িয়ে পড়ল জম্মু তাওয়াই এক্সপ্রেস
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | Prasant Kishore | কেন বড় মন্ত্রক চাইলেন না নীতীশ? বিস্ফোরক দাবি পিকের
00:00
Video thumbnail
Hemant Soren | Mamata Banerjee | হেমন্ত সোরেনের জামিন, কী বললেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা?
00:00
Video thumbnail
Nitish Kumar | Bihar | নীতীশ কুমারকে নিয়ে বিহার বিজেপিতে অসন্তোষ? বিরাট মন্তব্য বিজেপি নেতার
00:00
Video thumbnail
Suvendu Adhikari | রাজ্যপাল যা করছেন ঠিক করছেন, শপথ নিয়ে কী বললেন শুভেন্দু?
03:16:41
Video thumbnail
Parliament session 2024 live | Om Birla | স্লোগান দেওয়ার জায়গা নয় সংসদ! রেগে গেলেন স্পিকার
07:43:00