Friday, June 27, 2025
HomeScrollFourth Pillar | বিজেপি জমানায় ভারতবর্ষে আমিষ খাওয়া মানা?
Fourth Pillar

Fourth Pillar | বিজেপি জমানায় ভারতবর্ষে আমিষ খাওয়া মানা?

ঘোমটার আড়ালে খ্যামটা নাচে অভ্যস্ত এই আরএসএস-বিজেপি

Follow Us :

উত্তর ভারতে বিভিন্ন জায়গাতে প্রথমে গোমাংস ইত্যাদি নিয়ে বিজেপি রাস্তাতে ছিল, ফলে লখনউয়ের টুন্ডে কাবাব এখন মোষের মাংসের, বিফ তুলে দেওয়া হয়েছে। দুগ্ধহীন গোমাতারা রাস্তায় ঘুরে বেড়াচ্ছেন, তাদের খাবার জুটছে না, দেখলেই কানে গান বাজে, কেন চেয়ে আছো গো মা? মুখপানে? বজরং দল আর বিশ্ব হিন্দু পরিষদ পিটিয়ে সেসব দোকান বন্ধ করে দিয়েছিল, খুব বেশি প্রতিবাদ ওঠেনি, কারণ বেশিরভাগ মানুষ মনে করেছিলেন যে ওরা তো গোমাংস নিয়ে বিরোধিতা করছে আমরা তো গোমাংস খাই না। তো গোমাংসের বিরোধিতা এরপরে মুসলমান বিরোধিতা হয়ে দাঁড়াল, সংখ্যালঘুদের একঘরে করে দেওয়ার ব্যবস্থা হল কাউকে কাউকে জ্যান্ত জ্বালিয়ে পুড়িয়ে মেরে ফেলার ঘটনা হল, গোমাংস পাচার হচ্ছে এই অভিযোগে পিটিয়ে মারার ঘটনা এল। আমরা নিশ্চুপ, বৃহত্তর হিন্দু সমাজ নিশ্চুপ, লিবারাল ডেমোক্রাট, মানবতাবাদীদের মুখে মৃদু প্রতিবাদ দেখা গেল মাত্র। এবারে গোমাংস ছেড়ে মাংস নিয়ে পড়েছে ওই আরএসএস-বিজেপি, এবং তারপরে তারা এখন রাস্তায় আমিষ খাবারের বিরুদ্ধে। প্রকাশ্যে দোকান বন্ধ করে দেওয়ার হুমকি দিচ্ছেন বিজেপি নেতা। উত্তরপ্রদেশে সরকারি স্কুলে ছাত্রদের ডেকে স্কুল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছে, মধ্যপ্রদেশে মিড ডে মিলে ডিম বন্ধ। গোটা উত্তর ভারত জুড়ে আমিষ ভোজীদের বিরুদ্ধে এক প্রচার অভিযান চলছে, এক রাক্ষস বানানোর চেষ্টা চলছে, ওরা আমিষ খায়, ওদের আলাদা করো। এটা মহল্লায় মহল্লায় চলছে। ওদিকে মোদিজি থেমে নেই, জি টোয়েন্টিতে তেনার এই ধ্যাষ্টামো আমরা দেখেছিলাম, আমরা চিরটাকাল জানি অতিথি সৎকার, মানে অতিথি এলে তাঁর প্রয়োজনীয়তা ও পছন্দ বুঝে তার ব্যবস্থা করা, খাদ্য, পানীয়, আশ্রয় থেকে রাত্রিযাপন ইত্যাদির ব্যবস্থা করা। রাজা জনক, খেয়াল করুন, ইনি লাঙল চালাতে গিয়ে লাঙলের ফাল, মানে সীতা অংশে এক কন্যাকে পান। অর্থাৎ রাজা কৃষি অর্থনীতির অংশ ছিলেন, সম্ভবত সেই সময়ে গোবধ ইত্যাদি বন্ধ হয়েছে, কৃষি যুগে এসে গো সংরক্ষণের দিকে ঝোঁক বেড়েছিল। কিন্তু তবুও, সীতার বিয়ে হয়ে গেছে, রাম লক্ষ্মণ ভরত শত্রুঘ্ন তাঁদের বউ সীতা, উর্মীলা, মাণ্ডবী আর শ্রুতকীর্তিকে নিয়ে অযোধ্যা ফিরে যাবেন। এমন সময়ে হই হই রব, পরশুরাম আসছেন, বহুদূর থেকে সে খবর এসেছে। কথায় কথায় শাপ দিতে অভ্যস্ত এই ঋষিকে খুশি রাখতেই জনক আদেশ দিচ্ছেন একটা বেশ নধর গোবৎসের আয়োজন করো, যাতে পরশুরাম তুষ্ট হন। পরে যা ঘটেছিল তা সবার জানা, শিবধনুভঙ্গ ইত্যাদি সবাই জানেন। কিন্তু এটাই রীতি। অতিথি কী খাবেন জেনেই তার ব্যবস্থা করা।

আধুনিক সমাজে তা এড়াতেই অনেকেই সম্ভাব্য বহু ধরনের পদ এক জায়গাতেই হাজির রাখেন, যাকে বুফে বলা হয়। একধারে আমিষ, একধারে নিরামিষ, একধারে মিষ্টি কেক ইত্যাদি, অন্যধারে সালাদ, অন্যধারে স্ন্যাক্স, পানীয়, নরম গরম, হালকা, কড়া সবই থাকে, আপনাদের যা খাবার হয় খান। এই তো। ক’দিন আগেই বাইডেনের সঙ্গে নৈশভোজে মোদিজির জন্য নিরামিষ ছিল, ছিল ওয়াইন, মোদিজি হাতে নিয়েছেন, মুখে দেননি। ভারতে জি টোয়েন্টি বৈঠকে যে আয়োজন করা হয়েছিল তা অতিথিদের জন্য নয়, দেশের মধ্যে এক রাজনীতিকে চাগিয়ে দেওয়ার জন্য। পুরোটা নিরামিষ মেনু, কেন? আমাদের দেশের ৭০ শতাংশের বেশি মানুষ আমিষ খান, কিন্তু মোদিজি নিরামিষ, মোহন ভাগবত নিরামিষ, তাই? আমাদের দেশের বাটার চিকেন, আমাদের দেশের বিরিয়ানি, আমাদের দেশের ফিশ টিক্কা এখন ইউরোপের অলিতে গলিতে পাওয়া যায়, হ্যাঁ ইন্ডিয়ান রেস্তরাঁ বলতে ওনারা ওই খাবারই বোঝেন। মোদিজি কী বোঝাতে চাইছেন? উনি ধোকলা রোটলা পোটলা খান বলে দেশের প্রত্যেক মানুষকে ধোকলা রোটলা পোটলা খেতে হবে? দেশের বৈচিত্র্যে ওনাদের বিশ্বাস নেই, দেশের মানুষের খাদ্যাভাসকে ওনারা ঘৃণা করেন, সেটাই বেরিয়ে এল ওই জি টোয়েন্টি বৈঠকের মেনু কার্ড থেকে।

এমনকী, যে রাষ্ট্রপ্রধানরা এই নিরামিষই পছন্দ করেন? তাহলে চলুন এর আগের কিছু জি টোয়েন্টি আয়োজনে খাবারের মেনুগুলো দেখা যাক। আগের সামিট হয়েছিল বালিতে, ইন্দোনেশিয়াতে, খাবারের তালিকাতে ছিল বিফ টেন্ডারলয়েন স্টেক, ভেজিটেবল রাইস, স্টিমড কড উইথ অ্যাসপ্যারাগাস, প্রন ক্রাকারস, চকোলেট ম্যুস ইত্যাদি। নিরামিষও ছিল। তার আগে আর্জেন্টিনাতে ২০১৮-র মেনু কী ছিল? স্বাভাবিকভাবেই বেশিরভাগটাই মাংস ছিল, রিব আই স্টেক, প্যাটাগোনিয়ান ল্যাম্ব, চোরিপান সশেজ স্যান্ডুইচ, প্রেসিডেন্ট জানাচ্ছিলেন আর্জেন্টিনা কীভাবে বিশ্ব গোমাংসের বড় এক্সপোর্টার হয়ে উঠেছে। সেখানেও নিরামিষ খাবার দাবার ছিল। জাপানের সামিটে ছিল ডিপ ফ্রায়েড আঙ্গলার ফিস, টাজিমা বিফ, বেকড অন ব্যাম্বু চারকোল, সুইট কর্নফ্ল্যান পিনড উইথ এডিবল ফ্লাওয়ারস, সাকে ওয়াইন তো ছিলই। জাপান এই মেনু ১৫টা ভাষায় অনুবাদ করে কী দিয়ে কী কী রান্না করেছে তার বিবরণ দিয়েছিল অতিথিদের। তারও আগে চীনে বসেছিল সামিট, সেখানে ছিল সুইট অ্যান্ড সাওয়ার ফিশ উইথ টোস্টেড পাইন নাটস, বারাক ওবামা খুব খেয়েছিলেন। ছিল শ্রিম্প, ক্রাব মিট, আর বেজিং-এর ওয়াইন।

আরও পড়ুন: Fourth Pillar | চাপে পড়েছে বিজেপি, অমিত শাহ ডুবিয়েছেন

আমাদের দেশ সেখানে কোন ঐতিহ্যকে রাখল বিশ্বের দরবারে? যাঁরা এলেন তাঁরা জানেন না ফিশ টিককা, বাটার চিকেন আর মাটন বিরিয়ানি? জানেন, হোটেলের রুমে ফিরে গিয়ে হয় তো সেগুলোই অর্ডার করেছেন। বিশ্বগুরু হওয়ার কথা বলে মোদিজি আমাদের যে সার্কাস দেখালেন তাকে ধ্যাষ্টামো ছাড়া অন্য কিছু বলা যায় কি? সবসময় মাথায় রাখবেন আমরা আপাতত অমৃতকালে প্রবেশ করে গেছি, এবং এই অমৃতকালের ঢোকার রাস্তা ওয়ান ওয়ে, ঢুকে পড়েছেন মানে ঢুকে পড়েছেন, এবার আপাতত ওই অমৃতকালেই থাকতে হবে। নানান তামাশা দেখতে থাকুন, শুদ্ধ নিরামিষ খান, দেশের সংবিধান, সংবিধানের প্রস্তাবনা ভুলে যান, আপাতত স্বাধীনতার অমৃত মহোৎসব চলছে, জয় শ্রীরাম, জয় মোদিজির জয়। পেটে গামছা বেঁধে রাজার জয়গান করতে থাকুন। রেল মানে ভারতীয় রেলে নিরামিষ খাবার, কেবল নিরামিষ খাবার দেওয়া শুরু হয়েছে, আপাতত কয়েকটা ট্রেনে, সয়ে গেলে সব ট্রেনেই আলু পটহল কি সব্জি আর রুটি পাবেন। যে দু’ এক পিস ছিবড়ের মতো মুরগি পাওয়া যেত, ছুড়ে মারলে মাথা ফেটে যাবে সেদ্ধ করার পর এতটাই শক্ত ডিম দিত, এবার তাও বন্ধ হয়ে যাবে, ওই যে অমৃতকাল। বিবেকানন্দ বেঁচে থাকলে ট্রেনে চড়াই ছেড়ে দিতেন, নিরামিষ ওনার রুচত না, দক্ষিণ ভারত থেকে বেলুড়মঠের এক গুরুভাইকে চিঠিতে লিখেছিলেন, অমুকের বাড়ি থেকে চলে এসেছি, ওসব ঘাসপাতা আমার সহ্য হয় না। চলে এসেছিলেন এক বাঙালির বাড়িতে।

কিন্তু মোদিজি নিরামিষ খান, এবং আমরা তো তাঁরই নেতৃত্বে অমৃতকালের গহ্বরে ঢুকে পড়েছি, অতএব নিরামিষই ভরসা। এরকম রোজ নানান নাটক চলছে দেশের সর্বত্র। এই হিন্দুত্ববাদীদের চাপে স্কুল সার্কুলার দিতে বাধ্য হচ্ছে, হিজাব পরে আসলে ক্লাসে ঢুকতে দেওয়া হবে না, টিকি থাকলে আপত্তি নেই, চওড়া কপালে তার চেয়েও বড় তিলক কাটা থাকলে আপত্তি নেই, মাথায় পাগড়ি, কোমরে কৃপাণ থাকলেও আপত্তি নেই, নাক থেকে ব্রহ্মতালু অবধি সিঁদুর থাকলে আপত্তি নেই, হিজাব থাকলে আছে। হিজাব নহি চলেগা। অন্য রাজ্যে যেতে হবে না, কলকাতা জুড়েও এই পান পরাগ কালচার, সিনেমা হলে মাল্টিপ্লেক্সে কোথাও এগ রোল নেই, নন ভেজ মোমো নেই, এরকম নয় যে ওগুলো নেই, ওগুলো নেই কারণ আমিষ খাওয়া বারণ। কেন? কোনও উত্তর নেই। বাচাল গর্গ চাটুজ্যে বা বাংলা পক্ষেরও মুখে কুলুপ, সরকারেরও মাথাব্যথা নেই। এসব ছিল না, আমাদের রাজ্যে নয়, কোথাও ছিল না, হরিদ্বারে আমিষ ছিল না, পুরীতে ছিল, পারশে মাছের ঝাল ছিল। বৃন্দাবনে আমিষ ছিল না, কিন্তু কামাখ্যায় আমিষ ছিল। এরকমই তো ছিল, কিন্তু নিরামিষ খাবারের সঙ্গে হিন্দু হওয়ার কোনও সম্পর্ক ছিল না, উত্তর ভারতের হিন্দুরা বেশিরভাগ নিরামিষ খেতেন, পূর্ব ভারতের হিন্দুরা ঘোর আমিষ, এ নিয়ে কোনও টেনশন ছিল না।

এখন রাস্তায় মাথায় ফেট্টি বেঁধে গেরুয়া ঝান্ডা নিয়ে গুন্ডারা বের হচ্ছে, নবরাত্রির সময় আমিষ রেস্তরাঁ বন্ধ করার জন্য, শ্রাবণ মাসে তীর্থযাত্রীদের যাতায়াতের পথে মাংসের দোকান, আমিষ রেস্তরাঁ নির্দেশ দিয়ে বন্ধ করেছে উত্তরপ্রদেশ সরকার। আগে ছিল গরু, গোমাংস নিয়ে আপত্তি, এখন আমিষ নিয়ে। বৈদিক যুগে যজ্ঞ হয়েছে, ঋষি মুনিরা যজ্ঞে শয়ে শয়ে পশু আহুতি দিয়েছেন, সেই মাংস খেয়েছেন, তার বর্ণনা আছে। এমনকী রামায়ণে রাম-সীতা-লক্ষ্মণের বনবাসের সময় খাবারের বর্ণনা আছে, সুপক্ক হরিণের মাংস, সঙ্গে সোমরস। রামায়ণ বাদই দিন এই বিজেপির অটল বিহারী বাজপেয়ী চেটেপুটে মাছ এবং মাংস খেতেন, আদবানি পাক্কা নিরামিষ। মহাত্মা গান্ধী হত্যায় ফাঁসি হয়েছিল দু’জনের, দুজনেই চিৎপাবন ব্রাহ্মণ, অগ্নিশুদ্ধ ব্রাহ্মণ, নাথুরাম ভিনায়ক গডসে আর নারায়ণ আপ্তে। নাথুরাম কঠোর নিরামিশাষী, অন্যদিকে আপ্তে আমিষই পছন্দ করতেন, হুইস্কি খেতেন। এরকম কত কিছুই ছিল আমাদের ঐতিহ্য, আমাদের পরম্পরা, আজ এই হিন্দুত্ববাদী আরএসএস, বিজেপি, হিন্দু জাগরণ সমিতি, বিশ্ব হিন্দু পরিষদ সেসব বৈচিত্র্যকে কালাপাহাড়ের মতো ভেঙে চুরমার করতে চাইছে। এমনও নয় যে তাঁরা এসবে বিশ্বাস করেন, মাত্র ক’দিন আগের ব্যাপার, মদ্যপান নিষিদ্ধে এক রাজ্য গুজরাত থেকে ব্যাঙ্ককের উড়ান চালু করেছিল এক বিদেশি এয়ার লাইন্স, তো বিমানে মদ সার্ভ করা হয়েছিল। আধঘণ্টার মধ্যে বিমানওয়ালাদের রীতিমতো ঘোষণা করে জানাতে হল যে মদ শেষ, মানে প্লেনে চড়েই চোঁ চোঁ করে মদ্যপান করেছেন মদ্যপান নিষেধ রাজ্যের মহানুভবরা। হ্যাঁ, আসলে ঘোমটার আড়ালে খ্যামটা নাচে অভ্যস্ত এই আরএসএস-বিজেপি।

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Kasba Incident | TMCP | কসবা কাণ্ড নিয়ে সাংবাদিক বৈঠকে তৃণমূল, দেখুন সরাসরি
00:00
Video thumbnail
Law College Incident | সাউথ কলকাতা ল' কলেজ কাণ্ডে অভিযুক্ত কারা? দেখুন বড় খবর
00:00
Video thumbnail
Supreme Court | DA | ডিএ মামলায় সুপ্রিম কোর্টে রাজ্য, কী আবেদন?
00:00
Video thumbnail
Iran-Israel | অ্যা/টাক পাল্টা অ্যা/টাক প্রকাশ্যে এসে বি/স্ফো/রক খামেনি, ভ/য়ে জুজু নেতানিয়াহু
00:00
Video thumbnail
Iran | Israel | America | এই ৭ কারণে ইরানকে কিছু করতে পারল না আমেরিকা-ইজরায়েল
00:00
Video thumbnail
Weather Update | ঘূর্ণাবর্তের তা/ণ্ডব রবি ও সোমে? ভাসবে কোন কোন জেলা?
02:10
Video thumbnail
Kasba Incident | কসবা কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য কী বললেন?
04:11
Video thumbnail
Kasba Incident | Kunal Ghosh | কসবা কাণ্ডে কী বললেন কুণাল ঘোষ?
05:54
Video thumbnail
Kasba Incident | কসবা কাণ্ড নিয়ে তৃণমূলের সাংবাদিক বৈঠকে শশী পাঁজা, কী বললেন?
05:59
Video thumbnail
America-Iran | ইরানে আমেরিকার হা/ম/লা কতটা ক্ষ/তি? মিথ্যে বলছেন ট্রাম্প? দেখুন চাঞ্চল্যকর ভিডিও
03:51

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39