Saturday, June 21, 2025
Homeচতুর্থ স্তম্ভFourth Pillar: দেশের প্রতিটা চৌরাস্তায় জ্বলুক প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল

Fourth Pillar: দেশের প্রতিটা চৌরাস্তায় জ্বলুক প্রধানমন্ত্রীর কুশপুতুল

Follow Us :

২০১৬’র ৮ নভেম্বর, হ্যাঁ আজকের দিনেই ৬ বছর আগে রাত ৮টায়, মোদিজির ভাষায়, “দেশ কা সিতারা চমকানে কে লিয়ে এক নয়া কদম উঠায়া”, দেশের ভাগ্য ফেরানোর জন্য এক নতুন পদক্ষেপ নিলেন। ৮ তারিখেই এই কথা বলেননি। ৮ তারিখে বলেছিলেন, ডিমনিটাইজেশন করা হল, ১০০০ এবং ৫০০ টাকার নোট বাতিল করা হল। সেসব এখন কেবল মাত্র কাগজের টুকরো, কি চওড়া হাসি। মিনিট তিন কি চারের মধ্যে দেশের মানুষ টিভির সামনে, বলে কি মানুষটা? নোট বাতিল, তা আবার হয় নাকি? তখন তিনি বলছেন, কেন এই নোটবন্দি, বলছেন দেশে লুটমার চলছিল ৭০ বছর ধরে, লুটমার, কালো টাকা জমা হয়েছে কিছু মানুষের হাতে, দেশের টাকা বিদেশে চলে যাচ্ছে, সে টাকা ফিরিয়ে আনলে দেশের মানুষের, সাধারণ গরিব মানুষের বাড়ি হবে, স্কুল হবে, হাসপাতাল হবে, ওই কালো টাকার সমান্তরাল অর্থনীতি ধ্বংস হবে। চারটে কথা তিনি বার বার বলেছেন সেদিনের ১ ঘণ্টার ভাষণে – ১) ভ্রষ্টাচার, ২) কালাধন, ৩) জালি নোট, ৪) আতঙ্কবাদ, মানে দুর্নীতি, কালোটাকা, জাল টাকা আর উগ্রপন্থাকে বন্ধ করার জন্যই এই ডিমনিটাইজেশন। জাতির প্রতি এত বড় ভাষণ দিতে গিয়েও স্বাভাবসিদ্ধভাবেই মিথ্যে পরিসংখ্যান দিয়েছিলেন। বলেছিলেন যখন উনি ক্ষমতায়, তখন কোরাপশন ইনডেক্সে ভারতবর্ষ ১০০ নম্বরের আশেপাশে ছিল, আর এই দেড় দু’বছরের মধ্যে তিনি সেই ইনডেক্সকে ৭৬-এ নামিয়ে আনতে পেরেছেন। সত্যিটা কী? ২০১৪’তে কোরাপশন ইনডেক্সে ভারতবর্ষ ছিল ৮৫-তে, ২০১৬’তে ৭৯-তে নেমেছিল। সে যাই হোক, তিনি দেশবাসীকে জানিয়ে দিলেন ৫০০ আর ১০০০ নোট কাল থেকে কাগজের টুকরো। সেদিন তিনি বললেন, পরদিন থেকে বলতে শুরু করলো মিডিয়া, নোংরা, মিথ্যে, হাস্যকর প্রচার শুরু হল নোটবন্দির সমর্থনে। পরের দিন, ৯ নভেম্বর ২০১৬’র খবরের কাগজ খুলে দেখুন, জাতীয় রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে একমাত্র তৃণমূল আর সিপিআইএম এই সিদ্ধান্তের তীব্র বিরোধিতা করে, সিদ্ধান্ত বাতিল করার দাবি জানিয়েছিল। কংগ্রেস দল বলেছিল, এই ঝটতি সিদ্ধান্তের ফলে দেশের আম আদমি বিপদে পড়বে, ৯ নভেম্বর বিকেলের দিকে রাহুল গান্ধী প্রেসকে বলেন, ২০০০ টাকার নোট এনে কী করে কালো টাকা রোখা যাবে, তা একমাত্র মোদিজীই জানেন। দেশের অন্যান্য রাজনৈতিক দল চুপ করেছিল, বিজেডি থেকে নবীন পট্টনায়ক, জেডিইউর নিতীশ কুমার এই সিদ্ধান্তকে সমর্থন জানান। সমর্থন জানান রামদেব থেকে অমিতাভ বচ্চন, রজনীকান্ত, করণ জোহর, অজয় দেবগণ, কমল হাসান, নাগার্জুন, অনিল কুম্বলে, হরভজন সিং, শিল্পপতিদের প্রায় সবাই, ছিলেন এন আর নারায়ণ মুর্তিও, ছিলেন আইনজ্ঞ সোলি সোরাবজির মতন মানুষ। প্রধানমন্ত্রীর ঘোষণার পরের দিন সকালেই বলিউড, শিল্পমহলের এই ঝোড়ো সমর্থনের পেছনে কিছু একটা কাজ করেছিল, তা তো পরিস্কার। মোদিজি ঘোষণা দিয়ে চলে গেলেন জাপান ঘুরতে। এধারে রিজার্ভ ব্যাঙ্কের শক্তিকান্ত দাসের নাম আমরা সবাই জেনে ফেললাম কারণ প্রায় প্রতিদিন নতুন নতুন ফতোয়া জারি হতে থাকল। মিডিয়াতে রোজ নতুন গল্প, ২০০০ টাকার নোটে নাকি মাইক্রো চিপ আছে, কোথাও বস্তায় করে জমা করে থাকলে সহজেই খুঁজে বার করা যাবে। ২০০০ টাকা নোট নয় তো, যেন আলাদিনের আশ্চর্য প্রদীপ। ওদিকে এটিএএ’র সামনে মানুষের বিরাট লাইন, কেউ কেউ বললেন, মাইনাস ২৩ ডিগ্রি টেমপারেচারে জওয়ানরা দেশ পাহারা দিচ্ছেন, আর আপনারা লাইনে দাঁড়াতে পারবেন না। ওদিকে জওয়ানরা তাঁদের মাস মাইনে নিয়ে আমাদের ট্যাক্সের টাকায় অসম্ভব মোটা শীতবস্ত্র পরে অকসাই চিন পাহারা দিতে থাকলেন আর সাধারণ মানুষ নিজের উপার্জিত টাকা বার করতে গিয়ে লাইনে দাঁড়িয়েই রইলেন, মরলেনও জনা ৪০। তা যাক, তখনও কিন্তু সাধারণ মানুষ ভাবছে কালো টাকা বের হল বলে, কলার তুলে ১৮০০/২০০০ টাকার গলদা চিংড়ি কিনে যারা বাড়ি ফেরে, তারা এবার পথে বসবে, কালো টাকা বের হবে, তা দিয়ে গরিব মানুষের ঘর হবে, স্কুল হবে, হাসপাতাল হবে। পাড়ার বেকার হাবু, কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারী বাবুটি কেমন ফ্যাসাদে পড়েছে দেখতে থাকলো, ১৬ হাজার মাইনের হিসেব রক্ষক ভাবলো এবার তো ঝুনঝুনওলা গেল। এরই মধ্যে ১৩ নভেম্বর নরেন্দ্রভাই দামোদরদাস মোদি গোয়ায় গিয়ে সবিস্তার জানালেন, কেন এই ডিমনিটাইজেশন, বিরাট বক্তৃতা, আবার সেই ঘণ্টা খানেকের। তালি বাজিয়ে, গলা কাঁপিয়ে, চোখে জল এনে, সে এক শোনার মত বক্তৃতা, এই ৭০ বছরের লুটমারের বিরুদ্ধে তাঁর ক্রুসেডের বিরাট তালিকা দিলেন। জানালেন, দেশের জন্যই তিনি ঘর ছেড়েছেন, পরিবার ছেড়েছেন, কেন যে সেসব ছাড়তে হল, তা কিন্তু জানাননি। শেষে বললেন ৫০টা দিন সময় দিন, ৫০টা দিন, যদি এই প্রকল্প ভুল বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে চৌরাস্তার মোড়ে দাঁড় করে দেশের মানুষ যে সাজা দেবে, তাই তিনি স্বীকার করবেন। মধ্যযুগীয় চিন্তাভাবনা, সাজা চৌরাস্তার মোড়েই দেওয়ার কথা বলেছিলেন। ৩১শে ডিসেম্বরের মধ্যে এই প্রকল্পের সুফল ফলবেই। আবার জানালেন এই ডিমনিটাইজেশনের ফলে কালো টাকা, দুর্নীতি, জালনোট আর উগ্রপন্থাকে শেষ করা যাবে। বক্তৃতা শেষ, হাততালি। মাস খানেকের মধ্যে উপার্জন গেল ছোট কারখানার কর্মচারীদের, বাজারে বিক্রি নেই, অথচ গলায় সোনার চেন পরা মানিকজোড়েরা আবার বাজারে, খপ করে তুলে নিয়ে যাচ্ছে গলদা চিংড়ি, ৫ কিলোর ভেটকি, চিতলের পেটি, ঝুনঝুনওলার মেজাজ ফুরফুরে, কোনও হেলদোল নেই। সেই যে জিডিপি নামতে শুরু করল, তা আজও উঠে দাঁড়াল না। ডিমনিটাইজেশনের বক্তৃতার মধ্যে স্বভাবসিদ্ধভাবেই মোদিজির ভুল তথ্য ছিল যে সমান্তরাল কালো অর্থনীতিতে ৮৫% কারেন্সি ঘুরছে, সেগুলো সব ওই ৫০০ আর ১০০০ টাকায়। কোনও এক আমোদগেঁড়ে ওনাকে জানিয়েছে, ৫০০ আর ১০০০ টাকা বাতিল করলেই ওই টাকা আর অর্থনীতিতে ফেরত আসবেনা, সেই বিরাট টাকা খরচ করা যাবে সাধারণ মানুষের উন্নয়নে। উনি তো হাভার্ড ইত্যাদিতে বিশ্বাসী নন, পাঠশালার বোকা পণ্ডিতদের কথায় মজে গেলেন। অর্থনীতিবিদরা সেদিনই জানিয়েছিলেন, বড় জোর ৫/৭% আছে কারেন্সিতে, বাকিটা সোনা, হিরে, জমি বাড়িতে ইনভেস্ট করে রাখা আছে, কিন্তু উনি সে কথায় কান দিলেন না। মোদ্দা কথা হল কালো টাকা, দুর্নীতি, জাল টাকা, উগ্রপন্থার বিরুদ্ধে শেষ লড়াই করার জন্য নোটবন্দি করলেন। মন্ত্রিসভায় ছিলেন অরুণ জেটলি, অর্থনীতি বোঝেন, কিন্তু এই নোটবন্দি নিয়ে তাঁর সঙ্গেও কথা বলেননি মোদিজি। তো তিনি খেলাটা দিন পাঁচ-সাতের মধ্যেই বুঝতে পেরেছিলেন, ক’দিন পরেই তিনি এই ডিমনিটাইজেশনের আরেকটা বা বলা যাক সবচেয়ে বড় লাভের কথা ফলাও করে বলতে শুরু করলেন, সেটা কী? ভারতের অর্থনীতিকে ডিজিটাল ইকোনমি করার জন্য এটা নাকি খুব জরুরি ছিল। নয়া পয়েন্ট বাজারে এল, মিডিয়াও লুফে নিল, মোদিজিও। এদিকে উঠতে থাকা অর্থনীতি নামতে থাকল। তারপর ৬টা বছর কেটে গিয়েছে, সুপ্রিম কোর্টে দায়ের করা হয়েছিল মামলা, খতিয়ে দেখা হোক, ডিমনিটাইজেশনে কার লাভ, কাদের ক্ষতি। পিটিশন পড়েই ছিল, সবে হাত পড়েছে, তাঁরা নাকি বিচার করবেন। সে বিচার কবে আসবে জানা নেই, বরং আসুন আমরা একটু বিচার-বিবেচনা করে দেখি, মোদিজি যা বলেছিলেন, তার কতটা অ্যাচিভ করা গিয়েছে। কতটা কালো টাকা উদ্ধার হল? সেই সময়ের তথ্য বলছে দেশের অর্থনীতিতে ১৫.৪১ লক্ষ কোটি টাকা ঘুরছিল, মোদিজির দেওয়া তথ্য অনুযায়ী এর ৮৫% কালো টাকা, মানে ১৩ লক্ষ কোটি টাকা, যে টাকা ফেরত আসার কথা নয়, যে টাকা দিয়ে গরিবদের উন্নয়ন হবে? তো কত ফেরত এল? ১৫.৩১ লক্ষ কোটি টাকা ফেরত চলে এল। এল না কত? ১০ কোটি টাকা। নতুন নোট, এটিএম-এর নতুন ব্যবস্থা, নোটবন্দির বিভিন্ন সরকারি ব্যবস্থায় খরচ কত হল? সরকারি সংস্থা সেন্টার ফর মনিটরিং ইন্ডিয়ান ইকোনমি জানাচ্ছে, ওই ৫০ দিন, মানে ৮ নভেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর ২০১৬’র মধ্যে ডিমনিটাইজেশনের জন্য খরচ হয়েছে ১.২৮ লক্ষ কোটি টাকা। মানে কালো টাকা তো ফেরত এলই না, গবুচন্দ্র মন্ত্রীর এই নোটবন্দিতে দেশের মানুষের ট্যাক্সের পয়সা উড়িয়ে দিলেন। না কালো টাকা কমলো, না দুর্নীতি কমলো, হালেই পার্থ-অর্পিতা কাণ্ডে যে টাকা উদ্ধার হল, বা সারা দেশজুড়ে মাঝে মধ্যেই যে টাকা উদ্ধার হচ্ছে তা তো এই নতুন ২০০০ টাকা, ৫০০ টাকা। দুর্নীতি কমেনি তা তো মোদি সরকারের ইডি অভিযানের সংখ্যাই বলে দিচ্ছে, ২০১৪’র থেকে ইডি রেইড-এর সংখ্যা ৬৭% বেড়েছে, কোরাপশন ইন্ডেক্স ২০১২-তে ছিল ৯৪, ২০১৪-তে কমে হল ৮৫,২০১৫-তে ৭৬, মানে কমছিল, ২০২১-এ বেড়ে আবার ৮৫, মানে নরেন্দ্র মোদি জমানায় দুর্নীতি বেড়েছে, তাহলে নোটবন্দি কেন করা হল? কার স্বার্থে? তাহলে দুর্নীতি বেড়েছে, কালো টাকাও বেড়েছে। আসুন দেখা যাক জাল নোট আর উগ্রপন্থার কী হাল? ২০১৬-তেই, আনে ওই ৫০ দিনের মধ্যেই ধরা পড়লো ৬.৩২ লক্ষ টাকার জাল নোট, পরের চার বছরে আরবিআই-এর রিপোর্ট ১৮.৮৭ লক্ষ টাকার জাল নোট ধরা পড়েছে। জাল নোট বেড়েছে, ২০১৯-এর পুলওয়ামার ঘটনাই প্রমাণ, নোটবন্দি দিয়ে উগ্রপন্থা থামানো যায়নি। এবারে আসুন ডিজিটাল ইকোনমির কী হল সেটা দেখা যাক, মোদিজির স্বপ্ন ক্যাশলেস ইকোনমি, অবশ্য এই স্বপ্ন ওই ৮ নভেম্বরেই তিনি দেখেননি, পরে জুড়েছেন এই সাপ্লিমেন্টারি স্বপ্নকে। তো তথ্য বলছে ক্যাশ ইজ কিং, ২০১৬’র ৪ নভেম্বর ১৭.৭ লক্ষ কোটি টাকার ক্যাশ ঘুরত বাজারে, এখন সেটা বেড়ে ৩০.৮৮ লক্ষ কোটি টাকা, ৭১.৮৪% বৃদ্ধি, মোদি হ্যায় তো মুমকিন হ্যায়। ১৩ নভেম্বর গোয়াতে বলেছিলেন এই উন্মাদ রাজা, বলেছিলেন ৫০ দিন সময় দিন, ৫০ দিন, তারমধ্যে যদি এই পদক্ষেপ ভুল বলে প্রমাণিত হয়, তাহলে দেশের চৌরাস্তায় দাঁড়িয়ে যে শাস্তি দেবেন, দেশের মানুষ, তা আমি মেনে নেব। ৬ বছর কেটে গিয়েছে, এক উন্মাদ রাজার রাজত্বে মানুষের জীবন অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে, আসুন দেশের প্রত্যেক চৌরাস্তায় ওনার কুশপুত্তলিকা দহন করা যাক। 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Iran-Israel | ইরান-ইজরায়েল যু/দ্ধ আবহে জেনেভায় বৈঠক করবেন ইরানের বিদেশমন্ত্রী
01:28:30
Video thumbnail
SSC Update | বিগ ব্রেকিং, SSC-র ভাতাতে স্থগিতাদেশ হাইকোর্টের, এবার কী হবে?
01:45:45
Video thumbnail
Ahmedabad Incident | আহমেদাবাদ দু/র্ঘটনার পর বোয়িংয়ে আস্থা হারাচ্ছে বিশ্ব? বহু চুক্তি বাতিল
01:51:11
Video thumbnail
Stadium Bulletin | জোড়া শতরান! হেডিংলেতে দাপট ভারতের
22:37
Video thumbnail
Iran-America | ইরান-ইজরায়েল যু/দ্ধের মাঝেই আমেরিকাকে চ‍্যালেঞ্জ ইরানের, কোন ড্রোনে ভয় দেখাল ইরান?
00:00
Video thumbnail
Iran-America | ইরান-ইজরায়েল যু/দ্ধের মাঝেই আমেরিকাকে চ‍্যালেঞ্জ ইরানের, কোন ড্রোনে ভয় দেখাল ইরান?
04:01
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের যে ক্ষে/পনা/স্ত্রে কুপোকাত ইজরায়েল, জেনে নিন তার গোপন কথা,দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
03:14:41
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরানের অনবরত অ‍্যা/টাক, ছা/ই হওয়ার মুখে ইজরায়েল, দেখুন ঠিক কী অবস্থা
01:40:21
Video thumbnail
Iran-Israel | ইরান-ইজরায়েল যু/দ্ধে ২ সপ্তাহের মধ‍্যে এন্ট্রি নেবে আমেরিকা
02:35:25
Video thumbnail
Apple-Google Password | অ্যাপল-গুগল-ফেসবুক ব্যবহারকারীদের পাসওয়ার্ড ফাঁস
01:06:20