বাংলার দুর্গাপুজোকে ইউনেসকোর হেরিটজ স্বীকৃতি উপলক্ষে এবার পুজো কমিটিগুলিকে অনুদান বাড়িয়ে দিল রাজ্য সরকার। বাড়ানো হল বিদ্যুতের বিলে ছাড়ের পরিমাণ। সোমবার নেতাজি ইন্ডোর স্টেডিয়ামে পুজো কমিটিগুলির সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেন, অনুদান ৫০ হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে ৬০ হাজার টাকা করা হল। বিদ্যুতের বিলে ছাড়ের পরিমাণও করা হল ৬০ শতাংশ। মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণা শুনে করতালিতে ফেটে পড়ে গোটা স্টেডিয়াম।
আগেই ঘোষণা করা হয়েছিল, বাংলার পুজো হেরিটজ স্বীকৃতি পাওয়ায় ১ সেপ্টেম্বর মিছিল হবে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এবারের পুজো হবে অন্যরকম। ১ সেপ্টেম্বর থেকেই এবার পুজো শুরু। ওইদিন ইউনেসকোকে ধন্যবাদ দেওয়া হবে। ইউনেসকোর প্রতিনিধিরা আসবেন। জোড়াসাঁকো ঠাকুরবাড়ি থেকে মিছিল বেরিয়ে শেষ হবে ধর্মতলায় রাণি রাসমণি রোডে। যে পুজো কমিটি বা ক্লাব যেভাবে পারবে, অংশ নেবে মিছিলে। কেউ গান গাইতে পারে, কেউ নাচ করতে পারে, কেউ ছাতানৃত্য করতে পারে। তবে সবাইকে মিছিলে আসতে হবে। তিনি বলেন, সবাই আসবেন তো?
মিছিলের জন্য ওইদিন স্কুল, কলেজ, অফিস, আদালত বেলা ১টার ছুটি হয়ে যাবে বলে জানিয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ওইদিন কলকাতার মিছিলে হাওড়া এবং বিধাননগর থাকবে। আর জেলায় জেলায় একই সময়ে মিছিল হবে একই ভাবে। কলকাতায় অনেক বিদেশি প্রতিনিধি সেদিন আসবেন। বণিকসভা, দূতাবাসের প্রতিনিধিরাও থাকবেন। ওইদিন ইউনেসকোকে ধন্যবাদ জানানো হবে।
নাম না করে মুখ্যমন্ত্রী বিজেপিকে কটাক্ষ করতে ছাড়েননি। তিনি বলেন, অনেকে প্রচার করেন, কলকাতা বা বাংলায় নাকি দুর্গাপুজো করতে দেওয়া হয় না, সরস্বতী পুজোয় বাধা দেওয়া হয়। তাঁরা এসে দেখে যাবেন, পুজো কাকে বলে।
মুখ্যমন্ত্রী জানান, ৫ থেকে ৮ অক্টোবর পর্যন্ত বিসর্জন হবে। ৮ তারিখে হবে কলকাতার কার্নিভাল। জেলায় কার্নিভাল হবে ৭ তারিখে। ৩০ সেপ্টেম্বর থেকে ১০ অক্টোবর পর্যন্ত পুজোর ছুটি থাকবে।
মুখ্যমন্ত্রী বারবার মনে করিয়ে দেন, ১ সেপ্টেম্বরের মিছিলকে একটা ঐতিহাসিক রূপ দিতে হবে। সবদিক দিয়ে বর্ণময় করে তুলতে হবে ওই মিছিলকে। তিনি জানান, ২১ থেকে ২৩ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বিদেশি অতিথিরা বাংলার পুজো দেখতে আসবেন। পুজো কমিটিগুলিকে এমনভাবে মণ্ডপ করতে হবে, যাতে সাধারণ মানুষের কোনও অসুবিধা না হয়। মিছিলকে স্বার্থক করতে বিধায়ক, সাংসদ, কাউন্সিলরদের বিশেষ ভূমিকা নিতে হবে। আলোর ঝরনাধারায় ধুইয়ে দিতে হবে এবারের পুজোকে। মুখ্যমন্ত্রী জানান, রাজ্যে ৪৩ হাজার রেজিস্টার্ড পুজো কমিটি আছে। সকলেই অনুদান পাবে। রাজ্য সরকারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকা সত্ত্বেও এবার অনুদানের পরিমাণ বাড়ানো হল।