মহারাষ্ট্র সরকারের আবেদনে সাড়া দিয়ে মাওবাদী যোগসাজসে অভিযুক্ত প্রাক্তন অধ্যাপক জি এন সাইবাবাকে জেলবন্দি রাখার নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট। শনিবার জরুরি ভিত্তিতে শুনানির পরে বিচারপতি এম আর শাহ এবং বিচারপতি বেলা ত্রিবেদীকে নিয়ে গঠিত শীর্ষ আদালতের বেঞ্চ এ বিষয়ে বোম্বে হাইকোর্টের শুক্রবারের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ জারি করেছে। ৮ ডিসেম্বর মামলার পরবর্তী শুনানি পর্যন্ত নাগপুর সেন্ট্রাল জেলেই থাকতে হবে সাইবাবা এবং তাঁর সঙ্গীদের। প্রতিবন্ধী এবং অসুস্থ সাইবাবাকে বৃদ্ধ গৃহবন্দি রাখার জন্য তাঁর আইনজীবীতের তরফে আবেদন জানানো হলেও মহারাষ্ট্র সরকারের আপত্তি মেনে নিয়ে তা খারিজ করে দিয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
শুক্রবার জিএন সাইবাবাকে বেকসুর খালাসের নির্দেশ দিয়েছিল বোম্বে হাইকোর্ট। আর সে রায়ের পরে একইদিনে বোম্বে হাইকোর্টের রায়ের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয় এনআইএ। কিন্তু পত্রপাঠ সে আর্জি খারিজ করে শীর্ষ আদালত। অবশ্য জরুরি শুননির জন্য আবেদন জানাতে বলা হয় তদন্তকারী সংস্থাকে। এদিকে মহারাষ্ট্র সরকারও ওই শিক্ষকের বেকসুর খালাসের নির্দেশের উপর স্থগিতাদেশ চেয়ে শীর্ষ আদালতের দ্বারস্থ হয়। এরপরই শনিবার সুপ্রিম কোর্টে জরুরি ভিত্তিতে বিশেষ শুনানির ব্যবস্থা করা হয়।
২০১৭ সালে নিম্ন আদালত তাঁকে দোষী সাব্যস্ত করে যাবজ্জীবনের সাজা ঘোষণা করে। সেই রায়কে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে আবেদন করেছিলেন সাইবাবা। অবশেষে বিচারপতি রোহিত দেও এবং অনিল পানসারের ডিভিশন বেঞ্চ শুক্রবার সাইবাবার আর্জি মঞ্জুর করে। একইসঙ্গে আদালত প্রাক্তন অধ্যাপককে দ্রুত মুক্তি দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে। আপাতত তিনি নাগপুর সেন্ট্রাল জেলে বন্দি রয়েছেন। শারীরিক প্রতিবন্ধকতার কারণে সাইবাবাকে হুইল চেয়ারের উপর নির্ভর করতে হয়। সাইবাবার সঙ্গেই আরও পাঁচ আবেদনকারীকেও বেকসুর খালাস করেছে উচ্চ আদালত। সাজাপ্রাপ্তদের দ্রুত মুক্তির নির্দেশ দিয়ে আদালত বলেছে, যদি না তাঁরা অন্য কোনও মামলায় অভিযুক্ত থাকেন, তাহলে তাঁদের যেন জেল থেকে মুক্তি দেওয়া হয়।
জি এন সাইবাবা দিল্লি বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি অধ্যাপক ছিলেন। ২০১৪ সালে তাঁর বিরুদ্ধে মাওবাদী যোগাযোগের অভিযোগ ওঠে। তাঁকে মহারাষ্ট্র পুলিশ গ্রেফতার করে। ২০১৭ সালের মার্চে মহারাষ্ট্রের গড়চিরৌলি জেলার দায়রা আদালত তাঁকে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণার দায়ে তাঁদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেয় আদালত।