রাষ্ট্রদ্রোহ আইন সংক্রান্ত মামলায় সুপ্রিম কোর্টের ভূমিকায় তিনি যে অত্যন্ত অসন্তুষ্ট তা শুক্রবার স্পষ্ট করে জানিয়ে দিলেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী (Minister for Law and Justice) কিরণ রিজিজু। মুম্বইয়ে একটি সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের অনুষ্ঠানে নিজের বক্তব্যে কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী অত্যন্ত কড়া ভাষায় বিচারবিভাগ সম্পর্কে তাঁর অবস্থান বোঝাতে গিয়ে বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার আশ্বাস দেওয়া সত্ত্বেও সুপ্রিম কোর্ট ওই আইন সম্পর্কে যে অবস্থান নিল তাতে আমি মর্মাহত। একইসঙ্গে তিনি প্রশ্ন তোলেন, প্রশাসনটা কে চালাবে নির্বাচিত সরকার না বিচারবিভাগ।
সুপ্রিম কোর্টে চলা মামলা সম্পর্কে তাঁর অবস্থান জানাতে গিয়ে কিরণ রিজিজু বলেন, শীর্ষ আদালতে এমন অনেক মামলা শুনানির জন্য তালিকাভুক্ত হয়ে আছে যার অর্ধেক অংশই ওই স্তরের আদালতে শুনানির যোগ্য নয়। এখানেই থেমে থাকেননি কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। মামলার রায় দেওয়ার ক্ষেত্রে উচ্চ আদালতের বিচারপতি বা নিম্ন আদালতের বিচারকদের কি করা উচিত তাও এদিন স্পষ্ট বুঝিয়ে দেন তিনি। কেন্দ্রে বিজেপি শাসিত সরকারের অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ওই মন্ত্রীর কথায়, বিচারপতিরা তাঁদের রায় দেওয়ার সময় স্পষ্ট করে রায় দিন। কিন্তু পর্ষবেক্ষণের নামে একরাশ মন্তব্য করার কোনও প্রয়োজন নেই। অর্থাৎ বিচারপতিরা মামলা চলাকালীন কতটুকু বলতে পারবেন তারও লক্ষণরেখা টেনে দিতে চান কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী।
দেশে বিচারপতি নিয়োগের পদ্ধতি সম্পর্কে প্রশ্ন তুলে কিছুদিন আগেই তিনি বলেছিলেন দেশের সাধারণ মানুষ কলেজিয়াম (Collegium System)ব্যবস্থা সম্পর্কে অসন্তুষ্ট। আর শুক্রবার মুম্বইয়ের ওই অনুষ্ঠানে কিরণ রিজিজু জানিয়ে দেন, ভারতই একমাত্র দেশ যেখানে বিচারপতিরাই বিচারপতিদের নিয়োগ করেন। দেশে বিপুল সংখ্যক নিষ্পত্তি না হওয়া মামলার একটা বড় অংশ সালিশির মাধ্যমে বা আলোচনার ভিত্তিতে মিটিয়ে নেওয়া যায় বলে মনে করেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী। তিনি জানান, এই ব্যাপারে কেন্দ্র একটি বিলও সংসদে পেশ করেছে। সেটি আইন হলে ভবিষ্যতে নানা ধরণের ছোটখাট মামলার নিষ্পত্তি সহজেই করা যাবে। এজন্য তরুণ আইনজীবীদের মধ্যস্ততাকারী হিসাবে নিয়োগ করা হবে।