তাইপেই: চাইনিজ সোশ্যাল মিডিয়া টিকটক (TikTok) পুরোপুরি বন্ধ করার কথা ভাবছে তাইওয়ান (Taiwan)। সে দেশের সরকারি কর্তৃপক্ষের বক্তব্য, চীন টিকটকের মাধ্যমে তাইওয়ানের জনগণকে প্রভাবিত করার চেষ্টা চালাচ্ছে। অভিযোগ করা হচ্ছে, তাইওয়ানের কর্তৃপক্ষের উপর থেকে জনগণের আস্থা নষ্ট করতে কৌশলে টিকটক ব্যবহার করছে চীন (China)।
সাউথ চায়না মর্নিং পোস্ট (South China Morning Post)-এর দেওয়া খবর অনুযায়ী, চীনা লগ্নিতে চলা এই সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম তাইওয়ানে সরকারি ক্ষেত্র (Public Sector) অর্থাৎ পাবলিক সেক্টরে ইতিমধ্যেই বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে নিরাপত্তাজনিত কারণে। সে দেশের সরকারের ভয়, এর মাধ্যমে “জ্ঞানাত্মক যুদ্ধ (Cognitive Warfare)” শুরু হতে পারে তাইওয়ানে। সরকারি ক্ষেত্রে নিষিদ্ধ হলেও, এখনও পর্যন্ত ব্যক্তিগত ডিভাইস (Personal Devices) এবং বেসরকারি ক্ষেত্রে (Private Sector) ব্যবহার নিষিদ্ধ করেনি তাইওয়ান কর্তৃপক্ষ। বলতে গেলে তারা এবিষয়ে দ্বিধাগ্রস্ত ছিল। প্রাথমিক ধারণা ছিল, এর ফলে বাক এবং তথ্যের স্বাধীনতার (Freedom of Speech and Information) উপর প্রভাব পড়তে পারে।
আরও পড়ুন: Weekly Horoscope: আর্থিক স্বচ্ছলতা থেকে শুরু করে সম্পর্কের সমীকরণ, নতুন সপ্তাহ কেমন হবে জেনে নিন
ন্যাশনাল সিকিউরিটি ব্যুরো অব তাইওয়ান (National Security Bureau of Taiwan)-এর অভিযোগ, টিকটকের মাধ্যমে বেজিং তার প্রভাব খাটানো বাড়িয়েছে, সে দেশের সরকারের উপর আস্থা এবং বিশ্বাস ভাঙার চেষ্টা চালানোর খেলা চলছে। গত মে মাসে ব্যুরোর ডিরেক্টর চেন মিং-টং (Bureau Director Chen Ming-tong) অভিযোগ করেছিলেন, তাইওয়ানিদের প্রশিক্ষণ দেওয়ার পাশাপাশি বেজিং অর্থপ্রদান করছে, যাতে করে তারা তরুণ অডিয়েন্সকে প্রভাবিত করতে পারে। তাইওয়ানের বিরুদ্ধে জ্ঞানাত্মক যুদ্ধ চালানোর জন্য টিকটক, ইনস্টাগ্রামের চীনা সংস্করণ – শাওহোংসু (Xiaohongshu) এবং ইউটিউব (YouTube)-এর মতো সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্মকে কৌশলে ব্যবহার করছে চীন।
প্রকাশিত একটি রিপোর্ট নিয়ে সে দেশের ন্যায় মন্ত্রকের তদন্ত ব্যুরো (Investigation Bureau of the Ministry of Justice) তদন্ত চালাচ্ছে। ওই রিপোর্টে বলা হয়েছে, তাইওয়ানের প্রেসিডেন্ট সাই ইং-ওয়েন (Taiwanese President Tsai Ing-wen)-এর সরকারের বিরুদ্ধে একটি ভিডিয়োতে দুর্নীতির অভিযোগ আনা হয়েছে। এমনকি, দেশের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে উপহাস করে ভিডিয়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়েছে টিকটকে। তারই পরিপ্রেক্ষিতে তাইওয়ানের আইনপ্রণেতাদের মত, পরিস্থিতি হাতের বাইরে বেরিয়ে যাওয়ার আগে উপযুক্ত পদক্ষেপ নেওয়া দরকার। কারণ, চীন সুকৌশলে এই অ্যাপের মাধ্যমে মিথ্যা রটাচ্ছে। তাইওয়ানে সামাজিক বিভেদ আনতে চাইছে।
উল্লেখ্য, দ্বীপরাষ্ট্র তাইওয়ানকে চীন নিজের ভূখণ্ডের অঙ্গ বলে মনে করে। চীন হুঁশিয়ারি দিয়ে রেখেছে, প্রয়োজন পড়লে সামরিক শক্তি প্রয়োগ করে তাইওয়ানকে নিয়ন্ত্রণেও আনবে তারা।