স্বাস্থ্য দফতরের নিয়োগ নিয়ে এবার বেজায় সমস্যায় রাজ্য। জেলা স্তরে রাজ্যের গঠন করা ২৮ জনের মনোনয়ন কমিটি বাতিলের নির্দেশ দিল কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতির (CJI) নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। ওই কমিটিতে ছিলেন রাজ্যের একাধিক মন্ত্রী এবং শাসকদলের নেতা। আদালত তার নির্দেশে জানিয়েছে, গত বছরের ২৬ নভেম্বর রাজ্য যে মনোনয়ন কমিটি গঠন করেছিল, তার শীর্ষে কোনও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে রাখা দরকার ছিল। দু’সপ্তাহের মধ্যে নতুন করে কমিটি গঠনেরও নির্দেশ দিয়েছে প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ।
প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব এবং বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চের বক্তব্য, রাজ্য সরকার গঠিত মনোনয়ন কমিটির মাথায় কোনও নিরপেক্ষ ব্যক্তিকে রাখা প্রয়োজন। এর ফলে নিয়োগ নিয়ে নিরপেক্ষতা বজায় থাকবে। কমিটির বিষয়ে রাজ্যকে পুনর্বিবেচনাও করতে বলেছে বেঞ্চ।
পাশাপাশি উচ্চ আদালতের নির্দেশ, দুই সপ্তাহের মধ্যে মনোনয়ন কমিটি (Nominated Committee) পুনর্গঠন করতে হবে। প্রধান বিচারপতির বেঞ্চ জানিয়েছে, চেয়ারম্যান হিসাবে এমন এক জনকে নিয়োগ করতে হবে, যাঁর বিরুদ্ধে কোনও পক্ষপাতিত্বের অভিযোগ থাকবে না। তাঁকে অবশ্যই অরাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব হতে হবে।
জনস্বার্থ মামলাটি কলকাতা হাইকোর্টে করেছিলেন জনৈক পীযূষ পাত্র। স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ দফতরের ১১,৫২১ পদে চুক্তিভিত্তিক কর্মী (Contractual Worker) নিয়োগে দুর্নীতি (Corruption) হয়ে থাকতে পারে এই আশঙ্কায়। মামলাকারীর আইনজীবী বিক্রম বন্দ্যোপাধ্যায়ের যুক্তি ছিল, মনোনয়ন কমিটির প্রায় সকল সদস্যই শাসকদলের নেতা-মন্ত্রী। ফলে এই নিয়োগের ক্ষেত্রে স্বজনপোষণ বা দুর্নীতি হয়ে থাকতে পারে।
মনোনয়ন কমিটিতে ছিলেন জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, গৌতম দেব, চন্দ্রনাথ সিংহ, শান্তা ছেত্রী, মলয় ঘটক, অখিল গিরি, শেখ সুফিয়ানের মতো শাসকদলের নেতারা। এই শুনানির পরিপ্রেক্ষিতেই প্রধান বিচারপতির নেতৃত্বাধীন ডিভিশন বেঞ্চ (Division Bench ) রাজ্যের থেকে রিপোর্ট তলব করেছিল। মঙ্গলবার আরও এক ধাপ এগিয়ে সেই কমিটি বাতিলের নির্দেশ দিল হাই কোর্ট।