Monday, June 30, 2025
Homeখেলারুদ্ধশ্বাস ফাইনালে মেসির জোড়া গোল, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব কাপ উঠল আর্জেন্তিনার হাতে

রুদ্ধশ্বাস ফাইনালে মেসির জোড়া গোল, শেষ পর্যন্ত বিশ্ব কাপ উঠল আর্জেন্তিনার হাতে

Follow Us :

আর্জেন্তিনা–৩, ৪     ফ্রান্স–৩, ২

(মেসি-২, অ্যাঞ্জেলো দি মারিয়া)    (কিলিয়ান এমবাপে–হ্যাটট্রিক)

একি স্বপ্ন, একি মায়া, নাকি মাহাজাগতিক বিশ্ব কাপ ফুটবলের ফাইনাল। ১২০ মিনিটের রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ের শেষে বিশ্ব কাপটা উঠল লিওনেল মেসির হাতে, যাঁর হাতে কাপটা দেখবার জন্য সারা বিশ্বের ফুটবলপ্রেমী মানুষ অপেক্ষা করেছিল। যাঁর ট্রফি ক্যাবিনেটে সাতটা ব্যালন দে ওর, চারটা উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ এবং একটা কোপা আমেরিকা আছে তাঁর জন্য ফুটবল দেবতা একবার অন্তত বিশ্ব কাপ বরাদ্দ করবেন না তা হয় না। এটাই ছিল বিশ্ব কাপে তাঁর শেষ ম্যাচ। আগেই তিনি ঘোষণা করে দিয়েছিলেন। নিজের শেষ বিশ্ব কাপ ম্যাচে অবশেষে ট্রফিটাতে হাত ছোঁয়ালেন। ফাইনালে করলেন জোড়া গোল। তার পর টাই ব্রেকারে একটা। এ তো মেসিময় ফাইনাল। ৩৬ বছর আগে আর্জেন্তিনা যকণ শেষ বার বিশ্ব কাপ পেয়েছিল, তখন সেটা ছিল মারাদোনাময় ফাইনাল। আর এবারের সঙ্গে সেবারের মিল হল আর্জেন্তিনা সেবারও জার্মানির বিরুদ্ধে ২-০ এগিয়ে যাওয়ার পর ম্যাচ ২-২ হয়ে যায়। তারপর মারাদোনার একটা দুর্দান্ত থ্রু পাস থেকে গোল করে আর্জেন্তিনাকে জেতান বুরুচাগা। মেসির পাশে কোনও বুরুচাগা ছিলেন না। তাঁর টিমের তিনিই নায়ক, তিনিই পার্শ্বচরিত্র। না হলে আশি মিনিট পর্যন্ত তাঁর টিম যখন দু গোলে এগিয়ে, বিশ্ব কাপটা মাত্র দশ মিনিট দূরে, তখন এক মিনিটের ব্যবধানে পর পর দুটো গোল করে কিলিয়ান এমবাপে ম্যাচটা নিয়ে গেলেন অতিরিক্ত সময়ে। সেখানেও আবার ১০৮ মিনিটে মেসির গোল এবং আর্জেন্তিনার এগিয়ে যাওয়া। কিন্তু ১১৮ মিনিটে আবার পেনাল্টি থেকে এমবাপের গোল এবং ম্যাচের চলে যাওয়া টাই ব্রেকারে।  সেখানেও মেসি নিজের কর্তব্যে অবিচল। প্রথম গোলটা তাঁর পা থেকেই এল। এর পর বাকি তিনটি গোল করলেন পাওলো দিবালা, পারদেশ এবং মন্টিয়েল। আর এমবাপের গোল দিয়ে ফ্রান্স শুরু করলেও কিংসলে কোমান এবং চুয়ামেনি ব্যর্থ ্লেন গোল করতে। কোমানের শট বাঁচালেন এমিলিয়ানো মার্টিেনেজ। চুয়ামেনি বাইরে মারলেন। কোলো মু্য়ানি গোল করলেও মন্টিয়েলের গোলেই ম্যাচ শেষ। দুঃখ হয় এমবাপের জন্য। দুদিন পরেই তাঁর চব্বিশতম জন্মদিন। তার আগে বিশ্ব কাপ ফাইনালে হ্যাটট্রিক করেও ট্রফি পেলেন না। আট গোল করে সোনার বুট পেয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হল। আর মেসি বিশ্ব কাপের সঙ্গে সোনার বলটাও পেয়ে গেলেন। তাঁকে ছাড়া আর কেই বা সোনার বল পেতে পারতেন।

আর্জেন্তিনার ফাইনাল জিততে যে টাই ব্রেকার পর্যন্ত যেতে হবে তা প্রথম ৪৫ মিনিটে বোঝা যায়নি। তখন মাঠে একচেটিয়া শুধু আর্জেন্তিনা। গ্যালারিতে শুধু নীল সাদা ঢেউ। আর কলরব ভামোস ভামোস আর্জেন্তিনা। দোহার লুসাইল স্টেডিয়ামে তখন ৪৫ হাজার আর্জেন্তিনীয়। এদের চিৎকারেই হোক কিংবা কোচ লিওনেল স্কালোনির ধুরন্ধর চালে আর্জেন্তিনার মাঝ মাঠ ভ্যানিশ করে দিল ফ্রান্স মাঝ মাঠকে। একটার পর একটা মুভমেন্ট ঢেউয়ের মতো আছড়ে পড়ছে তখন ফরাসি ডিফেন্সে। আর সেগুলোকে আটকাতে জান কয়লা হয়ে যাচ্ছে রাফায়েল ভারানদের। ২৩ মিনিটেই বাঁ দিক থেকে কাট করে বক্সে ঢুকলেন দিমারিয়া। তাঁকে পিছন থেকে ঠেলা দিয়ে ফেলে দিলেন ওসুমানু দেম্বলে। পোল্যান্ডের রেফারি পেনাল্টি দিতে দ্বিধা করেননি। পেনাল্টি থেকে গোল করে দলকে এগিয়ে দিলেন মেসি। ৩৬ মিনিটে দিমারিয়া চমৎকার গোল করে ২-০ করে ফেললেন। তাঁকে দুর্দান্ত থ্রু পাসটা বাড়িয়েছিলেন এঞ্জো ফার্নান্ডেজ। ম্যাচটা ওখানেই শেষ হয়ে যাওয়ার কথা। কিন্তু সেটা হতে দিল না ফ্রান্স।

বিরতির পর ফ্রান্স খেলাটায় ফিরতে চেষ্টা করল। এবার তাদের মাঝ মাঠ সজাগ। যে এমবাপে প্রথমার্দ্ধে বলই পাননি তিনি এবার সচল হলেন। বিরতির আগেই দিদিয়র দেশঁ তুলে নিয়েছিলেন অলিভার জিরু আর ওসুমানু দেম্বলেকে। তাদের বদলি কিংসলে কোমান আর কোলো মুয়ানি ম্যাচটা আবার ফিরিয়ে আনলেন ফ্রান্সের দিকে। কিন্তু ওটেমন্ডি আর রোমারোর নেতৃত্বে আর্জেন্তিনা ডিফেন্স তখন দুর্দান্ত খেলছে। কিন্তু হঠাৎই আকুনা একটা ফাউল করে ফেললেন বক্সের মধ্যে। পেনাল্টি থেকে ব্যবধান কমালেন এমবাপে। তখন ম্যাচের বয়স ৮০ মিনিট। পরের মিনিটেই বক্সের মধ্যে ঢুকে চলতি বলে দুর্দান্ত একটা শটে এমবাপে ২-২ করে ফেললেন। ম্যাচের ছয়টি গোলের মধ্যে এটিই সেরা।

কিন্তু মেসি তো মেসিই। জীবনের শেষ বিশ্ব কাপের শেষ ম্যাচ। বিশ্ব কাপটা পাখির চোখের মতো দেখছেন। ১০৮ মিনিটে জটলার মধ্যে বল পেয়ে তিনি আবার এগিয়ে দিলেন দলকে। বিশ্ব কাপে তাঁর গোল হয়ে গেল তেরো। আগের চারটে বিশ্ব কাপে করেছেন ছয়টা গোল। আর শেষ বিশ্ব কাপে সাতটা গোল। ঐশ্বরিক কীর্তি মনে হয় একেই বলে। কিন্তু তখনও বিশ্ব কাপ যে অনেক দূরে তা বোঝালেন এমবাপে। ১১৮ মিনিটে পেনাল্টি থেকে গোল করে। ম্যাচ তখন ৩-৩। এবং টাই ব্রেকারে। শেষ পর্যন্ত আর্জেন্তিনাই জিতল। মারাদোনার প্রয়াণের পর এটাই প্রথম বিশ্ব কাপ। আর সেই বিশ্ব কাপটা আর্জেন্তিনায় নিয়ে গিয়ে বেশ ভালভাবেই মারাদোনা প্রণাম জানালেন মেসি ও তাঁর সহযোদ্ধারা। এই বিশ্ব কাপটা আজের্ন্তিনার তৃতীয় বিশ্ব কাপ। মারাদোনার পর মেসির হাতে উঠল। আসলে এবারের কাপটা যত না আর্জেন্তিনার, তার চেয়েও অনেক বেশি মেসির। ৩৫ বছরের জীবনে ফুটবল থেকে তিনি সব কিছুই পেয়ে গেলেন। এল এল টেনের জন্যই আজ সারা বিশ্ব জুড়ে ভামোস ভামোস আর্জেন্তিনা। 

RELATED ARTICLES

Most Popular

Video thumbnail
Kunal Ghosh | TMC | তৃণমূল ভবনে CCTV ফুটেজ দেখালেন কুণাল, তোলপাড় বাংলার রাজনীতি
02:48:30
Video thumbnail
India-Pakistan | ফের ভারতের ভয়ে কাঁপছে পাকিস্তান, দেখুন স্পেশাল রিপোর্ট
02:23:25
Video thumbnail
America | China | India | আমেরিকা, চিন, সঙ্গে ইউরোপীয় ইউনিয়নের দাদাগিরি বন্ধ করবে ভারত?
02:31:21
Video thumbnail
Supreme Court | বিচারপতি নিয়োগে কলেজিয়ামে বহিরাগত শক্তির হস্তক্ষেপ, বি/স্ফো/রক বিচারপতি দীপঙ্কর দত্ত
03:31
Video thumbnail
Stadium Bulletin | এজবাস্টনে বুমরা নিয়ে নাটক চরমে
18:29
Video thumbnail
Hooligaanism | Melar Gaan | বকুলতলার মেলার গানে হুলিগানইজম
00:00
Video thumbnail
BJP | সখী আঁধারে একলা ঘরে...বিজেপি শাসিত কোন কোন রাজ্যে, কোন কোন গ্রাম অন্ধকারে?
01:17
Video thumbnail
Madan Mitra | Kasba Incident | কসবা কাণ্ডে কী বলেছিলেন মদন? যার জন্য শোকজ, দেখুন সেই ভিডিও
04:26:16
Video thumbnail
Israel | Benjamin Netanyahu | যু/দ্ধ থামতেই তেল আভিভে বিরাট বিক্ষো/ভ, স/ঙ্ক/টে নেতানিয়াহু
00:00
Video thumbnail
Donald Trump | সিজ ফা/য়া/র ব্রোকার ট্রাম্পের নয়া দাবি, শুনলে চমকে উঠবেন
00:00

Deprecated: Automatic conversion of false to array is deprecated in /var/www/ktv/wp-content/themes/techinfer-child/functions.php on line 39