কলকাতা: ‘বাবা-মা, দিদি আমি তোমাদের সক্কলকে খুব ভালোবাসি। আমি এ জীবনে তোমাদের থেকে আপন কাউকে পাইনি। আমাকে ক্ষমা করে দিও যে আমাকে এটা করতে হচ্ছে।’ এই ভাষাতেই আত্মহত্যার (Suicide Note) বয়ান লিখে চারতলার ছাদ থেকে ঝাঁপ দিলেন প্রাক্তন বিমানসেবিকা (Airhostess) দেবপ্রিয়া বিশ্বাস (২৭) (Debapriya Biswas)।
কলকাতায় বাইপাসের (Bypass) ধারে মেট্রোপলিটান হাউজিং সোসাইটির (Metropolitan Housing Society) একটি বাড়ির ছাদ থেকে ঝাঁপ মারায় সোজা রাস্তার উপর আছড়ে পড়েন তিনি। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে তৎক্ষণাৎ এসএসকেএম (SSKM) হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু, চিকিৎসা শুরুর কিছুক্ষণের মধ্যেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন দেবপ্রিয়া।
আরও পড়ুন: Big Black Spot on The Sun: সূর্যের গায়ে কালো দাগ, এর জন্য কী হতে পারে, জেনে নিন
দেবপ্রিয়া বাইপাসের ধারে মেট্রোপলিটনে তাঁর দিদির বাড়িতে এসেছিলেন। শনিবার বিকেল চারটে নাগাদ সেখানেই ঝাঁপ মারেন তিনি। পরিবারের অভিযোগ, হাসপাতালে মৃত্যুর চার ঘণ্টা পরেও ডেথ সার্টিফিকেট দিতে গড়িমসি করে কর্তৃপক্ষ। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘদিন ধরে দেবপ্রিয়া মানসিক সমস্যায় ভুগছিলেন। প্রবল হতাশার মধ্যে ছিলেন। কারণ গত ২ বছর ধরে নিয়মিত কাজ ছিল না তাঁর। সে কারণে ভয়ানক মনোকষ্টে ভুগতে ভুগতে হতাশার মধ্যে চলে গিয়েছিলেন। পুলিশ জানিয়েছে, তাঁর মৃত্যুর জন্য কোনও অভিযোগ দায়ের হয়নি কোনও পক্ষ থেকেই। এটা সাধারণ আত্মহত্যার ঘটনা বলেই পুলিশ মনে করছে।
দেবপ্রিয়ার বাবার নাম প্রদ্যোৎ বিশ্বাস। সুইসাইড নোটে দেবপ্রিয়া তাঁদের সকলের প্রতি ভালোবাসা জানিয়ে গিয়েছেন। তিনি লিখেছেন, আমি সবসময় তোমাদের মধ্যে আছি, তোমাদের মধ্যেই থাকব। কিন্তু, আমাকে ক্ষমা করে দিও যে আমাকে এটা করতে হচ্ছে। দেবপ্রিয়া আরও লিখেছেন, আমি সবসময় তোমাদের হৃদয়ে থাকব। যাদের জন্য আজ আমাকে এটা করতে হচ্ছে, তাদের মনের মধ্যেও বেঁচে থাকব। আমি কোনওদিন তাদের ক্ষমা করতে পারব না। কোনওদিন না। চিঠির শেষে আবার বাবা, মা, দিদি এবং বাড়ির বাচ্চাদের ভালোবাসা জানিয়ে নিজের নাম লিখে গিয়েছেন দেবপ্রিয়া।
কিন্তু, কাদের জন্য আত্মহত্যার পথ বেছে নিতে হল দেবপ্রিয়াকে? কাদের জন্য মানসিক অবসাদের শিকার হতে হল সুন্দরী যুবতী প্রাক্তন এই বিমানসেবিকাকে? পুলিশের কাছে এই বিষয়টাই ধোঁয়াশা লাগছে। যদিও এখনও পর্যন্ত কারও বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি পরিবারের পক্ষ থেকে।