ডায়মন্ড হারবার: হাফিজ তখন রেল লাইন (Rail line) ধরে ছুটছে। ছুটতে ছুটতে একসময় লাইনের উপর আছাড় খেয়ে পড়ল। পা দিয়ে গলগল করে রক্ত ঝরছে। ওর সেদিকে নজর নেই। মাথায় একটাই চিন্তা ধেয়ে আসা ট্রেনটিকে (Train) থামাতেই হবে। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব গেটম্যানের কাছে পৌঁছতে হবে।
দিনটা ছিল ৯ জানুয়ারি (January) সোমবার । আবির হালদার, মানোয়ার হালদার, ফিরোজ মোল্লা, নূর মহম্মদ মোল্লা, আব্দুল লস্কর হানিফ মোল্লা, সইদুল মোল্লা, ইনসান মোল্লা সিরাজুল মোল্লা ও হাফিজ, এই নয় বন্ধু সেদিন সংগ্রামপুর থেকে বল খেলে ডায়মন্ড হারবার রামচন্দ্রপুরের পথে রওনা দিয়েছিল। বিকেল চারটে চল্লিশ নাগাদ ওরা গুরুদাস নগর স্টেশনে নামে। সেই সময় তাদের চোখে পড়ে লালবাতি গুরুদাস নগর স্টেশনের মাঝে রেল লাইনের একটা বড় অংশ ভেঙে রয়েছে। তখন শিয়ালদহগামী ট্রেনটি (Train) ডায়মন্ড হারবার ছেড়ে এগিয়ে আসছে।
আরও পড়ুন: 74th Republic Day: রেড রোডে সাড়ম্বরে পালিত প্রজাতন্ত্র দিবস
নয় বন্ধুর মাথায় ঘুরছে, যাত্রীবোঝাই ট্রেনটিকে কিভাবে থামানো যায়। হাফিজ গেটম্যানকে খবর দেওয়ার জন্য ছুট লাগায়, ছুটতে গিয়েই পড়ে যাওয়ায় চোট লাগে পায়ে। এদিকে আর এক বন্ধু নূর মহম্মদের গায়ে ছিল লাল জ্যাকেট (Red Jacket), সেটি খুলে হাতে নিয়ে আটজন নাড়াতে থাকে।
ট্রেন চালক দূর থেকে সেই লাল জ্যাকেট দেখে বিপদের আঁচ পান। তিনি ট্রেনের গতি কমিয়ে দেন। লাল বাতি লেভেল ক্রসিং-এর কাছে ট্রেনটি পুরোপুরি থামিয়ে দেন চালক। ট্রেন থেকে নেমে পড়েন তিনি। ওদের কাছে এসে বিষয়টি বুঝতে পারেন।খবর যায় স্টেশনে। ইতিমধ্যে হাফিজের কাছ থেকে খবর পেয়ে গেটম্যানও চলে আসেন। রেলকর্মীরা দ্রুত ফাটল মেরামতিতে হাত লাগান। ট্রেন থেকে নেমে পড়েন অনেক যাত্রী। বন্ধ হয়ে যায় ট্রেন চলাচল। ঘণ্টাখানেক পর পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়।
সেই হাফিজদেরই বৃহস্পতিবার প্রজাতন্ত্র দিবস (Republic Day) উপলক্ষে সাহসিকতার জন্য পুরস্কৃত (Rewarded) করা হল। ডায়মন্ডহারবারের এসডিপিও তাদের হাতে পুরস্কার তুলে দেন। তাদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়।