ওয়াশিংটন: মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সিয়াটেল (Seattle) শহরে জাতপাতের বৈষম্য (Cast Discrimination) বেআইনি (Illegal) ঘোষিত হল। মঙ্গলবার (২১ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় কাউন্সিলে ভোটাভুটির পর এই ঘোষণা করে। ৬-১ ভোটে কাউন্সিলে পাশ হয় এই প্রস্তাব। এই নতুন নির্দেশিকা দেশের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে দিতে চায় সিয়াটলের (Seattle) স্থানীয় প্রশাসন।আর এই আইন প্রণয়নের অন্যতম উদ্যোক্তা ক্ষমা সাওয়ান্ত নামে এক ভারতীয় বংশোদ্ভূত (Indian Origin) মহিলা।
ক্ষমা একজন ভারতীয়-আমেরিকান রাজনীতিবিদ ও অর্থনীতিবিদ, যিনি ২০১৪ সাল থেকে সিয়াটেল সিটি কাউন্সিলে কাজ করছেন। তিনি ভারতের এক ব্রাহ্মণ পরিবারে বেড়ে উঠেছেন। ছোটবেলাতেই জাতপাতের (Cast) বৈষম্য তাঁকে নাড়া দিয়েছিল। ক্ষমা জানান, তাঁর যখন ৬ বছর বয়স তখন তিনি দেখেন বাড়ির এক কাজের লোককে গালিগালাজ দিয়ে ডাকা হচ্ছে। কেন তাঁর সঙ্গে এইরকম ব্যবহার করা হল, জানতে চাছাইল দাদু তাঁকে ধমক দিয়ে বলেছিলেন, ‘তুমি বড্ড বেশি কথা বল।’ ক্ষমার দাবি, তখন থেকেই তাঁর মনে বিষয়টি গেঁথে গিয়েছিল। পরবর্তীকালে তিনি এই জাতপাত নিয়ে কাজ করেন।
ভারত থেকে কম্পিউটার ইঞ্জিনিয়ারিং পড়া শেষ করে ক্ষমা আমেরিকায় যান অর্থনীতি নিয়ে পড়তে। তাঁর উদ্দেশ্য ছিল, ভারতের দারিদ্রের উৎস কোথায় তা বোঝা। তবে আমেরিকায় গিয়ে বিশ্বের ধনীতম শহরে জাতাপাতের বাড়াবাড়ি রকমের বিভেদ দেখে বিস্মিত হয়ে পড়েন। তারপরই তিনি এই জাতপাতের (Cast) বৈষম্য দূর করার জন্য তিনি কাজ শুরু করেন।
আরও পড়ুন: Indonesia Earthquake: ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ইন্দোনেশিয়া
ভারতে জাতিভেদ প্রথা খাতায় কলমে নিসিধ্য হলেও বাস্তব পরিসিথি সম্পূর্ণ অন্য কথা বলে। বর্তমান ভারতে জাতপাত নিয়ে বড় বেশিরকমের মাতামাতি হচ্ছে। বিশেষ করে বিজেপির জামানায় এই মাতামাতি বিষবৃক্ষের আকার নিয়েছে। ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে দলিত্রা আজও চরম বঞ্চনা এবং নিপীড়নের শিকার। পাশাপাশি রয়েছে হিন্দু মুসলিম মেরুকরণও সব মিলিয়ে নিম্ন বর্ণের বা অন্ত্যজ শ্রেণির মানুষ সব দিক দিয়ে ক্রমশ্য় পিছিয়ে যাচ্ছে।
চলতি মাসেই বম্বে আইআইটিতে দর্শন সোলাঙ্কি নামে ১৮ বছর বয়সি দলিত পড়ুয়া জাতিগত বৈষম্যের কারণে আত্মঘাতী হয়েছেন বলে অভিযোগ ওঠে।এই ঘটনার পর কেন্দ্র সরকারের দিকে আঙুল তোলে দলিত শোষণ মুক্তি মঞ্চ। তাদের আরও অভিযোগ, আইআইটি বম্বেতে গত ২০ বছরে কোনও দলিত শিক্ষক নিয়োগ করা হয়নি। লোকসভায় কেন্দ্রীয় শিক্ষামন্ত্রী দেওয়া বিবৃতি অনুযায়ী, ২০১৪ থেকে ২০২১ সালের মধ্যে সারা দেশে ১২২ জন দলিত পড়ুয়া আত্মহত্যা করেছেন। এর মধ্যে আইআইটি এবং এনআইটির পড়ুয়ার সংখ্যাই বেশি।
উল্লেখ্য, বেশ কয়েক বছর আগে হায়দরাবাদ বিশ্ববিদ্যালয়ের দলিত ছাত্র রহিত ভেমুলা এই জাতিগত বয়শমের কারণে আত্মহত্যা করেন। যা নিয়ে সারা দেশ জুড়ে আলোড়ন পড়ে।