বোলপুর: শান্তিনিকেতনের (Shantiniketan) পৌষমেলা (Pous Mela), শ্রীনিকেতনের মাঘোৎসবের পর এবার রবীন্দ্রনাথের প্রথা ভেঙে নির্ধারিত দোলপূর্ণিমার দিন অনুষ্ঠিত হচ্ছে না বসন্তোৎসব (Vasantotsav 2023)। দোলপূর্ণিমার চার দিন আগে ৩ মার্চ বসন্তোৎসব পালন করবে বিশ্বভারতী। বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে তাদের নিজস্ব ওয়েবসাইটে। স্বাভাবিকভাবেই ফের বসন্তোৎসব নিয়ে বিতর্ক শুরু হয়েছে বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে (Viswa-Bharati University)।
২০১৯ সালে শেষবার শান্তিনিকেতনে বসন্তোৎসব অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তারপর টানা তিন বছর বসন্তোৎসব পালন করেনি বিশ্বভারতী। ২০২০ সালে কোভিড পরিস্থিতির জন্য বসন্তোৎসব বন্ধ হয়েছে। তারপর থেকে বিশ্বভারতীর উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর একাধিক সিদ্ধান্ত নিয়ে তৈরি হয়েছে বিতর্ক। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের সঙ্গে ছাত্রছাত্রীদের সংঘাতও তৈরি হয়েছে। আশ্রমিক, কর্মী, অধ্যাপক, অধ্যাপিকাদের একাংশের সঙ্গেও দূরত্ব বেড়েছে উপাচার্যের।
রাজ্য সরকারের সঙ্গে বর্তমানে সংঘাত চলছে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের সঙ্গে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের জমি বিবাদ সেই সংঘাতে নয়া মাত্রা যোগ করেছে। ২০২১ ও ‘২২ সাল উপাচার্য ও বিশ্ববিদ্যালয়ের আধিকারিকরা নিজেদের মধ্যেই এই উৎসব উদযাপন করেছিলেন।
এই পরিস্থিতিতে ৭ মার্চ দোলপূর্ণিমার দিন বসন্তোৎসব করছে না বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। তার পরিবর্তে নির্ধারিত দিনের আগেই উৎসব ঘোষণা করল বিশ্বভারতীর কর্মী পরিষদ। ইতিমধ্যেই বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানানো হয়েছে, ২ মার্চ সন্ধ্যায় লোকসংস্কৃতি অনুষ্ঠান হবে। ৩ মার্চ সকালে বৈতালিক, তারপর সাতটায় শোভাযাত্রা। নানান অনুষ্ঠানের মধ্য দিয়ে বসন্তোৎসব পালন করবে বিশ্বভারতী। রবীন্দ্রনাথের আমল থেকেই দোলপূর্ণিমার দিন সাধারণত বসন্তোৎসব হয়ে আসছে। সে নিয়ে শুরু হয়েছে নানা বিতর্ক।
বিশ্বভারতীর প্রধান দুটি বড় উৎসব পৌষমেলা ও বসন্তোৎসব। রাজ্যের অন্যতম পর্যটন কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত শান্তিনিকেতন। এখানকার পর্যটন ব্যবসার সঙ্গে জড়িত মানুষজন সারা বছর অপেক্ষা করে থাকেন এই সময় দুটো পয়সার মুখ দেখবেন বলে। কিন্তু বিশ্বভারতী নির্ধারিত দিনে বসন্তোৎসব পালন না-করায় মুখ থুবড়ে পড়েছেন বোলপুর-শান্তিনিকেতনের হোটেল ব্যবসায়ীরা।
শান্তিনিকেতনে নির্ধারিত দিনে বিশ্বভারতী বসন্তোৎসব না-করা নিয়ে চূড়ান্ত ক্ষুব্ধ শান্তিনিকেতনের প্রবীণ আশ্রমিকরাও। রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরকেই শান্তিনিকেতন থেকে মুছে ফেলতে চাইছেন উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তী, মন্তব্য স্থানীয় বাসিন্দাদের।