উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা, পূর্ব মেদিনীপুর: সুন্দরবন (Sunderban) মানেই একের পর এক প্রাকৃতিক দুর্যোগের (Natural Calamity) হানা। আইলা, বুলবুল, আমফান, ইয়াসের মতো একাধিক প্রাকৃতিক দুর্যোগের সাক্ষী থেকেছে সুন্দরবনবাসী। ফের এসে গিয়েছে দুর্যোগের মরসুম। দুর্যোগ মোকাবিলায় এবার আগাম প্রস্তুতি শুরু করল প্রশাসন। শুক্রবার দক্ষিণ ২৪ পরগনা (South 24 Parganas) জেলার কাকদ্বীপ মহকুমা প্রশাসনের তরফে কাকদ্বীপের লট নম্বর ৮ চত্বরে সিভিল ডিফেন্স কর্মী, এনডিআরএফসহ অন্যান্য দুর্যোগ মোকাবিলা কর্মীদের নিয়ে উদ্ধারকাজ ও ত্রাণের একটি মহড়া (Mock Drill) হল। মহড়ায় ছিল প্রাকৃতিক দুর্যোগের সতর্কতামূলক মাইকিং প্রচার, পাশাপাশি দুর্যোগের পরে উদ্ধারকাজ সহ দুর্যোগ মোকাবিলা সংক্রান্ত একাধিক বিষয় নিয়ে মহড়া।
একইভাবে সুন্দরবনে গোয়েন্দা কুকুর, লাইফ জ্যাকেট, হেলমেট, দমকল নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী যৌথ মহড়া দেয়। এই দলে মোট ২৮৪ জন সদস্য ছিলেন। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্য ছিলেন ৪৭ জন, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা দলের সদস্য ছিলেন ৩৭ জন, সিভিল ডিফেন্সের ২০০ জন সদস্য ছিলেন। উত্তর ২৪ পরগনার (North 24 Parganas) বসিরহাটের উপকূলবর্তী ও পাঁচটি ব্লক মিনাখাঁ, সন্দেশখালি ১ ব্লক, সন্দেশখালি ২ নম্বর ব্লক, হাসনাবাদ, হিঙ্গলগঞ্জ এই ব্লকগুলোতে মহড়া হয়। একদিকে রায়মঙ্গল, অন্যদিকে ইছামতী,কালিন্দী, বেতনি নদীতে মহড়া হল। কোনও রকম প্রাকৃতিক বিপর্যয় হলে দ্রুত মানুষকে উদ্ধার করে নির্দিষ্ট নিরাপদ জায়গায় নিয়ে যাওয়া হবে। তার জন্য পুলিশ কুকুরকে কীভাবে কাজে লাগানো হবে তারও মহড়া চলল।
আরও পড়ুন: TET Scam | সাগরে মন্ত্রী ও দুই জেলা পরিষদ সদস্যের বিরুদ্ধে পোস্টার
অন্যদিকে গুরুতর আহত হলে কীভাবে স্বাস্থ্য শিবিরে আনা হবে, নদীতে পড়ে গেলে কীভাবে উদ্ধার করতে হবে, কীভাবে দ্রুত চিকিৎসা পরিষেবা দিতে হবে, তার মহড়া চলল সুন্দরবনের ব্লকগুলোতে। প্রতিবছরি দুর্যোগের একই ছবি দেখা যায় উপকূলবর্তী এলাকাগুলোতে। এছাড়াও এদিন গ্রামে গ্রামে বিপর্যয় মোকাবিলা দল মাইকিং প্রচার করলল, যাতে স্থানীয় পঞ্চায়েত ও বিডিও কীভাবে যোগাযোগ করবেন, তার একটি চূড়ান্ত রূপরেখা তৈরি হলল এই মহড়ার মধ্য দিয়ে।
অন্যদিকে, পূর্ব মেদিনীপুর (East Midnapore) জেলা জুড়েও বিপর্যয় মোকাবিলা দফতরের পক্ষ থেকে চলে মহড়া। এদিন পূর্ব মেদিনীপুরের উপকূলবর্তী এলাকায় এই মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। বিভিন্ন জায়গায় গ্রামগুলিতে এনডিআরএফ, বন, দমকল, স্বাস্থ্য, বিদ্যুৎ প্রভৃতি বিভিন্ন দফতরের আধিকারিকদের নিয়ে মহড়া অনুষ্ঠিত হয়। তবে আবগারি দফতর ও এনডিআরএফ ও নুলিয়ারা যখন দত্তপুরে যান, তখন স্থানীয় মানুষ তাঁদেরকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান। তাঁদের দাবি, প্রকৃতপক্ষে যখন এই ঘূর্ণিঝড় আসে তখন এদের দেখা পাওয়া যায় না।। যদিও আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সাধারণ মানুষের কিছু ক্ষোভ-বিক্ষোভ রয়েছে তাই তারা হয়তো বহিঃপ্রকাশ করেছেন।