রিসড়া: রামনবমীর মিছিল ঘিরে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় অশান্তির পরিবেশ তৈরি হয়। পুলিশি রিপোর্টে দেখা যাচ্ছে, ২ এপ্রিল রামনবমীর মিছিল থেকে স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্দেশে অশালীন ভাষার প্রয়োগ করা হয়। ইঁট-পাথর ছোড়া হয়। মিছিলে তলোয়ার, আগ্নেয়াস্ত্র প্রদর্শন করা হয়, এরই সঙ্গে বেআইনিভাবে অনেক আওয়াজ করে ডিজে বাজানো হয়। তখন স্থানীয় বাসিন্দারা ইঁট-পাথর ছোড়া শুরু করেন বলে জানাগিয়েছে।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে পুলিশকে হিমশিম খেয়ে যায়।পুলিশ এতে কড়া পদক্ষেপ নিলে পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ হয়ে ওঠে। পুলিশকে বাঁশ, লাঠি, ইঁট-পাথর দিয়ে আক্রমন করা হয়। এদিন একটি সরকারি গাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
এদিনের পর ফের ৩ এপ্রিল আবার পরিস্থিতি উতপ্ত হয়ে ওঠে। এদিন সন্ধ্যা ৫:৪৫ নাগাদ পুলিশের একটি বড় বাহিনী শান্তি ফেরানোর লক্ষ্যে টহল দিতে দিতে রিষড়া এলাকার চার নম্বর রেল গেটের কাছে পৌঁছায়। সেই সময় ৫০০ থেকে ৬০০ স্থানীয় মানুষ জমায়েত করে পুলিশের উদ্দেশে অশালীন মন্তব্য করতে থাকে। এরপর হঠাৎই আক্রমণাত্মক হয়ে ওঠে এবং পুলিশকে উদ্দেশ্য করে ইঁট-পাথর ছুঁড়তে শুরু করে। তখন পুলিশ পরিস্থিতি সামাল দিতে আরও পুলিশ বাহিনী ডেকে নেই, এবং উন্মত্ত জনতাকে শান্ত করার সব রকম চেষ্টা করে। কিন্তু জনতা তাতে আরও ক্ষিপ্ত হয়ে বাঁশ, লাঠি, ইঁট পাথর দিয়ে পুলিশকে আক্রমণ করে।একটি সরকারি গাড়িতে আগুন লাগিয়ে দেয়।
আরও পড়ুন: Abhishek Banerjee | Alipurduar | শনিবার অভিষেকের সফর ঘিরে সেজে উঠেছে আলিপুরদুয়ার
এই ঘটানায় পুলিশ বাধ্য হয়ে কাঁদানে গ্যাস, স্টান-গ্রেনেড, রাবার বুলেট ব্যবহার করে। এর ফলে জনতা আরও হিংস্র হয়ে উঠে, রাগে-ক্ষোভে ফেটে পড়ে। শুরু হয় দুপক্ষের সংঘর্ষ, এতে বেশ কিছু পুলিশকর্মী আহত হন, অনেকের রক্তপাতও হয়েছে বলে সূত্রে খবর।
উল্লেখ্য, রামনবমীর (Rama NaVami) দিন পশ্চিমবঙ্গে যে অশান্তির আবহ তৈরি হয়েছিল, তা খতিয়ে দেখতে আসছে বেসরকারি স্বেচ্চাসেবী সংস্থার (NGO) একটি প্রতিনিধি দল। আগামী শনিবার এই প্রতিনিধি দল বর্তমান পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে প্রথমে রিষড়ায় যাবে। সেখানকার ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারদের সঙ্গে কথা বলবে। পরেরদিন অর্থাৎ ৯ এপ্রিল তাঁরা যাবেন কাজীডাঙায়। ১০ এপ্রিল হাওড়ার বিস্তীর্ণ অঞ্চল ঘুরে দেখবেন ওই প্রতিনিধিরা। সেখানকার মানুষের সঙ্গে কথা বলে রামনবমীরদিনের ঘটনার বিবরণ জানবেন তাঁরা। এরপর বিকেলে তাঁরা হাওড়া সদরের পুলিশ সুপারের সঙ্গে বৈঠকও করবেন বলে জানা গিয়েছে। পরিস্থিতি খতিয়ে দেখে রিপোর্ট তৈরি করবে ওই স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন।
প্রসঙ্গত, হাওড়ায় (Howrah) রামনবমী (Ramnabami) ঘিরে অশান্তির ঘটনায় তৃণমূলের(TMC) সর্বভারতীয় সাধারন সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়(Abhishek Banerjee) বিজেপি-কে কাঠগড়ায় তুললেন। তাঁর দাবি, বাংলায় ২০১৬ সালে বিজেপি বাংলার বিধানসভায় মাত্র ৩টি আসন জিতেছিল। তারপর থেকেই বাংলার বুকে ধারাবাহিক ভাবে প্রতি বছর রামনবমী ঘিরে অশান্তির শুরু। তার আগে বাংলায় রামনবমীতে কোনও অশান্তি হতো না। বিজেপি’র তরফেই রীতিমত চক্রান্ত করে রামনবমীর দিনে এইসব অশান্তির ঘটনা ঘটানো হচ্ছে বলে জানিয়েছেন।