ইসলামাবাদ: ২০২৩ সালের চতুর্থ মাস চলছে। তিন মাস অতিক্রান্ত। চলতি বছরের শুরু থেকেই পাকিস্তান (Pakistan) যেমন অর্থনৈতিক সঙ্কটে (Economic Crisis) ভুগছে, তেমনই সন্ত্রাসবাদী হানায় দেশ ক্ষতবিক্ষত হয়েছে। চলতি মাসে এই নিয়ে একটি অধ্যয়ন সংক্রান্ত রিপোর্ট প্রকাশ্যে এসেছে। তাতে বলা হয়েছে, চলতি বছরে প্রথম তিন মাস অর্থাৎ জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে পাকিস্তানে জঙ্গি হামলা (Militant Attacks) এবং সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে (Counterterrorism Operations) ৮৫৪ জন হতাহতের ঘটনা ঘটেছে।
সেন্টার ফর রিসার্চ অ্যান্ড সিকিউরিটি স্টাডিজ (Centre for Research and Security Studies) এবিষয়ে তথ্য প্রকাশ করেছে। পরিসংখ্যান অনুসারে, ২০২৩ সালের জানুয়ারি থেকে মার্চের মধ্যে পাকিস্তানে ২১০টি সন্ত্রাসী হামলা ও সন্ত্রাসবিরোধী অভিযানে ৩৫৮টি মৃত্যু হয়েছে এবং ৪৯৬ জন জখম হয়েছেন।
আরও পড়ুন: Rahul Gandhi | ‘অভিশপ্ত’ কোলারে ফের ‘মোদানি’ ভূতের প্ল্যানচেট রাহুলের
The first quarter of 2023 records 854 casualties which account for almost half of the casualties witnessed during the entire preceding year, @CRSSpak‘s Q1 2023 Security Report.
Our Annual Security Report 2022 had predicted Pakistan’s likeliness to endure more violence this year. pic.twitter.com/EUQS174DOj— The Center for Research and Security Studies (@CRSSpak) April 10, 2023
সেদেশের সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্ট বলছে, ২০২২ সালে শুধুমাত্র ইসলামাবাদে (Islamabad) যতগুলি প্রাণহানি (Death) এবং আহত (Injury) হওয়ার ঘটনা ঘটেছিল, সেই তুলনায় গত তিনমাসে পাকিস্তানে যে হতাহতের ঘটনা ঘটেছে, তার অর্ধেক। প্রকাশিত রিপোর্ট এটাও বলছে, সেদেশে হিংসামূলক কর্মকাণ্ডের সবচেয়ে বেশি ঘটনা ঘটেছে খাইবার পাখতুনখোয়া (Khyber Pakhtunkhwa) প্রদেশে। তারপরেই তালিকায় রয়েছে বালুচিস্তান (Balochistan), সিন্ধ (Sindh), পাঞ্জাব (Punjab) এবং ইসলামাবাদ (Islamabad)।
গত জানুয়ারিতে পাকিস্তানে যতজন নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্য মারা গিয়েছেন, সেই সংখ্যা গত একদশকে সবচেয়ে বেশি। সন্ত্রাসী সংগঠন তেহরিক-ই-তালিবান-ই-পাকিস্তান (Tehreek-e-Taliban-e-Pakistan – TTP) প্রায় ২২টি হামলা চালিয়েছে, তাতে ১০৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন।
আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত রিপোর্টে বলা হচ্ছে, পাকিস্তানে চলতি বছরে যেভাবে হিংসামূলক কর্মকাণ্ড (Violence) বৃদ্ধি পেয়েছে, তা কোনও নতুন ঘটনা নয়। অবাক হওয়ার মতো বিষয় তো নয়ই। কেন না গত ডিসেম্বর সেদেশে প্রচুর রক্তক্ষয় ঘটেছে। গত একদশকে ২০২২-এর ডিসেম্বর মাসটি ছিল সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী। গত জানুয়ারিতে ১১১ জন নিরাপত্তা কর্মী (Security Personnel) মারা গিয়েছেন। ২০১৪ সালের পর এটি দ্বিতীয় সর্বোচ্চ। ২০১৪ সালের জানুয়ারিতে ১১৮ জন মারা গিয়েছিল।
গত ৩০ জানুয়ারি পেশোরের একটি মসজিদে (Mosque) বোমা বিস্ফোরণে ৮৪ জন পুলিশ অফিসার প্রাণ হারান। ওই হামলার দায় স্বীকার করেছিল টিটিপি’রই একটি গোষ্ঠী। তবে হিংসাজনিত কারণে সাধারণ নাগরিকের (Citizen) মৃত্যু সংখ্যা কমেছে। গত তিন মাসে ৬৩ জন সাধারণ পাক নাগরিকের মৃত্যু হয়েছে, গত বছর একই সময়পর্বে ১৩৬ জন মারা গিয়েছিলেন। কিন্তু নিরাপত্তা ও সরকারি আধিকারিকের প্রাণহানির সংখ্যা দ্বিগুণ হয়েছে। গত বছর প্রথম ত্রৈমাসিকে যেখানে ৮৮ জন প্রাণ হারিয়েছিলেন, এবার ১৬৭ জন মারা গিয়েছেন।