নয়াদিল্লি: এপ্রিল মাস জুড়ে তীব্র দহনজ্বালায় পুড়েছে গোটা দেশ৷ মে মাসেও তীব্র গরমে জ্বলবে দেশের বিভিন্ন রাজ্য। আবহাওয়া বিজ্ঞানীদের পূর্বাভাস আগামী মে মাসে পূর্ব ও পশ্চিম-মধ্য ভারতের তাপমাত্রা (Temperatures in East and West-Central India) ঊর্ধ্বমুখী থাকবে, যা অন্য বছরের তুলনায় স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি থাকবে। এর ফলে একদিকে বিদ্যুৎ সরবরাহের উপরে চাপ পড়বে, অন্যদিকে মানুষের জীবনের হানির ঝুঁকি বাড়ছে৷
দেশের পূর্বাঞ্চলীয় অংশ যেমন বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং ওড়িশায় মে মাসে স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি তাপমাত্রা থাকে। কিছু কিছু জায়গায় তাপপ্রবাহের (Heat Wave) সম্ভাবনা রয়েছে। গরম বাড়ার কারণে বেশ কিছু অঞ্চলে আবহাওয়া শুষ্কও হয়ে যাবে।শুক্রবার আবহাওয়া অফিস এ তথ্য জানিয়েছে। উত্তর-পশ্চিম এবং পশ্চিম-মধ্য ভারতের কিছু অংশে রাতের তাপমাত্রা বেশি থাকবে। দিনের বেলা স্বাভাবিকের চেয়ে কম তাপমাত্রার সম্ভাবনা রয়েছে। ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (IMD) মে মাসের তাপমাত্রা এবং বৃষ্টিপাত নিয়ে আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, মে মাসে দেশের উত্তর-পশ্চিম ও পশ্চিম মধ্যাঞ্চলে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাত হবে। পাঞ্জাব, হরিয়ানা, রাজস্থান এবং এর কিছু অংশ সহ স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতের প্রত্যাশিত ছিল।
উত্তর-পূর্বাঞ্চলীয় অঞ্চল কেরালা, অন্ধ্রপ্রদেশ এবং দক্ষিণ কর্ণাটকের বড় অংশে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হবে বলে আশা করা হচ্ছে। আবহাওয়া অফিসের মতে, মে মাসে দেশের গড় বৃষ্টিপাত গড় ৬১.৪ মিলিমিটারের ৯১-১০০ শতাংশ। বিহার, ঝাড়খণ্ড, ওড়িশার বেশিরভাগ অংশে স্বাভাবিকের থেকে উপরের দিকেই থাকবে পারদ। গাঙ্গেয় পশ্চিমবঙ্গ, পূর্ব উত্তর প্রদেশ, উপকূলীয় অন্ধ্রপ্রদেশ এবং উত্তরের কিছু অংশে মে মাসে ছত্তিশগড়, পূর্ব মধ্য প্রদেশ, তেলেঙ্গানা এবং উপকূলীয় গুজরাট গরম বাড়বে, তাপমাত্রার পারদ ঊর্ধ্বমুখী থাকায় লু বওয়ার সম্ভাবনা থাকছে।
আইএমডি-র মৃত্যুঞ্জয় মহাপাত্র বলেছেন, যে নিরপেক্ষ এল নিনোর অবস্থা নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চলে রয়েছে। মে মাস পর্যন্ত অব্যাহত থাকবে বলে আশা করা এর প্রভাবে বর্ষার মরসুম ওই অঞ্চলগুলো উষ্ণ হতে পারে। নিরক্ষীয় প্রশান্ত মহাসাগরের উষ্ণতা ভারতে মৌসুমি বৃষ্টিপাতের উপর প্রভাব ফেলতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। তবে অন্যান্য কারণ যেমন ভারত মহাসাগরে সমুদ্র পৃষ্ঠের তাপমাত্রা বাড়া কমায় ফলে আবহাওয়াকে প্রভাবিত করে। এই মাসের শুরুর দিকে, আইএমডি একটি স্বাভাবিক বর্ষা মরসুমের পূর্বাভাস দিয়েছিল।
তাপমাত্রা বৃদ্ধি সঙ্গে সঙ্গে গরম বাড়াবে, তাপপ্রবাহের সম্ভাবনাও বাড়বে। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বিদ্যুতের চাহিদাও হু হু করে বাড়বে৷ এর ফলে বাড়বে লোডশেডিং-এর সমস্যা। অন্যদিকে রুজিরোজগারের তাগিদে তীব্র গরমকে উপেক্ষা করে পথে ঘাটে নামতে হচ্ছে মানুষকে। চড়া রোদে অসুস্থ হয়ে পড়ছে বহু মানুষ। গরমে অসুস্থ হয়ে মৃত্যুর আশঙ্কাও থাকছে৷ শুষ্ক আবহাওয়াও প্রাণহানির কারণ হয়ে দাঁড়াতে পারে৷ একদিকে শুষ্ক গরম আর পরিমাণের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত চাষবাসের চরম ক্ষতি করে। যার জেরে অর্থনৈতিক সংকটের একটা আশঙ্কা থেকে যাচ্ছে।