কলকাতা: কালিয়াগঞ্জে (Kaliyaganjh) নাবালিকা খুন ও ধর্ষণের মামলায় সিট গঠন করল কলকাতা হাইকোর্ট (Calcutta High Court)। বৃহস্পতিবার বিচারপতি রাজাশেখর মান্থার (Raja Sekhar Mantha) নির্দেশ, ওই সিটে থাকবেন রাজ্যের আইপিএস অফিসার দময়ন্তী সেন এবং দুই প্রাক্তন আইপিএস অফিসার পঙ্কজ দত্ত ও উপেন বিশ্বাস। তদন্তও হবে আদালতের নজরদারিতে। সিট প্রয়োজন মনে করলে মৃতদেহের দ্বিতীয়বার ময়নাতদন্ত করতে পারে। আদালতের নজরদারিতে তদন্তও হবে বলে জানিয়ে দেন বিচারপতি।
রাজ্যের আইনজীবী পঙ্কজ দত্তের নাম নিয়ে আপত্তি তোলেন। তিনি বলেন, তিনি বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে সরকার বিরোধী কথা বলেন। তাঁর নাম বাদ দেওয়া হোক। আইনজীবী আরও জানান, দময়ন্তী সেন ব্যক্তিগত কারণে তদন্তের কাজ করতে পারবেন না। বিচারপতি বলেন, তিনি তদন্ত না করতে পারলে আইনজীবীর মাধ্যমে আদালতকে জানাবেন। আদালত তখন বিষয়টি ভাববে। বিচারপতির আরও নির্দেশ, সিটের সদস্যদের ফৌজদারি আইন অনুযায়ী ক্ষমতা থাকবে।
আরও পড়ুন: Kolkata Metro | নিমেষেই বিমানবন্দর স্টেশন থেকে এয়ারপোর্ট পৌঁছবেন যাত্রীরা, জানুন কীভাবে
মামলার সঙ্গে যুক্ত সকলের কাছে বিচারপতির অনুরোধ, বিষয়টি নিয়ে রাজনীতি করবেন না। একই সঙ্গে তাঁর নির্দেশ, সিটের সদস্যরা সংবাদমাধ্যমের কাছে কোনও মন্তব্য করতে পারবেন না। মামলার পরবর্তী শুনানি ২০ জুন। আদালত পরিষ্কার জানিয়েছে, সিট কেবলমাত্র ওই নাবালিকার মৃত্যুর ঘটনার তদন্ত করবে।
পরিবারের পক্ষ থেকে কেন্দ্রীয় বাহিনীর নিরাপত্তা চাওয়া হয়েছিল। এদিন সেই আবেদন খারিজ করে দিয়ে বিচারপতি জানান, রাজ্য পুলিশই ওই পরিবারের সদস্যদের নিরাপত্তা দেবে। তিনি বলেন, সত্যটা সামনে আসা দরকার।
আদালত আরও জানায়, রাজ্য সরকারকে সিটের তদন্তে সাহায্য করতে হবে। পরবর্তী শুনানির আগে রাজ্য সরকারকে প্রাথমিক রিপোর্ট পেশ করতে হবে। কেস-ডায়েরি এবং অন্যান্য নথি দ্রুত সিটকে দিয়ে দিতে হবে। বিচারপতি এদিন আরও বলেন, সিটের রিপোর্ট পছন্দ না হলে আদালত তা গ্রহণ করবে না।
প্রাক্তন আইপিএস অফিসার পঙ্কজ দত্ত এক সময় রাজ্য পুলিশের আইজি পদে ছিলেন। অবসর গ্রহণের পর অন্যান্য আইএএস, আইপিএস অফিসারদের মতো পঙ্কজের কোনও পুনর্নিয়োগ হয়নি। সম্প্রতি তিনি বিভিন্ন বেসরকারি টিভি চ্যানেলে রাজ্য সরকারের সমালোচনা করেন প্রায়ই। কিছুদিন আগে রাজ্য সরকার তাঁর নিরাপত্তা প্রত্যাহার করে নেয়। তা নিয়ে পঙ্কজ আদালতের দ্বারস্থ হন। আদালতের নির্দেশ পঙ্কজকে নিরাপত্তা ফিরিয়ে দিতে হবে। সিটের অপর সদস্য উপেন বিশ্বাসও প্রাক্তন পুলিশ কর্তা। তিনি এক সময় সিবিআইয়ের যুগ্ম অধিকর্তা ছিলেন। তাঁর আমলেই বিহারের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী লালুপ্রসাদ যাদব পশুখাদ্য কেলেঙ্কারিতে গ্রেফতার হন। সম্প্রতি শিক্ষার নিয়োগ দুর্নীতিতেও উপেন বিশ্বাস বিভিন্ন বিষয়ে আদালতকে পরামর্শ দেন।