কলকাতা: রাজ্য নির্বাচন কমিশন দফতরের সামনে ধুন্ধুমার । বুধবার বিকেলে মনোনয়ন দিতে না পারা দলীয় প্রার্থীদের নিয়ে নির্বাচন কমিশনের সামনে অবস্থানে বসে বিজেপি। বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী এবং দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদারের নেতৃত্বে দীর্ঘক্ষণ চলে এই অবস্থান। শুভেন্দুর হুমকি, যে প্রার্থীরা শাসকদলের বাধায় মনোনয়ন পেশ করতে পারেননি, তাঁরা আজ থেকেই কমিশনের সামনে লাইন দেবেন। হাইকোর্টের নির্দেশ মেনে তাঁরা অভিযোগপত্র জমা দেবেন। কমিশনকে এখানেই মনোনয়ন পেশের ব্যবস্থা করতে হবে। তিনি বলেন, আগামিকাল কমিশনের সামনে হাজার হাজার প্রার্থী লাইন পড়বে। এদিন হাতে পোস্টার প্ল্যাকার্ড নিয়ে বিজেপির টিকিটপ্রত্যাশী প্রার্থী এবং নেতা সমর্থকরা অবস্থানে বসে পড়েন।
দলের রাজ্য সভাপতি সুকান্ত মজুমদার এদিন বসিরহাটে গিয়েছিলেন মনোনয়নের পরিস্থিতি খতিয়ে দেখতে। তাঁর কাছেও বিভিন্ন এলাকা থেকে অভিযোগ আসে বিজেপির প্রার্থীদের মনোনয়নে বাধা দিচ্ছে শাসকদল। বসিরহাটে বসেই সুকান্ত ঘোষণা করেন মনোনয়ন পেশ করতে না পারা সব প্রার্থীকে নিয়ে তিনি কমিশন দফতর ঘেরাও করবেন। বসিরহাট থেকে বাসে ওই প্রার্থীদের নিয়ে কলকাতায় আসেন সুকান্ত।
আরও পড়ুন: Kaliyaganj | HC | কালিয়াগঞ্জ নাবালিকা খুনের সিটে স্থগিতাদেশ প্রধান বিচারপতির
এদিন দুপুর থেকেই রডন স্ট্রিটে রাজ্য নির্বাচন কমিশনের দফতর পুলিশ দিয়ে ঘিরে ফেলা হয়। গোটা তল্লাট ব্যারিকেডে মুড়ে দেওয়া হয়। সুকান্তর আগেই সেখানে এসে পৌঁছন শুভেন্দু। তিনি ব্যারিকেডের দড়ি খুলে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। যদিও কমিশনের মূল গেট তালাবন্ধ করা ছিল। সেখানে ছিল কড়া পুলিশ প্রহরা। শুভেন্দু তবু প্রার্থীদের নিয়ে ভিতরে ঢোকার চেষ্টা করেন। সেখানে দাঁড়িয়েও বসিরহাট, সন্দেশখালির বিজেপি প্রার্থীরা একযোগে অভিযোগ জানান শাসকদলের তাণ্ডবের জেরে তাঁরা কেউ মনোনয়নপত্র পেশ করতে পারেননি। শুভেন্দু বলেন, হাইকোর্টের পরিষ্কার নির্দেশ আছে মনোনয়ন পেশ করতে না পারলে কমিশনকে রিড্রেসাল সেল খুলতে হবে। সেই নির্দেশ না মানলে আমরা আবার আদালতে যাব। তাঁর অভিযোগ, রাজ্য নির্বাচন কমিশনার রাজীব সিনহা মুখ্যমন্ত্রীর হাতের পুতুল। তাঁর অঙ্গুলিহেলনেই কমিশনার কাজ করছেন। শুভেন্দু বলেন, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে মনে রাখতে হবে এটা ২০১৩ বা ২০১৮ সালের পঞ্চায়েত ভোট নয়। এটা ২০২৩ সালের ভোট। আমরা এক ইঞ্চি জমি ছাড়ব না। কমিশনকে এখানেই মনোনয়ন পেশের ব্যবস্থা করতে হবে।
সুকান্ত বলেন, মনোনয়নের আর মাত্র একদিন বাকি। কিন্তু, এখনও বহু আসনে মনোনয়নপত্র পেশ করা যায়নি। মনোনয়নের পর্বেই শাসকদল যে বোমা গুলির প্রদর্শন শুরু করেছে, ভোটের দিন কী হবে ভাবলেও শিউরে উঠতে হচ্ছে। এবার কিছুতেই তৃণমূলকে ভোট লুঠ করতে দেওয়া হবে না। তিনি এবং শুভেন্দু দুজনেই বলেন, যতক্ষণ না কমিশন অবাধ ও শান্তিপূর্ণ ভোটের আশ্বাস না দিচ্ছে ততক্ষণ অবস্থান চলবে।