বালুরঘাট: দুই বছরের শিশুকে (Child) নির্মমভাবে খুন। দেহ উদ্ধারের তিনদিন পরেই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করল বালুরঘাট (Balurghat) থানার পুলিশ (Police)। শনিবার সকালেই ঘটনায় মূল অভিযুক্ত শাবনূর বিবিকে সঙ্গে নিয়ে ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের দক্ষিন বিজয়শ্রী গ্রামে গিয়ে ওই ঘটনার পুনর্নির্মাণ করে পুলিশ। উপস্থিত ছিলেন আইসি শান্তিনাথ পাঁজা সহ অন্য পুলিশ অফিসাররা। ঘটনাকে ঘিরে এদিন সকাল থেকে উত্তেজনা ছিল এলাকায়। গত বুধবার থেকেই এলাকায় পুলিশ ক্যাম্প বসিয়েছে দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা পুলিশ।
এদিকে এই ঘটনায় অভিযুক্ত শাবনূর বিবির ফাঁসির দাবি জানিয়েছেন মৃত শিশুকন্যার মা সারবানু মণ্ডল। শিশুর পরিবারের দাবি, তাদের মেয়েকে অপহরণের ছক করেছিল শাবনূর। তা করতে না পেরেই ওই দুধের শিশুকে খুন করে জঙ্গলে ফেলে দেয় সে। খুনের বিষয়টি প্রকাশ্যে আসার পরই ক্ষোভে ফুঁসছে গোটা গ্রাম। সকলেই শাবনূরের ফাঁসির দাবিতে সোচ্চার। ঘটনার পর থেকে এলাকায় উত্তেজনা রয়েছে। গ্রামে চলছে ২৪ ঘন্টার জন্য পুলিশি টহলদারি।
আরও পড়ুন:সৌরভ সহ ধৃতদের দফায় দফায় জিজ্ঞাসাবাদ সিপির
প্রসঙ্গত, বালুরঘাট শহর লাগোয়া ডাঙা গ্রাম পঞ্চায়েতের বিজয়শ্রী গ্রামের বাসিন্দা সারবানু মণ্ডলের একমাত্র শিশুকন্যা সোমবার বিকেলে নিখোঁজ হয়ে যায়। বাবা আইফুল মণ্ডল শিশুর জন্মের আগেই মায়ের সঙ্গে সমস্ত সম্পর্ক ত্যাগ করে অন্যত্র চলে যান। তারপর থেকে বাপের বাড়িতেই মেয়েকে নিয়ে থাকেন সারবানু। মা কাজে যাওয়ায় প্রতিদিনের মতো এদিনও শিশুটি বাড়ির সামনে খেলছিল। সেখান থেকেই নিখোঁজ হয়ে যায় সে। কোথাও খোঁজ না পেয়ে বালুরঘাট থানায় লিখিত অভিযোগ দায়ের করে পরিবার। অভিযোগের ভিত্তিতে বুধবার পুলিশ কুকুর নিয়ে এলাকায় তল্লাশি চালায়। স্থানীয় একটি পুকুরের পাশে ঝোপের মধ্যে থেকে পচাগলা অবস্থায় ওই শিশুর দেহ উদ্ধার করে পুলিশ।
তদন্তে নেমে বালুরঘাট থানার পুলিশ সারবানুদের প্রতিবেশী শাবনূর বিবিকে গ্রেফতার করে। সে এখন পুলিশের হেফাজতেই রয়েছে। জেরার মুখে শাবনূর স্বীকার করে, সেই শিশুটিকে খুন করেছে। সকলের নজর এড়িয়ে তাকে নিয়ে গিয়ে বাড়িতে বস্তাবন্দি করে রাখে। পুলিশের অনুমান, পাচার করার জন্যই শিশুটিকে অপহরণ করা হয়েছিল। সোমবার রাত থেকেই পুলিশের নজরদারিও চলছিল। সেই নজরদারি এড়িয়েই কোনও এক ফাঁকে তাকে খুন করে দেহটি ঝোপে ফেলে দেয় শাবনূর।
বাসিন্দাদের অভিযোগ, পাচারের উদ্দেশ্যেই ছোট্ট ওই শিশুটিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তাকে মেরে ফেলে শাবনূর। স্থানীয়রা জানান, শাবনূরের অত্যাচারে গত কয়েকমাস ধরে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছেন তাঁরা। একাধিক বাড়িতে চুরির অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। গত তিন মাসে বেশ কয়েকটি বাড়িতে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাতেও শাবনূরের নাম জড়িয়েছে। শনিবার ফের আদালতে তোলা হলে তাকে ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দেওয়া হয়।