বারুইপুর: চোখে স্বপ্নের ভিড়। শরতের নীল আকাশে ছেঁড়া, ছেঁড়া সাদা মেঘের মতো ভাসার ইচ্ছে। তবে পায়ে বাঁধা দারিদ্রের শিকল। বাবাকে হারানোর পর থেকেই ‘নিজের পায়ে দাঁড়াতে হবে’। দিনে দিনে বেড়েছে প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম। তবুও প্রতিমা গড়েই পরিবারের দুর্গতি কাটানোর আশা বারুইপুরের (Baruipur) তপন ও স্বপনের। বাবার স্বপ্নকে সঙ্গে নিয়ে চলছে মুর্তি গড়ার কাজ। প্রতিকূলতাকে সঙ্গে লড়াই করে প্রতিমা গড়ে চলেছেন তপন ও স্বপন।
এবার দুর্গাপুজোয় (Durga Puja) পরিবারের দুর্গতি দূর করতে প্রতিমা তৈরি করছেন বারুইপুর পূর্বে হিলগড়ি তালতলা প্রতিমা শিল্পী তপন ও স্বপন তারা কুমোরটুলি শিল্পীদের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে তৈরি করেন প্রতিম। তার উপরে কাঁচামালের উচ্চ মূল্য এবং কম পারিশ্রমিকের কারণে প্রতিমা নির্মাণ ও বিক্রিতে ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে প্রতিমা শিল্পীরা প্রতিমা তৈরি করে নিজেদের এবং পরিবারের অর্থনৈতিক অবস্থার উন্নতির করার চেষ্টা করছেন, প্রতিমা তৈরির জন্য প্রয়োজনীয় মাটি, রং, ও অন্যান্য উপকরণের দাম বেড়ে যাওয়ায় কারিগরদের খরচও বেড়েছে। প্রতিমা তৈরির মজুরি অনেক কম, যা দিয়ে কাঁচামালের খরচ মেটানো এবং পারিশ্রমিক পাওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। বাধ্য হয়ে আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়ে বাবার স্মৃতি ধরে রাখতে দেনা করে কাজ করতে হচ্ছে , নেই কোন সরকারি সাহায্য, করোনা মহামারীর আগে প্রতিমা তৈরি করে ভালো আয় করা গেলেও, চলমান পরিস্থিতিতে প্রতিমার দাম কমে গিয়েছে এবং এই পেশায় লাভের পরিমাণ কমেছে, যা আমাদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
আরও পড়ুন: পাঁচ হাজার নারকেলের মালাই দিয়ে দুর্গা প্রতিমা গড়ে নজির গৃহবধূর
আর্থিক অনটনের মধ্যে দিয়েও প্রতিমা তৈরি করে স্বাবলম্বী হওয়ার স্বপ্ন দেখছেন তারা বাইরে থেকে টাকা ধার করে এনেই তুলছো প্রতিমা গড়ার কাজ কারণ জল ছাড়া বাকি সব কিনতে হয়। প্রতিমা তৈরির সরঞ্জামের দাম দ্বিগুণ হয়েছে। এ বছর আমাকে ৮০০ টাকায় (৮০ পিস) খড় কিনতে হয়েছে যা গত বছর ছিল ৪৫০ টাকা। সুতলি (দড়ি) প্রতি ১৪৫ টাকা কেজি, গত বছর প্রতি কেজি ছিল ১২০ টাকা। ট্রাক্টর প্রতি মাটির দাম ৫০০ টাকা, গত বছরের ৪০০ টাকা থেকে বেশি। পেরেকের দাম প্রতি কেজি ১৪০ টাকা, যা গত বছর ছিল ৮০ টাকা। ২০০ টাকা মূল্যের বাঁশ কিনতে হয়েছে ৩৫০ টাকায়। রঙ দাম বেড়েছে লিটারে ৮০ টাকা। এছাড়া শ্রমিকদের মজুরি বেড়েছে ৫০০ থেকে ৭০০ টাকা। সব মিলিয়ে আমাদের কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে প্রতিমা তৈরি করতে হচ্ছে।
অন্য খবর দেখুন