অধ্যাপক, শিক্ষাকর্মীদের আবেদনে অবশেষে ১৯ ঘণ্টা পর বৃহস্পতিবার রাতে অবস্থান তুলে নিলেন যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ, সহ উপাচার্য অমিতাভ দত্ত, রেজিস্ট্রার স্নেহমঞ্জু বসু সহ একাধিক আধিকারিক ও অধ্যাপক। তাঁরা জানিয়েছেন, এরপর আবারও যদি পড়ুয়ারা অধ্যাপকদের কুরুচিকর মন্তব্য ও হেনস্তা করার চেষ্টা করেন তাহলে ফের তাঁরা অবস্থানে বসবেন।
বুধবার রাত থেকে ধরনায় (Dharna) বসেন বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য বুদ্ধদেব সাউ-সহ একাধিক কর্তা। মূলত পড়ুয়াদের বিরুদ্ধে নিগ্রহ করার অভিযোগ তুলেই তাঁরা অরবিন্দ ভবনের সামনে ধরনা আন্দোলন শুরু করেন।
আরও পড়ুন:
সূত্রের খবর, বুধবার দুপুরে হঠাৎই ইসির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল ছাত্রমৃত্যু এবং ডেঙ্গি ছাড়া বাকি আরও নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করা। সেই বৈঠকে যোগ দিয়েছিলেন পড়ুয়ারাও। কিন্তু বৈঠক শুরু হতেই তাঁরা লাগাতার স্লোগান শুরু করেন। টানা কয়েক ঘণ্টা এরকম চলার পর শেষে ধরনায় বসার সিদ্ধান্ত নেন উপাচার্য, সহকারী উপাচার্য, রেজিস্ট্রার, ডিন অফ সায়েন্স-সহ আরও বেশ কয়েকজন। বুদ্ধদেবের দাবি, ইসির বৈঠকে পড়ুয়াদের হাতে নিগ্রহের শিকার হয়েছেন তাঁরা।
গত ২৬ সেপ্টেম্বর ইসির বৈঠক ডাকা হয়েছিল। কিন্তু সেদিন বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত সমস্ত বিষয়ে আলোচনা কোনওভাবেই সম্ভব হয়নি। সে কথা জানিয়েছিলেন বুদ্ধদেব। সে দিনের বৈঠক শেষ হওয়ার পর আবার ইসির বৈঠক কবে হবে, তাও নিশ্চিত করে কিছু বলা হয়নি। কিন্তু বুধবার হঠাৎ করেই বৈঠক ডাকা হয়। এতেই বেজায় চটে যান পড়ুয়ারা। তারপর বৈঠক চলাকালীন শুরু হয় তাঁদের স্লোগান, আন্দোলন। যার জেরেই ধরনায় বসেন উপাচার্য। তাঁকে সঙ্গে দিনে সহ উপাচার্য রেজিস্ট্রার ছাড়াও আরও অনেক ইসি সদস্য। অভিযোগ ছাত্ররা তাঁদের উদ্দেশ্যে নানা অশালীন মন্তব্য করেন। ছাত্রছাত্রীদের ধরনায় বসতে দেখা গেলেও ছাত্রদের আচরণের বিরুদ্ধে উপাচার্যের ধরনায় বসা কার্যত নজিরবিহীন।
বুদ্ধদেবের দাবি, ইসির বৈঠক চলাকালীন টানা চার থেকে পাঁচ ঘণ্টা তাঁদের ছাত্র নিগ্রহের শিকার হতে হয়েছে। তারই প্রতিবাদে সারারাত ধরনায় বসেন তাঁরা। বিশ্ববিদ্যালয়ের অরবিন্দ ভবনের গাড়ি বারান্দার নীচে সতরঞ্জি পেতে তাঁরা অবস্থান চালিয়ে যান।
প্রসঙ্গত, গত ২৬ সেপ্টেম্বর প্রায় ১২ ঘণ্টা ধরে চলেছিল ইসির বৈঠক। ভোর রাতে অসম্পূর্ণ অবস্থায় শেষ হয় ওই বৈঠক। বুদ্ধদেব জানিয়েছিলেন, বৈঠকে আলোচ্য বিষয়গুলি নিয়ে কোনও সমাধানসূত্র মেলেনি। সেদিন পরবর্তী ইসি-র বৈঠকের দিনক্ষণ নিয়েও কোনও মন্তব্য করেননি উপাচার্য। সেদিনের বৈঠকে ডেঙ্গি সংক্রমণ রুখতে অনলাইন ক্লাস, বিশ্ববিদ্যালয়ের হস্টেলে ছাত্রমৃত্যুতে জড়িতদের হস্টেলে থাকা নিয়ে আলোচনা হয়েছিল।