হাওড়া : ফিল্মি কায়দায় জেলে বসেই গ্যাংস্টারদের জন্মদিন পালন, সাসপেন্ড সুপার সহ ৩ জন কারা কর্তা। রীতিমতো ফিল্মি কায়দায় জেলে বসেই মোমবাতি জ্বালিয়ে, কেক কেটে জন্মদিন পালন করল কুখ্যাত গ্যাংস্টাররা। আর এই ছবি ভাইরাল হতেই রাজ্যজুড়ে শোরগোল শুরু হয়ে গেল। নড়েচড়ে বসল রাজ্য কারা দফতর। এই ঘটনায় শুরু হয়েছে বিভাগীয় তদন্ত। রাজ্য কারা দফতরের অতিরিক্ত ডিজি পীযূষ পাণ্ডে জানান, “ভিডিও দেখার পর আমরা বিভাগীয় তদন্ত শুরু করে দিয়েছি। সেই তদন্তে দেখা গিয়েছে ঘটনাটি সত্যি। সেই কারণে জেল সুপার, জেলার এবং প্রধান অর্ডারকে সাসপেন্ড করার জন্য আমরা শনিবার বিকেলে রাজ্য সরকারের কাছে সুপারিশ পাঠিয়ে দিয়েছি। খুব শীঘ্রই সেই সুপারিশ মেনে তাদের সাসপেন্ড করবে নবান্ন”।
চাঞ্চল্যকর এই ঘটনাটি ঘটেছে হাওড়ার জেলখানায়। জন্মদিন যারা পালন করেছে, তারা সকলেই হাওড়ার কুখ্যাত গ্যাংস্টার। যার মূল মাথা গুপ্তেশ্বর সিং। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, গত জুন মাসে লিলুয়া বামন গাছির কাছে একটি গোলমাল হচ্ছিল। সেই গোলমাল সামাল দিতে যান লিলুয়া থানার একজন সাব ইন্সপেক্টর। তাকে লক্ষ্য করে গুলি চালায় গুপ্তেশ্বর সিং। এই ঘটনায় তাকে গ্রেফতার করা হয়। সে এখন রয়েছে হাওড়ার জেলে।
আরও পড়ুন : দু’মাস ধরে জলমগ্ন এলাকা, পুরসভাকে কাঠগড়ায় তুলে ধর্ণায় বসলেন হাওড়ার বিধায়ক
আরও একটি খুনের ঘটনায় গ্রেফতার করা হয়েছিল গুপ্তেশ্বর সিংয়ের দুই ছেলে সুভাষ এবং প্রকাশ সিংকে। তারাও রয়েছে হাওড়া জেলে। মূলত তারাই জেলের মধ্যে জন্মদিন উৎসব পালন করে। জন্মদিন ছিল প্রকাশ সিংয়ের। সেই কারণে প্রায় কুড়ি জন বন্দী গ্যাংস্টারকে নিয়ে জন্মদিন পালন করে সিং বাহিনী। ভিডিওতে দেখা গিয়েছে, রীতিমতো মোমবাতি জ্বালিয়ে, কেককেটে এবং হ্যাপি বার্থডে আওয়াজ তুলে হাততালি দিতে দিতে জেলের মধ্যে গ্যাংস্টাররা জন্মদিন পালন করছে। কারা দফতরের এক কর্তা জানান, জন্মদিন পালন করতে গেলে জেল কর্তৃপক্ষের অনুমতি লাগে। সেক্ষেত্রে হয়তো অনুমতি পেলে বড়জোর একটি কেক জেলের মধ্যে ঢুকতে পারে। তবে এই ঘটনার ক্ষেত্রে জেল কর্তৃপক্ষের কোনও অনুমতি নেওয়া হয়নি। তাছাড়া হাওড়া জেলের মধ্যে এত ঘটা করে জন্মদিন উৎসব পালন করা হল অথচ জেল কর্তৃপক্ষ নীরব দর্শকের ভূমিকা পালন করলো কিভাবে? এই প্রশ্নই এখন উঠেছে বিভিন্ন মহলে। সেই কারণে হাওড়া জেলের সুপার সহ ৩ জনকে সাসপেন্ড করা হচ্ছে।