কলকাতা টিভি ওয়েব ডেস্ক: গোটা রাজ্যে বেআইনি অস্ত্র ও বোমা উদ্ধারের নির্দেশ দিলেন মুখ্যমন্ত্রী (Mamata Banerjee) মমতা বন্দ্যাপাধ্যায়। বৃহস্পতিবার রামপুরহাটের বগটুই গ্রামে (Rampurhat violence) দাঁড়িয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, শুধু বীরভূম জেলায় নয়, সব জেলাতেই বেআইনি অস্ত্র (illegal Arms) ও বোমা রয়েছে। কাল থেকে পুলিসকে রাজ্যজুড়ে তল্লাশি চালাতে হবে। সব অস্ত্র ও বোমা উদ্ধার করতে হবে।
বিরোধীরা গত দু-তিন বছর ধরে বলে আসছে, রাজ্যের সব জেলাতে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র মজুত রয়েছে। বিরোধী নেতৃত্বের আরও অভিযোগ, শাসকদলের মদতে ভিনরাজ্য থেকে বেআইনিভাবে অস্ত্র ঢুকছে। শুধু বীরভূম জেলাতেই গত দু-তিন বছরে একাধিক বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কখনও প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে মজুত থাকা বোমা থেকে বিস্ফোরণ হয়েছে, কখনও পরিত্যক্ত বাড়িতে বিস্ফোরণ হয়েছে। আবার কখনও শাসকদলের পার্টি অফিসে কিংবা শাসকদলের কোনও কোনও নেতার বাড়িতে মজুত থাকা বোমা ফেটে বিস্ফোরণ হয়েছে। তাতে হতাহতের ঘটনা পর্যন্তও ঘটেছে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই বিরোধীদের অভিযোগ ছিল শাসকদলের বিরুদ্ধে। যদিও শাসকদলের নেতারা সেসব অভিযোগ উড়িয়ে দেন। গত দু-তিন বছর ধরে বীরভূমের পরিস্থিতি (Birbhum Rampurhat) রীতিমতো অগ্নিগর্ভ হয়ে রয়েছে। কখনও শাসকদলের সঙ্গে বিজেপি, কংগ্রেস বা সিপিএমের সংঘর্ষ, কখনও শাসকদলের গোষ্ঠীকোন্দল ঘিরে সংঘর্ষ, খুনোখুনির বহু ঘটনা ঘটেছে। এই পরিস্থিতির জন্য বিরোধীরা দায়ী করেন তৃণমূলের বীরভূম জেলা সভাপতি অনুব্রত মণ্ডলের (Anubrata Mandal) বিভিন্ন উসকানিমূলক মন্তব্যকে। অতীতে তিনি কখনও পুলিসকে বোমা মারার কথা বলেছেন, কখনও বিরোধীদের বোমা মেরে উড়িয়ে দেওয়ার কথা বলেছেন। সেসব মন্তব্য ঘিরে বিতর্কও কম হয়নি। সাম্প্রতিক পুরভোট কিংবা গত বিধানসভা ভোটের আগে অনুব্রত মণ্ডল নানা বিতর্কিত মন্তব্য করেন।
আরও পড়ুন: Mamata Banerjee Rampurhat: গ্রেফতার করতে হবে তৃণমূল নেতা আনারুল শেখকে, নির্দেশ মমতার
বিরোধীদের দাবি, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রীর (Mamata Banerjee) বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারের নির্দেশে তাদের অভিযোগই মান্যতা পেল। বিজেপি, কংগ্রেস এবং সিপিএমের বীরভূমের নেতাদের বক্তব্য, আমরা বহুদিন ধরে বলে আসছি, বীরভূম জেলা বারুদের স্তূপের উপর দাঁড়িয়ে রয়েছে। শুধু তাই নয়, গোটা রাজ্যেই শাসকদলের মদতে দুষ্কৃতীদের হাতে প্রচুর বেআইনি অস্ত্র উঠে এসেছে। আজ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের অভিযোগই মেনে নিলেন।
মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পরই তৎপর হয় পশ্চিমবঙ্গ পুলিস। রাজ্য পুলিসের ডিজি এবং আইজিপি নির্দেশ দেন, সমস্ত জেলার পুলিস সুপার এবং পুলিস কমিশনারকে ফৌজদারি দণ্ডবিধির ১০৭, ১০৯ এবং ১১০ ধারা অনুযায়ী অপরাধীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে আগামী ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে। পাশাপাশি বেআইনি অস্ত্র উদ্ধারও করতে হবে। আগামী ১০ দিন ধরে এই অভিযান চালাতে হবে। থানাগুলিকে এ ব্যাপারে প্রয়োজনীয় রিপোর্ট প্রতিদিন ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠাতে হবে।