সিঙ্গুর: সালটা ২০০৮। সিঙ্গুরে টাটা প্রকল্পের জমির সামনে দুর্গাপুর এক্সপ্রেসওয়ের পাশে মঞ্চ বেঁধে আন্দোলন শুরু করেছিলেন বাংলার তৎকালীন বিরোধী দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই আন্দোলন ঘিরে রাজ্য রাজনীতিতে তোলপাড় পড়ে যায়। তৃণমূল সুপ্রিমোর আন্দোলনের জেরে সিঙ্গুর ছাড়তে বাধ্য হয় টাটারা।
তার পর কেটে গিয়েছে প্রায় ১৩ বছর। ইচ্ছুক-অনিচ্ছুক কৃষকরা সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে জমি ফিরে পেয়েছেন, ক্ষতিপূরণও পেয়েছেন। মমতার সেই আন্দোলন মঞ্চ সংলগ্ন এলাকা আচমকা সরগরম। শুক্রবার সকাল সকাল পুলিশে ছয়লাপ হয়ে যায় গোটা এলাকা। হাইওয়ের উপরে ভিড় করেন পুলিশের পদস্থ আধিকারিকেরা। কিন্তু কেন?
আরও পড়ুন: রঘুনাথপুর-দেউচায় কর্মসংস্থানের স্বপ্ন দেখানো মমতা বুঝিয়ে দিলেন সিঙ্গুর জমি অধিগ্রহণের মডেল নয়
পুলিশ সূত্রে খবর, ওই একই জায়গায় আন্দোলনের প্রস্তুতি নিয়েছিলেন এসএসসির চাকরিপ্রার্থীরা। অনুমতি চেয়ে পুলিশকে চিঠিও দেয় তাঁরা। সে কারণেই পুলিশের এমন সাজো সাজো রব, ঠিক যেমনটা চোখে পড়ত সিঙ্গুর আন্দোলনের সময়। যদিও পুলিশের অনুমতি না মেলায় চাকরিপ্রার্থীরা আন্দোলন শুরু করেননি।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ২০০৮ সালে সিংহের ভেড়িতে দুর্গাপুর এক্সপ্রেস হাইওয়ের পাশে মঞ্চ বেঁধে অবস্থান শুরু করেছিলেন। বেশ কিছু সংগঠন ও রাজনৈতিক দল তাঁর সমর্থনে মঞ্চ বাঁধে। এসএসসি চাকরীপ্রার্থীরা সেই জায়গা থেকেই আন্দোলনের ডাক দেন। যদিও পুলিশ অনুমতি দেয়নি।
আরও পড়ুন: সিঙ্গুর অতীত, টাটারা বিনিয়োগ করলে স্বাগত জানাবে সরকার
বৃহস্পতিবার সকালে সিঙ্গুর, চণ্ডীতলা, হরিপাল, দাদপুর সহ বেশ কয়েকটি থানার ওসি, ধনেখালি-মগরার সিআই পুলিশ কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে ওই এলাকায় হাজির হয়ে যান। এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ শিক্ষা ও শারীর শিক্ষা সংগঠন অবশ্য পুলিশের অনুমতি না মেলায় আন্দোলন বাতিল করে।
সংগঠনের সভাপতি রাজু দাস জানান, তাঁরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করতে সিঙ্গুর থানার কাছে অনুমতি চেয়েছিলেন। পুলিশ অনুমতি না দেওয়ায় তাঁদের এ দিনের কর্মসূচি বাতিল হয়েছে। প্যানেলভুক্ত ১৮০০ জনের চাকরির দাবিতে সংগঠনের তরফে ভবিষ্যতে সিঙ্গুর থেকে নবান্ন অবধি মিছিল করা হবে জানান তিনি।
আরও পড়ুন: ‘জয় শ্রীরাম বলে হামলা, আর পাতালপ্রবেশ বললে মামলা?’ জেরায় ত্রিপুরা পুলিশকে পাল্টা কুণালের
২০১৯ সাল থেকে কর্ম শিক্ষা এবং শারীর শিক্ষার শিক্ষক পদে নিয়োগের জন্য আন্দোলন করে চলেছেন এসএসসির প্যানেলভুক্তরা। এর আগে কলকাতার মেয়ো রোডে অনশন করেছেন তাঁরা। রাজু দাস বলেন, প্রতিশ্রুতি মত এখনও চাকরি পাননি তাঁরা। তাই সিঙ্গুর থেকে আন্দোলন প্রস্তুতি নিয়েছিলেন।