চন্দ্রকোনা: শনিবার সকালে নিজের বাড়িতেই এক তৃণমূল নেতার গলাকাটা রক্তাক্ত দেহ মিলল। পরিবার ও স্থানীয়দের দাবি, খুন করা হয়েছে তৃণমূলের ওই প্রাক্তন বুথ সভাপতিকে। তাঁদের দাবি, তদন্ত করে অবিলম্বে খুনিদের গ্রেফতার করতে হবে। পুলিশ দেহ উদ্ধার করতে এসে পুলিশ স্থানীয়রা বিক্ষোভের মুখে পড়ে। দেহ নিয়ে যেতে বাধা দেওয়া হয়। মৃতের পরিবারের সদস্যরা এবং তৃণমূল কর্মীরা বলেন, “পুলিশ কুকুর এনে পুলিশ সঠিক তদন্ত করে আগে দোষীদের গ্রেফতার করুক, তারপরে মৃতদেহ ছাড়া হবে।”
ঘটনাটি পশ্চিম মেদিনীপুর জেলার চন্দ্রকোনা ১ নম্বর ব্লকের পুড়শুড়ি গ্রামের। এদিন সকাল ১০টা নাগাদ বটকৃষ্ণের রক্তাক্ত দেহ উদ্ধার হয় নিজের বাড়ি থেকে। স্থানীয় সূত্রের খবর, পুরোনো মাটির অদূরেই বটকৃষ্ণ একটি পাকা বাড়ি বানিয়েছিলেন। সেই পাকা বাড়িতেই তিনি একা থাকতেন। শুক্রবার রাতে যথারীতি ওই বাড়িতেই যান বটকৃষ্ণ। এদিন সকালে ডাকাডাকি করলেও তাঁর কোনও সাড়া মেলেনি। পরে দরজা ভেঙে ভিতরে দেখা যায়, বটকৃষ্ণের গলাকাটা দেহ পড়ে রয়েছে। ঘরে মেঝে রক্তে ভেসে যাচ্ছে। খবর দেওয়া হয় পুলিশে। বিশাল পুলিশবাহিনী আসে। পুলিশকে ঘিরে বিক্ষোভ দেখান পরিবারের লোকজন ও স্থানীয়রা। পুলিশ কুকুর না আনা পর্যন্ত মৃতদেহ ছাড়া হবে না তাঁরা বলে হুঁশিয়ারি দেন। পদস্থ পুলিশকর্তাদের হস্তক্ষেপে দেহ ময়নাতদন্তে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়।
আরও পড়ুন: TMC Inner Clash | পঞ্চায়েতের আগে কোণঠাসা তৃণমূল, জায়গায় জায়গায় গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব
তৃণমূলের জেলা কো- “অর্ডিনেটর অজিত মাইতির বলেন, বটকৃষ্ণ পাল আমাদের স্থানীয় প্রাক্তন বুথ সভাপতি। সম্প্রতি ওর সঙ্গে সিপিএমের নেতাকর্মীদের একটা গন্ডগোল হয়েছিল। তবে আমরা এখনই কারও বিরুদ্ধে কোনও অভিযোগ করছি না। কারও নামও বলছি না। পুলিশের উপর আমাদের ভরসা রয়েছে। আমরা চাই পুলিশ দ্রুত তদন্ত করে দোষীদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি দিক।”
প্রসঙ্গত, শুক্রবার সকালবেলায় নদিয়ার বড় চুপুরিয়া বাজারে গুলি করে খুন করা হয় এক তৃণমূল কর্মীকে। ওই তৃণমূল কর্মীর নাম আহমেদ আলি বিশ্বাস। এই ঘটনায় তৃণমূলের জেলা সভাপতি বলেন, আহমদ তৃণমূল কর্মী ছিলেন। তবে কী কারণে খুন, তা এখনও পরিষ্কার নয়। ঘটনার তদন্তে হাঁসখালি থানার পুলিশ। স্থানীয় সূত্রে খবর, কিছুদিন আগেই আহমেদ জেল থেকে ছাড়া পায়। এলাকায় দুষ্কৃতী হিসেবেই পরিচিত ছিল সে। যদিও তৃণমূল নিজেদের কর্মী হিসেবে মানতে নারাজ। তাদের মতে, আহমেদ তৃণমূলকে সমর্থন করত।
পাশাপাশি শুক্রবার ভোড়েই মাথাভাঙ্গা মহকুমার শীতলকুচি ব্লকের হাসপাতাল পাড়ার পঞ্চায়েত সদস্যার বাড়িতে ধারালো অস্ত্র নিয়ে অভিযান চালায় দুষ্কৃতিরা। ঘটনায় পঞ্চায়েত সদস্যা সহ তাঁর স্বামী ও এক মেয়ের মৃত্যু হয়েছে। অপর একজন মেয়ে বর্তমান কোচবিহার এমজেএন মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।