খড়্গপুর ও কলকাতা: খড়্গপুর পুরসভার (Kharagpur Municipality) নতুন চেয়ারপার্সন হলেন কল্যাণী ঘোষ। তিনি পুরসভার ৭ নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর। শেষ পর্যন্ত অভিজ্ঞ কল্যাণীকেই চেয়ারপার্সন হিসেবে বেছে নিল তৃণমূল কংগ্রেস। অন্যদিকে, পশ্চিম বর্ধমানের (West Burdwan) জেলা সভাপতিও পরিবর্তন করছে তৃণমূল কংগ্রেস (TMC)। পাণ্ডবেশ্বরের বিধায়ক নরেন্দ্রনাথ চক্রবর্তী নতুন জেলা সভাপতি হচ্ছে। পঞ্চায়েত ভোটের আগে এই পরিবর্তনকে অনেকেই তাৎপর্যপূর্ণ বলে মনে করছেন। এদিকে, আগামিকাল উত্তর ২৪ পরগনার হালিশহর পুরসভার (Halisahar Municipality) চেয়ারম্যান রাজু সাহানিকে পদ থেকে সরানো হচ্ছে। ভাইস চেয়ারম্যান শুভঙ্কর ঘোষকে চেয়ারম্যান করা হতে পারে বলে দলীয় সূত্রের খবর।
মঙ্গলবার দুপুরে মেদিনীপুর শহরে অবস্থিত দলের জেলা কার্যালয় থেকে তাঁর নাম ঘোষণা করলেন তৃণমূল জেলা সভাপতি সুজয় হাজরা। তিনি বলেন, শীর্ষ নেতৃত্বের তরফে তাঁর নামেই সিলমোহর দেওয়া হয়েছে। উপ পুরপ্রধান বা ভাইস চেয়ারম্যান থাকছেন যথারীতি তৈমুর আলি খান। এদিনই দায়িত্ব নেন কল্যাণী। এর ফলে, প্রায় চার মাস পর স্থায়ী চেয়ারপার্সন পেলেন খড়্গপুরবাসী। গত বছর, ২১ ডিসেম্বর দলীয় নির্দেশে প্রদীপ সরকার ইস্তফা দিয়েছিলেন। তারপর প্রায় চার মাস ধরে দায়িত্ব সামলাচ্ছিলেন ভাইস চেয়ারম্যান তৈমুর আলি খান।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court | মালদহে বন্যার টাকা বিলিতে দুর্নীতি, সিএজি অনুসন্ধানের নির্দেশ আদালতের
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, গত ডিসেম্বর মাসে তৎকালীন চেয়ারম্যান প্রদীপ সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন দলের ২১ জন (২৫ জনের মধ্যে) কাউন্সিলর। ২০২২-এর পুর নির্বাচনে ৩৫ আসন বিশিষ্ট খড়্গপুর পুরসভায় তৃণমূল কংগ্রেস ২০টি আসনে জিতলেও, পরে বিভিন্ন দল (সিপিআই, কংগ্রেস ও নির্দল) থেকে আরও ৫ জন যোগ দিয়েছিলেন। সব মিলিয়ে ২৫ জনের মধ্যে ২১ জনই বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিলেন প্রদীপের বিরুদ্ধে। নেতৃত্বে ছিলেন প্রবীর ঘোষ, কল্যাণী ঘোষ, অপূর্ব ঘোষ, রীতা পান্ডে (রবিশঙ্কর পান্ডের স্ত্রী), নমিতা চৌধুরী (দেবাশিস চৌধুরীর স্ত্রী) প্রমুখ। বাধ্য হয়েই দলের সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় প্রদীপ সরকারকে ইস্তফা দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছিলেন। তাঁকে দলের সাংগঠনিক কাজে কাজে লাগানো হবে বলেও আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল।
শেষ পর্যন্ত বহু টালবাহানার পর ২১ ডিসেম্বর ইস্তফা দিয়েছিলেন প্রদীপ। তার পর থেকেই চেয়ারম্যানহীন ছিল খড়্গপুর পুরসভা। এ নিয়ে আপামর খড়্গপুরবাসী থেকে একাধিক কাউন্সিলর ক্ষোভে ফুঁসছিলেন! একের পর এক উন্নয়নমূলক কাজ থমকে ছিল বলে অভিযোগ। শেষ পর্যন্ত কল্যাণী ঘোষকে চেয়ারপার্সন করে পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে মুখরক্ষা করল দল।