বসিরহাট: বাবার স্মৃতিতে গ্রামে মুক্তমঞ্চের জন্য জমিদান (Land Grant) ছেলের। গ্রামে বসানো হল আর্সেনিক-মুক্ত পানীয় জলের কল। একটা সময় কলেরা মহামারি, আর্সেনিক ঘিরে ধরেছিল গ্রামকে। শিক্ষার আলোয় পিছিয়ে পড়া গ্রামে আজ প্রায় ১০০ শতাংশ শিক্ষার (Education) হার। ভাবছেন কোন জায়গার কথা বলা হচ্ছে! এটা উত্তর ২৪ পরগনার বসিরহাটে (Basirhat) মহকুমার জগন্নাথপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের শ্রীরামপুর (Serampore) গ্রাম।
এই গ্রামে জন্ম থেকেই বসবাস সরকার পরিবারের। গ্রামের শিক্ষার আলো, কলেরা মুক্ত করতে বদ্ধপরিকর হয়েছিল বছর ৯৫-এর নবীনবরণ সরকার। পেশায় তিনি ছিলেন রেশন ডিলার। তাঁর একটু একটু করে জমানো অর্থ দিয়ে গ্রামবাসীদের মঙ্গল কামনায় দিবারাত্র কাজ করে গিয়েছিলেন নবীনবাবু। কিন্তু ২০১৮ সালে মৃত্যু হয় নবীনবাবুর। স্ত্রী দোলা সরকার এখনো জীবিত। তাঁদের তিন সন্তান। বলরাম সরকার, প্রদীপ সরকার, পরিমল সরকার বর্তমানে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী।
আরও পড়ুন: Calcutta High Court | আদালতের নির্দেশ অমান্য করায় পুলিশকে হুঁশিয়ারি বিচারপতির
এই শ্রীরামপুর গ্রামকে এক দিকে ঘিরে রেখেছে ভদ্রকালী খাল। অন্যদিকে ইছামতি নদী। এই গ্রামে বসবাসকারী মানুষের সংখ্যা প্রায় পাঁচ হাজার।পাশাপাশি এই গ্রামের সঙ্গে আঁকাবাঁকা পথ দিয়ে জুড়ে রয়েছে গোবিন্দপুর, পালপাড়া, তারাগুনিয়া সহ একাধিক গ্রাম।
স্বর্গীয় নবীনবাবুর বড় ছেলে বলরাম সরকার জানান, তিনি এখন সমাজে প্রতিষ্ঠিত ব্যবসায়ী। গ্রামের মানুষকে বাবা ভালবাসতেন। আমরা চাই এই গ্রামটা দৃষ্ঠান্ত হিসেবে গড়ে উঠুক। তাই বাবার স্মৃতিকে সামনে রেখে গ্রামকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার জন্য দীর্ঘ সংকল্প নিয়েছি। পাশাপাশি পানীয় জলের জন্য একসময় কলেরা মারামারি আর্সেনিকের জন্য গ্রামে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটেছে। সেই কথা মাথায় রেখে তিনি আরও বলেন, মুক্ত মঞ্চ করার জন্য দুই বিঘা জমি দান করব। ইতিমধ্যে মঞ্চ তৈরির কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। গ্রামবাসীদের জন্য বসানো হল আর্সেনিক মুক্ত পানীয় জলের কলও। পাশাপাশি তিনি সকলকে এগিয়ে আসার জন্য আহ্ববানও জানান। তিনি বলেন, সবাই যদি একটু এগিয়ে আসে তাহলে, শিক্ষার আলোয় আলকিত হয়ে উঠবে গোটা গ্রাম।