সামসেরগঞ্জ: সামশেরগঞ্জের (Samshergunje) ভাঙন (Erosion) কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে বরাদ্দের পরিমাণ আরও ৫০ কোটি টাকা বাড়িয়ে দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। শুক্রবার শামশেরগঞ্জ শ্মশান ঘাটের মাঠে এক জনসভার আয়োজন করা হয়েছিল। ওই জনসভায় অংশগ্রহনের আগে মুখ্যমন্ত্রী শামশেরগঞ্জের গঙ্গা ভাঙন কবলিত কিছু এলাকা হেঁটে পরিদর্শন করেন। এরপরই সভায় এসে গঙ্গা (Ganga) ভাঙন রোধে বছরে ১০০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ফরাক্কা (Farakka) ব্যারেজ ড্রেজিং করছে না। ফলে পলি জমে যাচ্ছে। ৭০০ কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র। অথচ জিএসটি তুলছে কেন্দ্র। কেন্দ্রের বঞ্চনার কারণে গঙ্গা ভাঙন রোধে ইতিমধ্যেই এক হাজার কোটি টাকা ব্যয় করেছে রাজ্য সরকার। এরপরেও বছরে ৫০ কোটি টাকার বরাদ্দ ঘোষণা করা হয়েছিল মালদহ থেকে। কিন্তু শামশেরগঞ্জের পরিস্থিতি দেখে আরও ৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ বাড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী। ফলে আগামী ১০ বছর ধরে প্রতিবছর ১০০ কোটি টাকা ভাঙ্গন রোধে ব্যয় করবে রাজ্য সরকার এবং সেচ দফতর (Irrigation Department) বলে ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এদিকে মুখ্যমন্ত্রীর ঘোষণায় খুশি হয়েছেন শামশেরগঞ্জবাসী। এদিন ৮৬ জন গৃহ হারাকে পাট্টা তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী। পাশাপাশি ভাঙনের ৫-৬ কিলোমিটারের মধ্যে যাতে কেউ গৃহ নির্মাণ না করেন সেদিকে নজর রাখতে বলা হয় প্রশাসনকে। যাঁরা দুর্গম অঞ্চলে রয়েছেন তাদের সরে যাওয়ার অনুরোধ করেন মুখ্যমন্ত্রী। এলাকার মানুষকে ভাঙন কবলিত এলাকা থেকে দূরে বাড়ি করার অনুরোধও জানান তিনি। অন্যদিকে কেন্দ্র সরকারকে তুলোধনা করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, রাজ্যের প্রাপ্য ৭000 কোটি টাকা দেয়নি কেন্দ্র। আগামী ২০২৪ সাল পর্যন্ত রাজ্যকে টাকা দেবে না কেন্দ্র। জেলার মানুষকে বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে নিয়োগ করার নির্দেশ দেওয়া হয় জেলা প্রশাসনকে। মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা ১০০ দিনের কাজ করেছেন অথচ টাকা পাননি তাঁদের রাজ্যের বিভিন্ন প্রকল্পের কাজে লাগানো হোক। অন্যদিকে কেন্দ্র সরকার ওবিসি স্কলারশিপ বন্ধ করে দিয়েছে বলে অভিযোগ তুলে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ওই প্রকল্পে রাজ্য সরকার টাকা দিচ্ছে, রাজ্যের ৩০ লক্ষ পড়ুয়াকে স্কলারশিপ দিতে হয়। পাঁচ বছরে ১০ লক্ষ ছেলেমেয়েদের নিজের পায়ে দাঁড়ানোর কর্মসূচি নিয়েছে রাজ্য সরকার। এদিনের সভায় রাজ্যের মুখ্যসচিব হরেকৃষ্ণ দ্বিবেদী, পুর ও নগর উন্নয়নমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক, মুর্শিদাবাদ জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র, জেলা পুলিশ সুপার, জঙ্গীপুর লোকসভার তৃণমূল সাংসদ এবং সামশেরগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সহ প্রশাসনিক আধিকারিকেরা উপস্থিত ছিলেন।
আরও পড়ুন: Vikram Vedha | Ott Release | Hrithik Roshan | Saif Ali Khan | অবশেষে ওটিটিতে ‘বিক্রম বেদা’
শুক্রবার বহরমপুর কংগ্রেস কার্যালয়ে অধীর চৌধুরী (Adhir Choudhury) বলেন, তিনি পিএসি কমিটির চেয়ারম্যান হওয়ার সুবাদে কেন্দ্রের জলসম্পদ বিভাগ এবং রাজ্য সেচ দফতরের সঙ্গে অনেক বৈঠক করেছেন। গঙ্গা ভাঙন নিয়ে সেই বৈঠকে রাজ্যর সেচ দফতরকে বলা হয়েছিল কেন্দ্রে প্রকল্প পাঠাতে। অথচ সেই প্রকল্প এখনো পাঠানো হয়নি। অধীর চৌধুরী বলেন, রাজ্য সরকার বলছে সামশেরগঞ্জের মানুষকে ভাঙ্গন কবলিত এলাকার পাঁচ কিলোমিটারের মধ্য থেকে সরে যেতে, কিন্তু তাঁরা কোথায় যাবেন সেই ব্যবস্থা কে করবে? মুর্শিদাবাদ জেলাকে ভাঙ্গনের কবল থেকে কে বাঁচাবে, বলে প্রশ্ন তোলেন অধীর চৌধুরী।