জঙ্গলমহল: কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে আন্দোলন ক্রমশই তীব্র হচ্ছে। এই দাবিকে সামনে রেখে ১ এপ্রিল থেকে শুরু হয়েছে জঙ্গলমহল জুড়ে ঘাঘরঘেরা কর্মসূচি। সামনেই পঞ্চায়েত ভোট তাই পঞ্চায়েত ভোটকে পাখির চোখ করে সব দলেরই নজর এখন কুড়মি সমাজের ভোটের দিকে। এরইমাঝে জাগো কুড়মি বাঁধো জোট, আগে এসটি পরে ভোট। পাড়ায় পাড়ায় দিচ্ছে ডাক আমার দেওয়াল আমারই থাক, এই স্লোগানকে সামনে রেখে পাড়ায় পাড়ায় ঝাঁঝালো হচ্ছে কুড়মি আন্দোলন। ঝাড়গ্রাম জেলায় কুড়মি সমাজের গুরুত্ব রয়েছে। ঝাড়গ্রাম জেলার চারটি বিধানসভা এলাকায় কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষ রয়েছেন ২৬ থেকে ২৯ শতাংশ। অপরদিকে আদিবাসী সম্প্রদায় বলে যে গোষ্ঠীগুলি রয়েছে তারা রয়েছে ২৯ শতাংশ। তার মধ্যে সাঁওতাল, মুণ্ডা, ভূমিজ সহ বিভিন্ন সম্প্রদায় রয়েছে। শুধু সাঁওতাল সম্প্রদায় ধরলে তাদের শতাংশের হার হবে ১৮ থেকে ২২ শতাংশ। যার ফলে কুড়মি ভোটকে সব পক্ষই নিজেদের অনুকূলে আনতে চায়।
কুড়মি সম্প্রদায়কে এসটি তালিকাভুক্ত করার দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজন আন্দোলন করছে। একসময় তাঁরা এসটি ছিল বলে আন্দোলনে বারবার দাবি করেছেন। কুড়মি সমাজের মানুষ কাদের দিকে রয়েছে তা নিয়ে চলছে বিশ্লেষণ। তাই কুড়মি সমাজের পক্ষ থেকে স্লোগান উঠছে, আগে এসটি পরে ভোট, কুড়মি সমাজ বাঁধো জোট। তবে তৃণমূল কংগ্রেসের পিংলার বিধায়ক অজিত মাইতির এক মন্তব্যকে কেন্দ্র করে জঙ্গলমহল জুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে। যদিও সোমবার অজিতের মন্তব্যের পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নবান্ন থেকে কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষের কাছে ক্ষমা চেয়ে নিয়েছেন। তিনি বলেন, আমি কুড়মি সম্প্রদায়ের মানুষজনকে ভালোবাসি। তাদের পাশে আছি এবং আগামী দিনেও থাকব। কিন্তু কুড়মি ভোট কোন দিকে যায় সেই দিকে নজর রয়েছে সকলের। তাই কুড়মি ভোট নিয়ে শাসকদলের নেতাদের মাথা ব্যথার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। যার কারণে পঞ্চায়েত নির্বাচনে কুড়মি ভোট খুব গুরুত্বপূর্ণ হয়ে উঠছে।
আরও পড়ুন: Transport Department | ১৫ বছরের বেশি পুরনো সরকারি বাস বাতিলের সিদ্ধান্ত পরিবহণ দফতরের
অপরদিকে কুড়মি নেতারা জানিয়েছেন, এই ভোটে কোনও রাজনৈতিক দলকে সমর্থন নয়। কোনও কুড়মি গ্রামে, রাজনৈতিক দলের প্রচার নয়, দেয়াল লিখন নয়। আগে এসটি তালিকাভুক্ত করা হোক তারপর ভোট। তার সঙ্গে সঙ্গে এও দেখা যাচ্ছে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তারা দল ছেড়ে এই কুড়মি আন্দোলনে সামিল হচ্ছেন। তো বিভিন্ন রাজনৈতিক দলগুলোর কাছে চিন্তার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে জঙ্গলমহলের এই কুড়মি আন্দোলন।