Placeholder canvas

Placeholder canvas
HomeবিনোদনAshish Vidyarthi | Rupali Barua | Married | নতুন জীবনের শুভেচ্ছা...

Ashish Vidyarthi | Rupali Barua | Married | নতুন জীবনের শুভেচ্ছা রইলো, আশীষদা 

Follow Us :

লেখা: তন্ময় ঘোষ 

এমনিতেই বাঙালির বিপ্লৱ এখন শুরু এবং শেষ হয় ডিজিটাল প্লাটফর্মে। ফেসবুক আর ইন্সটাতে শুধুমাত্র একটা বিষয় প্রয়োজন। তারপর তো আর কথাই নেই। প্রতিটা বাঙালিই তখন তার্কিক। নিজস্ব মতামতই তখন নিউটনের সূত্রের মতো ধ্রুব সত্য। সেই মাতামাতি দেখলে মনে হয় জগতে বুঝি আর কোনো বিষয় নাই। আর ইদানিং বিষয়বস্তুর কোনো অভাবই নেই। গত তিন চারদিনে বাঙালি বুদ্ধিজীবী ইন্টেলেকচুয়ালরা বেশ আমিষ সব বিষয় পেয়ে গেছেন আলোচনা এবং মত প্রকাশের। প্রথম গাঙ্গুলী কেন ত্রিপুরার ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডর হলো? এর পেছনে কি বিজেপির হাত আছে? এরাজ্যের বঞ্চনা আছে গাঙ্গুলীর প্রতি? ত্রিপুরাতে একটু এগিয়ে গাঙ্গুলী কি বিজেপিকে বার্তা দিলেন?সেকি আলাপ বিলাপ প্রলাপ আলোচনা! বেচারা সৌরভ এবং ত্রিপুরার পর্যটন মন্ত্রীও বোধহয় এতো ভেবে উঠতে পারেন নি এতদিনে। 
এর পর পরেই এসে গেছে মাধ্যমিক উচ্চমাধ্যমিকের কৃতিরা শিক্ষা ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিয়ে কি মন্তব্য করলেন। তারা বলেছে যে শিক্ষকরা একটা প্রজন্ম তৈরী করে। যোগ্য প্রার্থীরা রাস্তায় বসে আছে এটা দেখে তাদের খারাপ লাগছে। বাস, আর যায় কোথায় বাঙালি? শুরু হয়ে গেলো ফেসবুক বিপ্লব। তরুণ প্রজন্ম নাকি জেগে উঠছে। (ঘুমিয়ে ছিল এটা কে জানালো?) প্রতিবাদ সংগঠিত হচ্ছে। ঢেউ উঠছে, কারা জাগছে (হা, স্বপ্ন দেখতে তো শুধু মোবাইল ডাটা লাগে)


এর পরেই এলো গতকালকের একটা খবর। আশীষ বিদ্যার্থী ৬০ বছর বয়সে তার বান্ধবীকে বিয়ে করেছেন। কলকাতার এক ক্লাবে ফ্যাশন এন্টারপ্রেনিউর রুপালি বড়ুয়ার সাথে মালাবদল করে এবং আইনি কাগজে সাক্ষর করে দ্বিতীয়বার বিয়ে করলেন এই অভিনেতা। বাস, আগের বিষয়গুলো ছিল যেন রাধাবল্লভী বা ফিশ ফ্রাই । এটা একেবারে মটন বিরিয়ানি। মহিলা আছে, বুড়ো বয়সের আদিখ্যেতা আছে. আগের পক্ষের একটা ছেলে আছে। বেশ মাখোমাখো রসালো বিষয়। অতএব বাঙালি পুরো ঝাঁপিয়ে পড়েছে। নেটদুনিয়ায় এই আমফান থামায় কে! ছিঃ ছিঃ, একী ভীমরতি। তাও আবার ৬০ বছর বয়সে! (যেন ৫৮ হলেও হতো). লোকটা খলনায়কের ভূমিকায় অভিনয় করতো বটে কিন্তু ব্যাক্তিগত চরিত্রেও যে খলনায়কের মতো সেটা তো বোঝা যায়নি!
তা বটে। ৬০ বছর বয়সে এসে যদি মনে হয় যে মনের মিল হচ্ছে না তখন সেই সম্পর্ক থেকে খোলা মনে বেরিয়ে এলেই সে খলনায়ক? ৬০ বছর বয়সে একজন মানুষ যদি মনে করেন যে বাকি জীবনটা আর একজনের সঙ্গে পাশাপাশি থেকে চলা যায়, তবে আইনি মতে বিয়ে করলেও সে খলনায়ক? যেহেতু তার প্রথম পক্ষের একটি পুত্র রয়েছে এবং তার সামাজিক মর্যাদার কথা ভেবে আশীষ বিদ্যার্থীর উচিত ছিল লুকিয়ে লুকিয়ে কলকাতায় এসে সঙ্গিনীর সাথে সময় কাটানো, মিডিয়ার সামনে সম্পর্কের কথা অস্বীকার করা এবং ব্যাক্তিগত জীবন নিয়ে যতরকম হিপোক্রিসি করা যায় সেটা করে দেখানো? এবং সেটা নিয়ে টলিপাড়ায় গুজগুজ, ফিসফাস লেগেই থাকতো। সেটা করে নি বলেই লোকটা ব্যাক্তিগত জীবনেও খলনায়ক? যে লোকটার এতদিনের পরিচয় ছিল ভারতবর্ষের প্রায় সব ভাষাতে ছবি করেছেন, অত্যন্ত দক্ষ একজন অভিনেতা, তার থেকেও বেশি দক্ষ একজন ফোটোগ্রাফার, একজন আন্তর্জাতিক মানের মোটিভেশনাল স্পিকার, একজন প্রভূত জনপ্রিয় ফুড ব্লগার।  আর জামাইষষ্ঠীর পরদিন থেকে তার ছবি পোস্টিয়ে দেওয়া হচ্ছে শোভন বৈশাখীর সঙ্গে! 
আসলে এটাই নেটদুনিয়ার আসল চেহারা। নিজের মতামত এবং নিজের বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিতে গিয়ে একটা ৬০ বছরের অভিনেতার বিয়ে আমাদের মধ্যমেধার মুখটা বের করে আনে, মুখোশের আড়াল থেকে। এই আশীষ বিদ্যার্থীরা আছেন বলেই এখনো আমরা এই মুখ আর মুখোশের পার্থক্যটা হটাৎ হটাৎ দেখতে পারি। আসলে সাহসের অভাবে এখন আমরা অনেকেই ভদ্রলোক। কিন্তু জীবন তো একটাই। জীবনের সঙ্গে ছলনা করে কি লাভ? মন যেটা চায় সেটা করেই তো আশীষ এর মতো ৬০ বছরের তরুণ এতো খুশিতে থাকেন। বাকিরাও একটু সহজ সরল এবং এমন নগ্ন জীবন কাটান না, সে ২৭এই হোক বা ৬৭ তেও।

RELATED ARTICLES

Most Popular