জাতিসংঘের মানবিক বিষয় সমন্বয় সংস্থার গতকালের তথ্য অনুযায়ী একের পর এক রশ ক্ষেপণাস্ত্র ও বিমান হামলায় ইউক্রেনে ২৪০ জন বেসামরিক ব্যক্তি হতাহত হয়েছেন। এর মধ্যে মৃত্যু হয়েছে ৬৪ জনের। যা নিয়ে যথেষ্ট দুশ্চিন্তায় রয়েছেন এ বছর জানুয়ারি মাসে ভারতে আসা ইউক্রেনের সাবরিনা। ইউক্রেনে যে এমনটা হতে পারে তা জানুয়ারি মাসে ঘুণাক্ষরেও ভাবতে পারেননি সাবরিনা। রাশিয়ার হুঁশিয়ারি বিষয় আগে থেকেই জানতেন সাবরিনা। কিন্তু বুঝতে পারেননি এভাবে ইউক্রেনে রুশ হামলা হবে। তিনি ভারতে এসেছিলেন দেশটি ঘুরে দেখবেন বলে। উঠেছিলেন মুম্বই শহরে। ভারত ভ্রমণের উচ্ছ্বাস অনেকটাই ম্লান করে দিয়েছে রুশ যুদ্ধবাজরা। তাঁর দেশ ইউক্রেন এখন যুদ্ধবিধ্বস্ত। তাঁর চোখে অনিশ্চিত ভবিষ্যৎ। দেশে রেখে আসা পরিবারের দুশ্চিন্তা মডেল সাবরিনার রাতের ঘুম কেড়েছে। দুচোখ ভরা শুধু শূন্যতা। তিনি জানেন না তার পরিবারের কি হবে বা আদৌ তারা কেমন আছে! ভবিষ্যতে কি দেখা হবে তাদের সাথে আর! এসব প্রশ্ন তোলপাড় করে দিচ্ছে সাবরিনার হৃদয়কে। ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভে থেকে বেশ কিছুটা দূরে কৃষ্ণসাগরের উপকূলবর্তী এলাকা খেরসনে সাবরিনার বেড়ে ওঠা। এমন যুদ্ধের সাক্ষী তিনি কখনো হননি। এই হাহাকার দেখেননি। ইংরেজি দৈনিকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে সাবরিনা জানিয়েছেন,’সারাদিন খবরের চোখ রেখে চলেছি। আর শুধু ভাবছি এই কি আমার দেশ! আতঙ্কে ভুগছি পরিবারের লোকজনের সঙ্গে আবার দেখা হবে তো!’ যুদ্ধ শুরুর একেবারে গোড়ার দিকে সাবরিনার বাড়িতে ইন্টারনেট সংযোগ ছিল, তখন পরিবারের লোকজনের সঙ্গে তাঁর কথা হয়েছিল। কাঁদতে কাঁদতে সাবরিনা সাক্ষাৎকারে জানিয়েছেন,’আমার পরিবারকে এত ভয় পেতে আমি আগে কখনো দেখিনি। খেরসন নজায়গাটা অত্যন্ত শান্ত জায়গা। খুব নিরিবিলি ছোট্ট একটি গ্রাম। অথচ সেখানে বোমার শব্দে ঘুম ভাঙছে ওদের। বারুদ আর দমবন্ধ করা ধোঁয়া। এদিকে খাবার শেষ হয়ে আসছে’। এই অবস্থায় দেশে ফিরে যাওয়ার পরিস্থিতি নেই। ভারতের যদিও তিনি নিরাপদে আছেন তার গোটা পরিবার বিনিদ্র রজনী কাটাচ্ছেন নিজ বাসভূমিতে। তাঁদের জন্য প্রার্থনা করা ছাড়া সাবরিনার করারই বা কি আছে!
