সাম্প্রতিক কালে এমন ভয়াবহ ভূমিকম্প (Earthquake) দেখেনি বিশ্ববাসী। সোমবারের প্রাকৃতিক বিপর্যয়ে তুরস্ক (Turkey) এবং সিরিয়া (Syria) মিলিয়ে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর মধ্যে ৩৪১৯টি মৃত্যু তুরস্কে। অন্তত পাঁচ হাজার বাড়ি সম্পূর্ণ ধূলিসাৎ হয়ে গিয়েছে। সোমবার রিখটার স্কেলে ৭.৮ তীব্রতার কম্পনের পর আরও দু’বার কেঁপে ওঠে তুরস্ক এবং সিরিয়ার সীমান্ত অঞ্চল। আজ, মঙ্গলবারেও দু’বার কম্পন অনুভূত হয়েছে। এই দুটির তীব্রতা ছিল পাঁচের উপরে। এখ প্রশ্ন হল, তুরস্কে এত ভয়াবহ ভূমিকম্প হওয়ার কারণ কী? এর বৈজ্ঞানিক ব্যাখ্যাই বা কী?
যে পৃথিবীতে আমরা বাস করি, উপরিতল থেকে কেন্দ্রস্থল পর্যন্ত তিনটি অংশ আছে। সবথেকে উপরের অংশের নাম ক্রাস্ট (Crust), মাঝখানে আছে ম্যান্টল (Mantle) এবং কেন্দ্রে কোর (Core)। পৃথিবীর জমি অনেকগুলো টুকরো অংশের সমাহার যাদের প্লেট (Plate) বলা হয়। এই প্লেটগুলি যেখানে পরস্পরের সঙ্গে মিলিত হয় তাকে বলা হয় ফল্ট লাইন (Fault Line)। ফল্ট লাইন বরাবর এই প্লেটগুলো বেরিয়ে আসতে চায় কিন্তু অন্য প্লেটের সঙ্গে ঘর্ষণের ফলে ওই জায়গাতেই স্থির থাকে।
আরও পড়ুন: Emergency Landing: গুরুতর অসুস্থ যাত্রী, বিমানের জরুরি অবতরণেও বাঁচল না প্রাণ
কিন্তু কোনও কোনও সময় দুই প্লেটের তীব্র ঘর্ষণের ফলে একটি আর একটির উপরে উঠে যায়। সেই সময়ই ঘটে ভূমিকম্প। তুরস্কের মাটির নীচে ঘটেছে এমনই ঘটনা। একটি প্লেট পূর্বদিকে সরতে চেয়েছিল এবং অন্যটি পশ্চিম। দুই প্লেটের ধাক্কাধাক্কির ফলে এই ভয়াবহ ভূমিকম্পের সৃষ্টি।
এখন প্রশ্ন হল তুরস্কে কেন বার বার ভূমিকম্প হয়। এর কারণ, ওই দেশের মাটির নীচেই রয়েছে একাধিক ফল্ট লাইন। সোমবারের ভূমিকম্পের উৎসের অঞ্চলের নাম ইস্ট অ্যানাতোলিয়ান ফল্ট জোন (East Anatolian Fault Zone)। এই ফল্ট জোনের জেরে এর আগেও বিপর্যয় হয়েছিল দেশটাতে। ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে ৬.৭ তীব্রতার ভূমিকম্প হয়েছিল তুরস্কের পূর্বাংশে। রাজধানী ইস্তানবুলের কাছে ১৯৯৯ সালে হয়েছিল ৭.৪ তীব্রতার কম্পন, যার ফলে মৃত্যু হয়েছিল প্রায় ১৮ হাজার মানুষের। সোমবারের ৭.৮ তীব্রতার কম্পনের উৎসস্থল (Epicentre) ছিল গাজিয়ানটেপ (Gaziantep), যা অত্যন্ত জনবহুল এক জায়গা। ফলে হতাহত এবং ধ্বংসের তীব্রতা এত বেশি।
শেয়ার করুন